হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন:
তিনটি মসজিদ ব্যতিত অন্য কোন মসজিদের উদ্দেশ্যে সফর করা বৈধ নয়। মসজিদুল হারাম,
আমার এই মসজিদ ও মসজিদুল আকসা।-বুখারি, মুসলিম, আবু দাউদ।
এই সব মসজিদে নামায আদায়ে অনেক ফজিলতের কথা বলা হয়েছে। যেমন- ‘মসজিদে
নববীতে নামায অন্য মসজিদের চেয়ে এক হাজার এবং মসজিদে হারামে নামায অন্য মসজিদের
চেয়ে এক লক্ষ গুণ বেশি উত্তম।’-আহমদ (জাবের রা. থেকে
বর্ণিত)
আনাস ইবনে মালিক (রা) থেকে বর্ণিত-রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : যে
ব্যক্তি আমার মসজিদে চল্লিশ ওয়াক্ত নামায পড়বে এবং তা থেকে একটিও বাদ পড়বে না তার
জন্য দোযখ থেকে মুক্তি, আযাব থেকে মুক্তি ও মুনাফেকী থেকে মুক্তি লিখে দেয়া
হবে।-আহমদ, তাবারানি
আমাদের সমাজে একশ্রেণির মানুষ ছওয়াবের আশায় বিভিন্ন মাযারে
(কবরে) ঘোরাঘুরি করে। যেমন- আজমীর শরীফ, সিলেটের শাহজালাল (রহ), রাজশাহীতে শাহ
মখদুম (রহ), চট্টগ্রামে বায়েজিদ বোস্তামী (রহ)-এর মাজারে যায়, শরীয়তে যার কোন
ভিত্তি নেই, এতে গোনাহ বৈ কোন নেকী নেই।
প্রশ্ন উঠতে পারে রসূলুল্লাহ (সা) ও তাঁর দুই সাথীর কবর
জিয়ারতের বিষয়ে। হাজী সাহেবরা যান মসজিদে নববীতে নামায আদায় উদ্দেশ্যে যার ফজিলত
ইতোপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত,
রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : আমার ঘর ও আমার মিম্বরের মাঝখানে রয়েছে বেহেশতের একটি
রওযা (বাগান)। ফলে সেখানে নামায আদায়ে বাড়তি ছওয়াব এবং হাজী সাহেবদের মাঝে একটি
আকাঙ্খা ও প্রচেষ্টা থাকা খুবই স্বাভাবিক।
কবরকে পাকাপোক্ত করা, চুমু দেয়া ও কবরকে উৎসবস্থলে পরিণত করতে
হাদিসে স্পষ্টভাবে নিষেধ করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ
(সা) বলেছেন : তোমাদের ঘরগুলোকে কবরে এবং আমার কবরকে উৎসবস্থলে পরিণত করো না। আমার
ওপর দরুদ পাঠাও। কেননা তোমরা যেখানেই থাকো, তোমাদের প্রেরিত দরুদ আমার নিকট
পৌঁছে।-আবু দাউদ।
হাজী সাহেবরা সেখানে পৌঁছে রসূলুল্লাহ (সা) ও তাঁর দুই সাথীকে
সালাম দেবেন, এটিই নিয়ম। কিন্তু হাজী সাহেবদের মাধ্যমে আমাদের দরুদ ও সালাম
পৌঁছানোর মধ্যে কোন যৌক্তিকতা দেখিনা। বরং একটি উৎসব উৎসব ভাব লাগে। ‘আমার
ওপর দরুদ পাঠাও। কেননা তোমরা যেখানেই থাকো, তোমাদের প্রেরিত দরুদ আমার নিকট পৌঁছে।’
এই হাদিস অনুসারে আমরা সর্বদা আমাদের প্রিয়তম নবী (সা)-এর ওপর সরাসরি সালাম ও দরুদ
পাঠাবো। দরুদ সম্পর্কীয় অনেক ফজিলতপূর্ণ কথা রয়েছে। মুহাম্মদ (সা)-এর নাম
উচ্চারণের সাথে সাথে দরুদ না পড়াটা কার্পণ্যের লক্ষণ ও তার ধ্বংসের কারণ বলা
হয়েছে। আল্লাহপাক আমাদেরকে বেশি বেশি করে তাঁর নবীর (সা) প্রতি দরুদ পড়ার তাওফিক
দান করুন। আমিন।
Comments
Post a Comment