Skip to main content

মিথ্যা সাক্ষ্যদান শিরকের সমতূল্য বড়ো গুনাহ- বলেছেন, রসুলুল্লাহ সা.।

আমাদের আইন-আদালতে বিচারানুষ্ঠান একান্ত সাক্ষীনির্ভর। সাক্ষীদের সাক্ষের ভিত্তিতে বিচারকরা রায় প্রদান করেন। ভুল রায় প্রদান করে কারো প্রতি জুলুম করা হলে তার বড়ো দায়ভার বর্তায় সাক্ষীর ওপর। মিথ্যা সাক্ষ্যপ্রদান, মিথ্যা সাক্ষ্যদানে প্ররোচিত করা বা বাধ্য করা সবই গুনাহের শামিল। মানুষের প্রতি জুলুম করা আল্লাহর কাছে বড়ো অপছন্দের। জালেমের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। মিথ্যা সাক্ষদানকে রসুল সা. শিরকের সাথে তুলনা করে বলেছেন, মিথ্যা সাক্ষ্যদান শিরকের মতই বড়ো গুনাহ। মুশরিকের অবস্থান যেমন জাহান্নাম, তেমনি মিথ্যা সাক্ষদানকারীর অবস্থানও হবে জাহান্নামে। মিথ্যা বলা বা মিথ্যা সাক্ষ্যদান কেবল নিরেট নাস্তিকের পক্ষেই সম্ভব। 

জনগণের নিরাপত্তা বিধানের জন্য প্রত্যেকটা দেশে পুলিশ বা বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে। তাদের কাজ দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন। যারা এই দায়িত্ব পালন করেন তারা অত্যন্ত মর্যাদাবান এবং তা সারা বিশ্বে। আমাদের পাঠ্য 'বিলেতে সাড়ে সাতশো দিন' বইয়ে লেখক আব্দুল হাই বৃটিশ পুলিশের ভূমিকা ও মর্যাদা চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। একজন মহিলা তার গর্ব প্রকাশ করেছেন এভাবে, 'আমার ভাই পুলিশে চাকরি করে।' অল্প দিন আগের ঘটনা ঢাবির একজন প্রফেসর জার্মানির এক হোটেলে মারা গেলে সেখানকার পুলিশের রিপোর্টে বলা হয়, এটা স্বাভাবিক মৃত্যু। আমাদের কতিপয় বুদ্ধিজীবী উল্টাপাল্টা বললে জার্মান দূতাবাস থেকে বলা হয়, জার্মান পুলিশ মিথ্যা বলে না। আমরা কি আমাদের পুলিশ সম্পর্কে এমন সাক্ষ্য দিতে পারবো?

রসুলুল্লাহ সা. আইন-শৃঙ্খলায় নিয়োজিত ব্যক্তি সম্পর্কে কতো চমৎকার সুসংবাদ শুনিয়েছেন, 'দুটি চোখকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না। এক. আল্লাহর ভয়ে যে চোখ থেকে অশ্রু ঝরে, দুই. জনগণের নিরাপত্তা বিধানে যে চোখ বিনিদ্র রজনী যাপন করে।' জান্নাতের সুসংবাদ পেতে হলে অবশ্যই তাকে ঈমান ও নেক আমলে ভূষিত হতে হবে। নিরপরাধ মানুষকে ধরে এনে জাতির সামনে যদি সাক্ষ্য দেওয়া হয় নাশকতার উদ্দেশ্যে একত্রিত হয়েছে (পর্দানশীন মহিলাদের পর্যন্ত বলা হয়) এবং সেটি যদি সত্য না হয় তাহলে পরিণতি কী হবে? সন্দেহবশত কাউকে ধরা ও হয়রানি করা সুস্পষ্ট জুলুম। রাষ্ট্রীয় সংস্থার দায়িত্ব নাগরিকদের জুলুম থেকে রক্ষা করা। উল্টো তারাই যদি জুলুম করে তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? আমরা এমন পুলিশ চাই যাদেরকে নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি। সরকারের তাবেদার নয়, আমরা চাই জনতার পুলিশ। তারা হবে ন্যায় ও ইনসাফের প্রতীক। 

আল্লাহপাক আমাদের সরকার, সরকারি সংস্থা ও নাগরিকদের মিথ্যাসাক্ষ্যদানের ভয়াবহতা উপলব্ধির তৌফিক দান করুন। আমিন।

Comments