Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2022

জোড়া খুন : দায়ী কে?

গতকাল পত্রিকায় প্রকাশিত এক পুলিশ কর্মকর্তা (বিসিএস অফিসার) ও পুলিশ কনস্টেবলের আত্মহত্যা অনেককে ভাবিয়ে দিয়েছে। পুলিশ কনস্টেবলের বয়স মাত্র ২৩ বছর। এখনো বিয়ে করেনি। দুই ভাই-বোনের সে ছোট। বাবা-মার আদর, সরকারি চাকরি (আর্থিক নিরাপত্তা), নিজস্ব বাড়ি সবকিছুই ছিল। অভাব ছিল কিসের যা তাকে আত্মহত্যার মতো সর্বনাশা পন্থা অবলম্বনে প্ররোচিত করেছে? আর একজন বিসিএস কর্মকর্তা। জগৎ সম্পর্কে এমন একজন পরিপক্ব যিনি মানুষকে পথ দেখাবেন, হতাশা থেকে সরিয়ে আনবেন সেই তিনিই পথ হারিয়ে ফেললেন। তদন্ত হবে, হয়তো বেরিয়ে আসবে। কিন্তু ব্যক্তি ও পরিবারের যে সর্বনাশ হলো তা কখনোই পূরণযোগ্য নয়। আমি হেডলাইন করেছি জোড়া খুন। হয়তো বলবেন, তারা তো আত্মহত্যা করেছে। হ্যাঁ, আত্মহত্যাকারীও খুনি। সে শুধু খুনি নয় জঘন্য খুনি। আসলে জীবন সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিই এর জন্য দায়ী। মানুষ আল্লাহ তায়ালার সেরা সৃষ্টি, তাঁরই প্রতিনিধি। মর্যাদায় আল্লাহর পরেই তার অবস্থান। সেই মানুষকে হত্যা করা (সে নিজে করুক বা আর কেউ করুক) কি স্বাভাবিক? জীবন সম্পর্কে আমাদের অনেকের ধারণা, দুনিয়ার জীবনের পরে আর কিছু নেই। তাই সে যে কোনো উপায়ে দুনিয়াকে লুটেপুটে খেতে চায়।...

জাহান্নামে যাওয়ার কুরআনে বর্ণিত কয়েকটি কারণ

আখেরাতে জান্নাতি ও জাহান্নামিদের মধ্যে পরস্পর কথাবার্তা হবে। জান্নাতের বাসিন্দারা জাহান্নামিদের জিজ্ঞাসা করবে- কোন্ জিনিস তোমাদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করলো? জাহান্নামিরা বলবে-  ১. আমরা নামাজ পড়তাম না ২. অভাবীদের খাবার দিতাম না ৩. সত্যের বিরুদ্ধে রটনাকারীদের সাথে মিলে আমরাও রটনা করতাম ৪ প্রতিফল দিবসকে মিথ্যা মনে করতাম  - সুরা মুদ্দাসিসর ৪২-৪৭ কারো মাঝে এ-সব দোষ-ত্রুটি থাকলে তার উচিৎ দ্রুত তওবা করে নিজেকে সংশোধন করে নেয়া। আল্লাহ গফুরুর রহিম।

ঈদগাহে আলোচনা

আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ। মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইব্রাহিম আ. ও তাঁর পরিবারের চরম আত্মত্যাগের স্মারক হিসেবে আমরা প্রতিবছর পশু কুরবানি করে থাকি। এটা প্রতিকী। এই কুরবানি দানের মাধ্যমে আমরা ঘোষণা করি, নিশ্চয়ই আমার নামাজ, যাবতীয় ইবাদত অনুষ্ঠান এবং জীবন ও মরণ আল্লাহর জন্য। তাঁর কোনো শরিক নেই। হজরত ইব্রাহিম আ. স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে প্রাণাধিক পুত্রের গলায় ছুরি চালিয়েছিলেন। মুসলিম তো সেই যে আল্লাহ ও তাঁর রসুল সা.-এর কোনো আদেশ শুনলে বলে, 'আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম'। ইব্রাহিম আ. আল্লাহর নির্দেশ পালন করতে গিয়ে একের পর এক পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছেন এবং আল্লাহর হুকুম পালনে কখনই আপত্তি করেননি। অথচ আমরা প্রতিনিয়তই আল্লাহর হুকুম অমান্য করছি। নামাজের মতো মৌলিক ইবাদত পালনেও আমরা গাফেল। নামাজ মুসলিম হওয়ার জন্য দলিল ও প্রমাণ। যতো প্রতিকূল অবস্থা হোক না কেন নামাজে যেন আমরা অবহেলা না করি। ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর বড় আবেগভরা কণ্ঠে তরুণদের বলেছেন, তোমার সিনেমা হলে থাকলেও ওয়াক্ত হলে নামাজ পড়ে নিও, খেলার মাঠে থাকলেও নামাজ পড়ে নিও। কোনো অবস্...

জুমা আলোচনা

(কুচিয়ামোড়া বাজার জামে মসজিদে ০৮.০৭.২০২২) হজ মানুষকে সদ্যজাত শিশুর মতো নিষ্পাপ করে দেয় বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম  আল্লাহপাকের দরবারে লাখো শুকরিয়া যে, তিনি দয়া করে আমাদেরকে তাঁর ঘরে উপস্থিত হওয়ার তৌফিক দান করেছেন। আলহামদু লিল্লাহ। দরুদ ও সালাম প্রিয়তম নবি মুহাম্মদ সা.-এর ওপর। আজ আমাদের এখানে ৮ জিলহজ। মক্কায় হাজিরা আরাফায় অবস্থান করছেন। আরাফায় অবস্থানই মূলত হজ। এইদিনে রসুলুল্লাহ সা. বড় কাতরভাবে আল্লাহর কাছে তাঁর ও তাঁর উম্মতের গুনাহ মাফের জন্য কান্নাকাটি করেছেন। দু’হাত তুলে আল্লাহর কাছে চেয়েছেন। তাঁর সকল প্রয়োজন তিনি তাঁর মহান মনিবের কাছে পেশ করেছেন এবং আল্লাহপাকও জিবরাইল আ. মারফৎ তাঁর বান্দাকে জানিয়ে দিয়েছেন, এই ময়দানে যারা হাজির হয়েছে এবং ভবিষ্যতে হাজির হবে সকলের গুনাহ মাফ করা হবে। অর্থাৎ তারা সদ্যজাত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যাবে। তবে যাদের উপার্জন অবৈধ এবং যারা জালেম তারা ব্যতীত। হজে মাবরুরের প্রধান শর্তই হলো হালাল উপার্জন এবং হজ হতে হবে কেবল আল্লাহরই উদ্দেশ্যে এবং তাঁর রসুল সা.-এর পন্থানুসারে। তবে কেউ যদি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ (তওবা) হয়ে আসে যে ভবিষ্যতে আর হারাম পথে পা বাড়াবে না বা কারো প্র...

আজ আল্লাহর এক বান্দি চলে গেল তার রবের কাছে

আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী আহসান উদ্দিনের (চেরু) স্ত্রী ভানু মাস দুই অসুস্থ থেকে আজ ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেউন)।   এরা সব হতদরিদ্র মানুষ। না ছিল লেখাপড়া আর না ছিল অর্থবৃত্ত। তদুপরি নানা রোগব্যাধিতে অধিকাংশ সময় ভুগতো। চেরু খুব দরিদ্র মানুষ। কিন্তু তাকে মসজিদে পেতাম। এই দরিদ্র লোকগুলো ছিল আমার আব্বার খুব স্নেহভাজন। অনেক সময় দেখতাম, আব্বা কোথাও যাওয়ার সময় চেরুকে সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছেন। এরা আল্লাহর অনুগত। বিদ্রোহী তো নয়ই আবার জালেমও নন। আল্লাহপাক তাঁর এসব দরিদ্র বান্দাদের ক্ষমা করার জন্য নানা উপায় তালাশ করবেন। রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ধনী ব্যক্তির তুলনায় দরিদ্র ব্যক্তি পাঁচশত বছর পূর্বে জান্নাতে যাবে। আমি আমার আল্লাহকে যতটুকু বুঝেছি ও অনুভব করি তাতে আমার দৃঢ় বিশ্বাস এই চেরুরা হবে জান্নাতি এবং যথার্থই ধনী। কারণ তারা নানাভাবে জুলুমের শিকার। আখেরাতে আল্লাহপাক জালেমদের নিকট থেকে সকল পাওনা আদায় করে তাদের ধনী বানিয়ে দিবেন। আর যাদেরকে ধনী মনে করা হচ্ছে জুলুম করার কারণে আখেরাতে তারা হয়ে পড়বে নিঃস্ব ও হতদরিদ্র। কারণ জুলুমের পরিণতিই হলো জাহান্নাম। জান্নাতে জালেমের জন্য ...

আমরা কৃতজ্ঞ হই

প্রথমত কৃতজ্ঞ হই মহান আল্লাহর প্রতি তাঁর অফুরন্ত দানের কারণে এবং সেই সাথে তাঁরই দান পিতামাতা, স্বামী/স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বোন ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতিও। এই পৃথিবীতে আমরা অনেকের কাছে ঋণী এবং এই ঋণ কখনো শোধ হবার নয়। আমরা সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে কিছুটা হালকা হতে পারি মাত্র। আমরা উঠতে-বসতে, চলতে-ফিরতে সর্বদা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবো মহান আল্লাহর এবং তা তাঁরই শেখানো ভাষায় 'আলহামদু লিল্লাহ' উচ্চারণের মধ্য দিয়ে। এরপর আমার ওপর যার অবদান যতো বেশি তার প্রতি এবং এই দিক দিয়ে সর্বাধিক কৃতজ্ঞতা প্রাপ্তির বড় হকদার নিজের পিতামাতা। আল্লাহপাকও সেটিই শিখিয়েছেন। তাঁর আনুগত্যের পাশাপাশি পিতামাতার সাথে সদাচরণ করার জোর তাগিদ দিয়েছেন তিনি। কৃতজ্ঞতা অর্থ সর্বদা তাঁদের প্রতি বিনয় প্রকাশ ও উত্তম আচরণ করা।  বর্তমানে আমাদের সমাজে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ নেই বললেই চলে। ফলে সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি-ভালোবাসা লোপ পাচ্ছে। এমনকি আমাদের দাম্পত্য ও পারিবারিক জীবনও নিরানন্দের হয়ে পড়ছে। মানুষ পরিবার গড়ে তোলে একটু সুখ-শান্তি, আনন্দ, তৃপ্তি পাওয়ার লক্ষ্যে। দুর্ভাগ্য  কৃতজ্ঞতাবোধ না থাকার কারণে সেটি অধরাই থেকে যাচ্ছে।...

শিশুমন ও আমাদের করণীয়

শিশুরা বড় অস্থির। আচরণে, কথাবার্তায় সবক্ষেত্রে তাদের অস্থিরতা প্রকাশ পায়। সাথে সাথে অসম্ভব জেদি। যেটি দাবি করে সেটি পূরণ না করে উপায় থাকে না। এমতাবস্থায় পিতামাতা বড় অসহায় হয়ে পড়ে। সব শিশুর ক্ষেত্রেই এমনটি হয়ে থাকে। হয়তো একটু কমবেশি।  আমার এখন ছয় নাতি-নাতনি। মেয়ের এক মেয়ে ও এক ছেলে। গতকাল নাতনির টনসিল অপারেশন হয়েছে। আমরা গতকাল নাতনিকে দেখতে যাওয়ার সময় সাথে থাকা নাতি সারাক্ষণ কথা বলে ও নড়াচড়া করে। তার কথা, আমি নড়াচড়া করছি না, গাড়ি নড়াচড়া করছে। গাড়িতে সবাই বিরক্ত। বললাম, যে বেশিক্ষণ চুপ থাকবে সে ফার্স্ট হবে ও তাকে পুরস্কার দেয়া হবে। তাতে দেখলাম, কাজ হলো। আসলে ধমকে বা বকায় তাদেরকে মোটেই থামানো সম্ভব নয়। স্কুলে বছর তিনেক অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সেটিই লক্ষ করেছি।  নাতনির অপারেশনের কারণে স্বাভাবিকভাবে ওর মা তার কাছে ছিল। রাতে হঠাৎ করে নাতি বলে বসলো, মাকে চাই। বাসায় ওর বাবা, দাদী, নানা-নানী ও এক ফুপু। আমার সবাই মিলে ওকে ম্যানেজ করতে পারলাম না। বরং সবাই মিলে আচ্ছারকম মা'র খেলাম। শেষে বাধ্য হয়ে রাত বারোটার পরে হাসপাতাল থেকে ওর মাকে আনলাম এবং আনার পর সে থামে। এখন ভাবি, আমার মেয়...