প্রায়ই জু'মার নামায (মাঝে-মধ্যে ওয়াক্তিয়া নামাযেও) শেষে ঘোষণা শুনি অমুক অমুক দুআ চেয়েছেন। এটা নিত্যদিনের ঘটনা। প্রশ্ন হচ্ছে এটা কতটুকু সুন্নাহ সমর্থিত।
সূরা বাকারায় আল্লাহপাক দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেছেন, বান্দাহ তার সকল প্রয়োজন তার রবের কাছেই পেশ করবে। আল্লাহর বাণী, 'হে নবী! আমার বান্দারা আমার সম্পর্কে জানতে চায়? বলে দাও, আমি তাদের অতি নিকটে। যে ডাকে আমার তার ডাক শুনি এবং জবাব দেই। কাজেই আমার আহবানে সাড়া দেয়া ও আমার ওপর ঈমান আনা তাদের একান্ত কর্তব্য।'
এখানে বোঝা যায়, বান্দাহ আল্লাহ থেকে দূরে নয় এবং সকলের ডাক তিনি শুনেন। তাই সবার কর্তব্য তার প্রয়োজনটা সরাসরি আল্লাহর কাছে পেশ করা। আর আল্লাহর কাছে বান্দার চাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। সকল সময়ই সে তার প্রয়োজন তাঁর কাছে পেশ করতে পারে। তারপরও হাদিস থেকে জানা যায়, কিছু কিছু সময় ও মুহূর্ত আছে যে সময়ে দুআ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
পিতা-মাতার জন্য সন্তানের দুআ করার ভাষাও আল্লাহ শিখিয়ে দিয়েছেন। তারপরও নিজে দুআ না করে আর একজনের কাছে ধর্ণা দেয়ার কোনো অর্থ আছে কি?
নড়াইলে থাকতে সেখানকার কেন্দ্রীয় মসজিদের সম্মানিত খতিব আলহাজ্জ মুফতি আশরাফ আলী (আমার দেখা বিজ্ঞ আলেমদের একজন) দুআ চাওয়ার প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের জগতবিখ্যাত আলেম ও ফকিহ মুফতি আশরাফ আলী থানভী (রহ.)-এর উক্তি উদ্ধৃত করে বলেন 'এখানে দুআ বেচাকেনা হয় না'।
ফরজ নামায শেষে আমাদের মতো সামষ্টিক মোনাজাত যেহেতু রসুল (সা), সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীদের সময়ে ছিল না তাই আমাদের মতো এভাবে দুআ চাওয়া ও দুআর অনুষ্ঠানের কোনো প্রচলন ছিল না, তা স্পষ্ট বলা যায়। সাধারণত রসুল (সা) তাঁর বক্তৃতার মাঝে আল্লাহর কাছে দুআ করেছেন এবং সাহাবায়ে কেরাম আমিন আমিন করেছেন। নামাযের মধ্যে দুআ তো রয়েছেই। দুআ মাছুরা আবু বকর (রা.)-এর চাওয়ার প্রেক্ষিতে রসুল (সা) শেখানো দুআ। হাত তুলে সামষ্টিক মোনাজাত পাওয়া যায় বৃষ্টি প্রার্থনা বা যুদ্ধের ময়দানে। এটা কোনো সাধারণ নিয়ম নয়।
পরস্পর দুআ চাওয়া যেতে পারে এবং সাথে সাথে তার জবাব দেয়া যায় এভাবে 'আল্লাহ তোমাকে কবুল করুন বা সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো শব্দের মাধ্যমে'।
আল্লাহপাক আমাদেরকে সরাসরি তাঁর কাছে দুআয় অভ্যস্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Comments
Post a Comment