একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে বিআরবি গ্রুপ
অব ইন্ডাস্ট্রিজ-এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ মজিবর রহমান দেশের ব্যবসা ও শিল্পাঙ্গনে
এক পরিচিত নাম। তিনি কোন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী বা শিল্পপতির সন্তান নন বা বিশ্ববিদ্যালয়ের
উচ্চ ডিগ্রিধারীও নন; কিন্তু কঠোর অধ্যাবসায়, সততা ও নিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ব্যবসা জগতে
তিনি উন্নতির উচ্চশিখরে আরোহণ করেছেন। বিআরবি কেবল ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ, এমআরএস, কিয়াম
মেটালসহ তাঁর হাতের ছোয়ায় সকল প্রতিষ্ঠানই সাফল্য লাভ করেছে। বিআরবি হাসপাতাল তাঁর
অনেক প্রতিষ্ঠানের সাথে নতুন সংযোজন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন সৎ, উদার ও দানশীল
ব্যক্তি। মসজিদ, মাদ্রাসা, ইয়াতিমখানা ছাড়াও তিনি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও সৃজনশীল
যে কোন কাজে পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিল্প-কারখানায় বিপুল পরিমাণ লোকের
কর্মসংস্থান হয়েছে। এ ছাড়া তিনি নিজেও ইয়াতিমখানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন।
তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের গর্বিত পিতা এবং তাঁর সন্তানরাও সাফল্যের সাথে ব্যবসা পরিচালনা
করছেন। ব্যবসা জগতে তাঁরাও প্রতিষ্ঠিত এবং সবাই সরকার ঘোষিত CIP
(Commercial Important Person)|
রাজধানীতে প্রথম শ্রেণির একটি হাসপাতাল
প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি তিনি কুষ্টিয়ায় একটি মেডিকেল কলেজ গড়ে তুলছেন এবং অবকাঠামো উন্নয়নের
কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁর এই কাজে আমরা সাধুবাদ জানানোর পাশাপাশি আমাদের প্রত্যাশাও
প্রকাশ করতে চাই। পৃথিবীর অনেক দেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পুরোটাই ফ্রি। এ ছাড়া অধিকাংশ
দেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বাণিজ্য নয়,সেবা হিসেবে পরিচালিত হয়। ভারত-পাকিস্তানে টাটা,
বিড়লা, আদমজী, ইস্পাহানীরা ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি জনগণের সেবার লক্ষ্যে বিভিন্ন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল পরিচালনা করেছে। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, আদমজী হাই
স্কুল এবং ইস্পাহানী চক্ষু হাসপাতাল এখনো আমাদের চোখে পড়ে। কিন্তু বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম।
বাংলাদেশের শিল্পপতিরা শিল্প-কারখানার পরিবর্তে ঝুঁকে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল
প্রতিষ্ঠার দিকে এবং পুরোটাই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নিয়ে এত বড় বাণিজ্য
বিশ্বে কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই। কানাডায় শিক্ষা ও চিকিৎসা পুরোটাই ফ্রি। ইউরোপ-আমেরিকায়
শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যয়বহুল হলেও সেখানে নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
চলে শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের অর্থে এবং বিশ্বের কৃতি শিক্ষার্থীরা তাদের স্কলারশিপের
অর্থে সেখানে গবেষণা করে। আমার ছেলেও আমেরিকায় স্কলারশিপ নিয়ে (হয়তো কোন শিল্পপতির
দান) সেখানে গবেষণা করছে। বর্তমান পরিবর্তিত ধ্যান-ধারণায় তারা বিশ্বাস করে যে, তাদের
অর্থনীতি টেকসই হওয়া ও ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসা নির্ভর করে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর ব্যয়ের
মাধ্যমে। ফলে তারা তাদের আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অর্থ দাতব্য কাজে ব্যয় করেন। আমাদের
দেশেও অতীতে জমিদার ও ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল গড়ে তুলেছিল।
ব্রোজলাল কলেজ, ব্রোজমোহন কলেজ, আনন্দ মোহন কলেজ, দেবেন্দ্র কলেজ, সারদা সুন্দরী কলেজ,
হাজী মুহম্মদ মুহসিন কলেজ, কুমুদিনী হাসপাতাল ইত্যাদি এখনো সাক্ষী হয়ে রয়েছে এবং তা
সবই ব্যক্তি বা সমষ্টির দানে গড়ে উঠেছিল। এ ছাড়া দেশে যত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
সবই তো এলাকার ধনাঢ্য ও সাধারণ ব্যক্তিদের দানেই হয়েছে। ওয়াকফ সম্পত্তির মাধ্যমে অতীতে
মসজিদ, মাদ্রাসাসহ বহু জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়েছে। সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ
অছিয়তের বিধান কুরআন ও হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে, যা ব্যয় হবে উত্তরাধিকার নন এমন কাউকে
দান এবং জনকল্যাণমূলক কাজে (ছদকায়ে জারিয়া হিসেবে ব্যক্তির মৃত্যুর পর ছাওয়াব অব্যাহত
থাকবে)। দুনিয়াকেন্দ্রিক চিন্তা-চেতনার কারণে মুসলমানরা আল্লাহর পথে ব্যয়ে এখন আর তেমন
উৎসাহ পায় না।
নামী-দামী হাসপাতাল ও চিকিৎসাব্যবস্থা
নিয়ে আমাদের মোটেই সুধারণা নেই। হাসপাতালগুলো অসাধু প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। ডাক্তারদের
কমিশনবাণিজ্য ও হাসপাতালগুলোর অসাধু কর্মকান্ড এই পেশাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ডাক্তারদের
প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা ভালোবাসার পরিবর্তে নানা বাজে উপাধীতে তাদেরকে ভূষিত করা হচ্ছে।
আমার নিজের অভিজ্ঞতাও সুখকর নয়। অল্প কয়েকদিন পূর্বে আমার বেয়াই অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাঁকে
স্কয়ার হাসপাতালে (তিনি ৫/৬ বছর সেখানে সপ্তাহে তিন দিন ডায়লিস করেন) ভর্তি করা হলে
তাঁকে ইমার্জেন্সিতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পরে তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে এবং কর্তব্যরত
ডাক্তার তাঁকে ICU-তে রেফার করেন।
কিন্তু তিনি ICU-তে যেতে রাজি
হন না। পরবর্তীতে তাঁর পরিচিত একজন ডাক্তার আসার পরে ICU-এর পরিবর্তে তাঁকে কেবিনে দেয়া হয়। তাঁর কথা ডায়লিসের রোগীর
যখন-তখন এমন অবস্থা হতেই পারে (একে হাইপো হয়ে যাওয়া বলে), তাই বলে কি ICU-তে দিতে হবে? তাঁকে রিলিজ করে দেয়ার জন্য তিনি বলেন। অবশ্য
পরের দিন দুপুরে তিনি বাসায় ফিরে যান। আমাদের সামনেই এ সব ঘটনা ঘটে। ডবল সিটের কেবিনে
(ভাড়া ৪,৫০০/-) এক রাত থাকাসহ ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসা গ্রহণে ব্যয় হয় ৪৩,০০০/- টাকা।
ICU-তে নেয়া হলে হয়তো লক্ষ টাকা বিল হত এবং
কয় দিন রাখা হত কে জানে? ডাক্তারদের এ আচরণ আমাদের কাছে স্রেফ বাণিজ্য বৈ আর কিছু মনে
হয়নি। কথায় কথায় ICU/CCU-তে নেয়ার প্রবণতা
ও বাহুল্য টেস্ট বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি দেশের জনগণের মনে আস্থার সংকট সৃষ্টি
করছে এবং যার কারণে ভারতে যাওয়ার প্রবণতা দিন দিনই বাড়ছে। আমার স্ত্রীর হাঁটু ব্যথার
জন্য একদিন পপুলারে গেলে সেখানে ডাক্তার দেখানোর সাথে সাথে টেস্ট করার জন্য একটি ফর্দ
ধরিয়ে দেন এবং তাতে দশ হাজার টাকা ব্যয় হয়। রিপোর্ট দেখানোর পরে আর ঔষধও খাওয়া হয়নি
বা সেখানে যাওয়াও হয়নি। ঢাকায় আসার পরে চিকিৎসা বাবদ আমার যাতায়াত হয়েছে বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল), ইবনে সিনা, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল,
সিআরপি, গ্যালাক্সি, পপুলার, স্কয়ার, বিআরবি। পিজি আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে এবং ইবনে
সিনা, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, সিআরপি, গ্যালাক্সি ও বিআরবি হাসপাতালে প্রতারণা নেই
বলে আমার বিশ্বাস। ইবনে সিনা, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও গ্যালাক্সিতে ডাক্তারদেরকে
কমিশন না দিয়ে রোগীকে ২৫% ছাড় দেয়া হয় এবং এ সব প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারদের বাহুল্য টেস্টদানের
প্রবণতাও নেই। আমি একটু বলে রাখি নামী-দামী হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যে ব্যয় হয়,
সেই টেস্ট পিজিতে ৫০%- থেকে ৭৫% কমে হয়। আমি এমনও দেখেছি পপুলারে যেটা ৪০০/-টাকা, সেটা
পিজিতে মাত্র ১০০/-টাকা ব্যয়ে হয়। পিজিতে এখন অনেক শৃঙ্খলা এবং সেবার মান বেশ উন্নত।
এর পেছনে প্রফেসর প্রাণ গোপাল দত্তের বিরাট অবদান রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে
পার্থক্য আমরা স্বীকার করি এবং তাতে আমাদের আপত্তিও নেই (যাদের সামর্থ আছে তারা সেখান
থেকে আরাম-আয়াশে উন্নত সেবা নেবেন)। কিন্তু আমাদের আপত্তি ডাক্তারদের কমিশন বাণিজ্যে,
যা ডাক্তারদেরকে অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় টেস্ট প্রদানে প্রলুব্ধ করে।
প্রফেসর ডাঃ মোহাম্মদ আলীর অধীন আমার শ্যালকের
স্ত্রীর একটি অপারেশনের কারণে বিআরবি হাসপাতালে আমি কয়েক দিন গিয়েছি এবং নিজের ঔত্সুক্যের
কারণেই একটু ঘুরে ঘুরে দেখেছি। হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা, রোগীর সাথে ব্যবহার সব দিক
দিয়ে ভালো মনে হয়েছে। বিশেষ করে প্রফেসর ডাঃ মোহাম্মদ আলীর সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা
ও সদাচরণে আমার শ্যালকবৌ ও তার সাথে যারা ছিল সবাই সন্তোষ প্রকাশ করে। আমি এটাও জানতে
পেরেছি যে, সেখানে ৩০০ সিট থাকলেও এখন ৭০/৮০-এর মত পূর্ণ থাকে এবং বিআরবি-এর চেয়ারম্যান
মহোদয় রোগী বাড়ানোর জন্য কোন অনৈতিক পন্থা অবলম্বনের পক্ষপাতি নন। ভালো চিকিৎসা ও উত্তম
সেবাদানের মাধ্যমে যে সুনাম সৃষ্টি হবে তার মাধ্যমে বিআরবি হাসপাতাল একদিন দেশের সেরা
প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে অন্যতম হয়ে দাঁড়াবে ইনশা-আল্লাহ।
স্কুলে পড়েছিলাম-‘হাশরের দিন বিচারে বসিয়া সুধাবে জগৎস্বামী;
তুমি মোরে করো নাই সেবা, যবে রুগ্ন যে ছিলাম আমি।’ এটা শুধু কবির কবিতা নয়, এটা হাদিসের বাণী। কত আবেগময় কথা।
আল্লাহ বলবেন আমি অসুস্থ ছিলাম, আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম আর মানুষ বলবে, হে পরোয়ারদেগার!
এ কেমন করে হয়? আল্লাহ বলবেন, আমার বান্দাহ অসুস্থ ছিল, ক্ষুধার্ত ছিল তারে সেবা-যত্ন
ও খাওয়ালে আজ আমাকে পেতে। চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, ডাক্তার, নার্স সবাই যদি ইবাদত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে, তবে জান্নাতে
যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কোন বাধা থাকার কথা নয়। অতি নামাযী-কালামীকেও দেখা যায়, ব্যবহারিক
জীবনে (মানুষের সাথে লেন-দেন ও আচার-আচরণে) ইসলামের বিধি-বিধান পালনে চরম শৈথিল্য প্রদর্শন
করতে। এর মূলে রয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তা-চেতনা।
এত কথা বলার পর বিআরবির চেয়ারম্যান
আলহাজ্ব মোঃ মজিবর রহমানের কাছে আমার আবেদন শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় তিনি এক নতুন দিগন্ত
উম্মোচন করবেন এবং এটা কোন ব্যবসা নয়, স্রেফ সেবা ও এ থেকে তিনি বা তাঁর পরিবার কোন
মুনাফা না নিয়ে আয় থেকে দায় শোধের ভিত্তিতে পরিচালিত করবেন। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে
একটি ট্রাস্টের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতাল পরিচালিত হতে পারে। পর্যায়ক্রমে
তাঁর বিনিয়োগটা উঠিয়েও নিতে পারেন, কিন্তু মুনাফা অর্জন লক্ষ্য না করে আখিরাতে তাঁর
ও তাঁর পরিবারের নাজাতের অসিলা হিসেবে এটাকে No Loss no
Profit হিসেবে পরিচালনার
ঘোষণা দিলে মানুষের সহানুভূতিও দ্রুত এই হাসপাতালের প্রতি চলে আসবে। আমার বিশ্বাস উনার
পরিবারের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য যে সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেগুলোই যথেষ্ট।
আর দেয়ার মালিক তো আল্লাহ। তাঁর এই নেক নিয়তের কারণে আল্লাহ তাঁর রিজিকও প্রশস্ত করে
দেবেন ইনশা-আল্লাহ। আমি মনে করি শুধু বিআরবি হাসপাতাল নয় সকল শিল্পোদ্যাক্তাদেরই উচিৎ
তাঁদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা। কারণ তাঁদের
সম্পদে সাধারণ মানুষের হক রয়েছে (আল্লাহর কথা)। আর সরকারও তাদের ট্যাক্সসুবিধা প্রদান
করে থাকবেন। আখেরাতেবিশ্বাসী ডাক্তার-নার্সদেরকে বলবো আপনাদের সেবাদান শুধু রোগীর সেবা
নয়, আল্লাহকে পাওয়ার সর্বোত্তম মাধ্যম। কোন ধরনের ধোকা-প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত আয়
মসজিদ-মাদ্রাসায় দান করায় কোন লাভ নেই। বরং ধোকা-প্রতারণার আশ্রয় না নিয়ে রোগীর সাথে
উত্তম আচরণ ও সেবাদানের মাধ্যমে আল্লাহকে পাওয়া খুব সহজ। আমাদের জীবনটা খুবই সীমিত।
আজ যে ডাক্তার চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে তুলছেন তিনিও অনেকের মত আগামীতে
থাকবেন না। সেদিনের পাথেয় আজই সংগ্রহ করে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ। এখানে চিকিৎসা পেশায়
নিয়োজিত সংশ্লিষ্টদের কথা বলা হলেও সবার জন্যই সত্য। সর্ষেকণা ঈমান রয়েছে এমন কারো
পক্ষে ঘুষের আদান-প্রদান প্রশ্নই ওঠেনা। ‘ঘুষ দানকারী (নিতান্ত ঠেকায় পড়লে
স্বতন্ত্র) ও গ্রহণকারী উভয়ই দোযখী’-রসূল
(সা)-এর এ উক্তি অবিশ্বাস করার কোন সুযোগ নেই। কাজে-কর্মে গাফেলতি ও খেয়ানত কবিরা গুনাহ।
রসূল (সা)-এর বাণী স্মরণযোগ্য-‘আমরা কাউকে দায়িত্ব প্রদান করলে
সে তার নিজের কাজ যত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে সম্পন্ন করে সরকারি দায়িত্ব সেভাবে পালন
না করলে তাকে উল্টাভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’
তিনি আরো বলেন- ‘আমরা কাউকে দায়িত্ব প্রদান করলে সে যদি এক টুকরা সূতা বা
তার চেয়েও ক্ষুদ্র জিনিস খেয়ানত করে তাহলে খেয়ানতের বোঝা মাথায় করে সে উত্থিত হবে।’
অফিস-আদালতে তছরুপ ও কাজে-কর্মে গাফেলতি কোন ঈমানদারের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য
আমাদের! আমাদের ধার্মিকতা স্রেফ আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ (নামায-রোযা-হজ্ব-যাকাত-কোরবানী,
পোশাক-পরিচ্ছদ ও মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণের মাঝে), আমাদের ব্যবহারিক জীবনে ধর্মের কোন
প্রতিফলন নেই। আল্লাহতায়ালা আমাদের মাঝে সঠিক উপলব্ধি দান করুন ও জীবনের সকল পর্যায়ে
তাঁর অনুগত হয়ে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন। ০৪/১১/২০১৭
Comments
Post a Comment