Skip to main content

শরিফ স্যারের চিকিৎসার হালনাগাদ

শরিফ স্যার বয়সে আমার চেয়ে ছয় বছরের বড়। তিনি ২০০৫ সালে খুলনা সরকারি এম এম সিটি কলেজ থেকে অধ্যক্ষ পদে অবসর গ্রহণ করেছেন। তিনি এখনো কর্মক্ষম এবং একটি ইসলামিক স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে ও নাতি-নাতনি নিয়ে তাঁর এক সুখী পরিবার।

আমি স্যারের শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছি। আপা ও তাঁর ছেলে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তাঁকে সর্বোত্তম চিকিৎসা দানের চেষ্টা করা হচ্ছে। ইবনে সিনায় চিকিৎসা সেবা ও তাদের ব্যবহার এবং চিকিৎসা ব্যয়ে তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট। গতদিন তাঁর সাথে সাক্ষাতে ও ফোনে কথাবার্তায় বারবার তিনি তা প্রকাশ করছিলেন।

ইবনে সিনা ধানমন্ডি শাখায় আজ ডা. জাকির হোসেন তাঁকে নিবিড়ভাবে দেখেছেন এবং সবকিছু খোলামেলা তাঁকে বলেছেন। ঔষধ প্রয়োগ করে কিছুটা উন্নতি ঘটানোর পর আগামী রবিবার আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অপারেশনের তারিখ দিবেন। ডা. জাকির হোসেন একজন দক্ষ হার্ট বিশেষজ্ঞ ও সার্জন। ইতোপূর্বে আমাদের মজিবর সাহেব (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) ডা. জাকির সাহেবের কাছে তাঁর হার্টের বাইপাস সার্জারি করিয়েছেন। তিনিই ডা. জাকিরের কথা জানিয়েছেন এবং ডা. জাকির ও ইবনে সিনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন।

ইবনে সিনার কাছে আমাদের অনেক প্রত্যাশা। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের জন্য ইবনে সিনা চিকিৎসা ক্ষেত্রে আশা জাগিয়েছে। স্বল্প ব্যয়ে উত্তম সেবাদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইবনে সিনার যাত্রা শুরু। ডাক্তারকে কমিশন না দিয়ে রোগীকে ২৫% কমিশন দানের নিয়ম ইবনে সিনাই প্রথম শুরু করে। রোগী অপ্রয়োজনীয় টেস্টের বিড়ম্বনা থেকে অনেকখানি মুক্তি পায়। বলা যায় স্বল্প ব্যয়ে চিকিৎসা দানের ক্ষেত্রে ইবনে সিনা পথিকৃৎ।

আজকে চিকিৎসা লাভের জন্য পার্শ্ববর্তী দেশের প্রতি ঝোঁকার ক্ষেত্রে উন্নত চিকিৎসার পাশাপাশি উত্তম ব্যবহারও কারণ। চরিত্রের সবচেয়ে বড় দিক হলো মানুষের সাথে সদাচরণ। শুধু মানুষ নয় সমগ্র সৃষ্টি সদাচরণ পাওয়ার হকদার। আমাদের কথাবার্তা, আচার-আচরণ ও লেনদেনে থাকতে হবে বিনয় ও অপরের প্রতি দয়া প্রদর্শন। আমি যতটুকু বুঝেছি- দাম্ভিক, অহংকারী, হিংসুক ও জালেম মানুষের কাছে ঘৃণিত ও আল্লাহর কাছেও ঘৃণিত এবং আল্লাহ তায়ালা এদেরকে দিয়ে তাঁর জাহান্নাম পূর্ণ করবেন।

পক্ষান্তরে আল্লাহ ও তাঁর বান্দাদের প্রতি বিনয়ী, দয়া প্রদর্শনকারী এবং ক্ষমাকারীদের জন্য বরাদ্দ রেখেছেন নেয়ামতেভরা জান্নাত। আজ বাংলাদেশে সদাচরণ দুষ্প্রাপ্য। যেসব সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান নিজেদের জনশক্তিকে সেবার মানসিকতায় উজ্জীবিত করতে পারবে তারাই সফলকাম হবে। ইবনে সিনার জন্য বাড়তি সুবিধা, এটি তাদের ব্যবসায়িক সাফল্যই নয়, রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখেরাতে সাফল্য। এটি কি সহজ কথা? একজন রোগীকে সেবাদান মানে আল্লাহকেই সেবাদান এবং আল্লাহ তাকে তার পূর্ণ প্রতিফল দান করবেন।

অনেক কথা লিখে ফেললাম। সমাজে অনিয়ম, দুর্নীতি ও মানুষের অধিকারহরণ দেখে হতাশ হয়ে পড়ি। আমরা মানুষকে Sorry, Excuse me ও Thanks বলতে পারি না। আমরা বড় কৃপণ। মানুষকে সম্মান দিলে সম্মান পাওয়া যায়, আমরা সব ভুলেই গেছি। অথচ ইউরোপ-আমেরিকার মানুষগুলোর কথাবার্তা ও আচার-আচরণে কতো বিনয় ও ভদ্রতা। বিশ্বাস করুন, এসব মানবিক গুণের বদৌলতে আজ আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে বিশ্ব শাসন করার অধিকার দান করেছেন।

আল্লাহপাক আমাদেরকে মানুষের কল্যাণে কাজ করার তৌফিক দান করুন।

Comments