Skip to main content

Posts

Showing posts from November, 2021

ভালোবাসা আল্লাহরই জন্য

  মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর সকল সৃষ্টির মধ্যে ভালোবাসা দান করেছেন। এই ভালোবাসা মূলত তাঁর সৃষ্টিকে টিকে রাখার জন্যই। সন্তানের প্রতি বাবা-মার, বাবা-মার প্রতি সন্তানের ও স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা প্রকৃতিজাত এবং যা প্রকৃতিজাত তাই ইসলাম। প্রকৃতির রাজ্যে গাছ-গাছালি, পশু-পাখি, জীব-জানোয়ার এককথায় আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টির প্রতি অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা ও সেটি উপভোগ করা এবং তা থেকে উপকৃত হওয়া বান্দার অধিকার। আল্লাহপাক এই পৃথিবীকে অপরূপ সাজে সজ্জিত করেছেন এবং এর সৌন্দর্যের প্রতি মানুষের হৃদয়ে সৃষ্টি করেছেন তীব্র আকর্ষণ। মানুষ আল্লাহর এই সৃষ্টিকে ভালোবাসবে এবং কৃতজ্ঞতায় তাঁর প্রতি অবনত হবে, এটিই স্বাভাবিক। দুর্ভাগ্য, অজ্ঞতা ও শয়তানের প্ররোচনায় স্রষ্টাকে বাদ দিয়ে অনেক সময় মানুষ সৃষ্টির পূজারি হয় এবং এরই নাম শিরক। কুরআন মজিদ খুলে আমরা প্রথম যে শব্দটি পাই, সেটি হলো ‘আলহামদু লিল্লাহ’। এই শব্দটির মাধ্যমে ব্যক্তিপূজা ও সৃষ্টিপূজার মূলোত্পাটন করা হয়েছে। মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার সবচেয়ে বড় হকদার হলেন মহান স্রষ্টা আল্লাহ রব্বুল আলামিন। আর সকল ভালোবাসা হতে হবে তাঁর অধীন। কারো প্রতি ভালোবাসা ত...

হাদিসের পাঠ

ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে ফজরের নামাজ শেষে হাদিসটি শুনলাম। আপনারাও শুনে থাকবেন। হজরত ওমর ইবনে খাত্তাব রা. থেকে বর্ণিত। নবি করিম সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে কালিমায়ে শাহাদাত তেলাওয়াত করবে (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ সা. আল্লাহর বান্দা ও রসুল) সে জান্নাতের আটটি দরজার যে কোনো একটি দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। সহিহ মুসলিম ও তিরমিজি। হয়তো বলবেন, জান্নাত কি এতোই সহজ? হ্যাঁ, সহজই তো। প্রিয়তম নবি সা.-এর মুখনিঃসৃত বাণী সবই সত্য। কোনো সন্দেহ নেই। তিনি তো আরো বলেছেন, রাস্তা থেকে কোনো কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে ফেললে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। তাঁর এ উক্তিও আমরা জানি, যে বললো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু সেই জান্নাতে প্রবেশ করলো। সবই সত্য। বান্দাকে ক্ষমা করার ব্যাপারে আল্লাহ স্বাধীন ও সর্বেসর্বা এবং তাঁর কাজে কেউ প্রশ্ন করতে পারে না। তিনি সার্বভৌম, যাকে খুশি তাকে ক্ষমা করবেন। বান্দার যে কোনো আমল কবুল করে তার বিনিময়ে জান্নাত দিবেন। এজন্য আমরা কোনো আমল করে তা কবুলের জন্য আল্লাহর কাছে কাতরভাবে প্রার্থনা করবো। এবারে কালিমা শ...

প্রতিটি মৃত্যুই জীবিতদের জন্য বার্তা

আমরা ফেসবুকে যারা সক্রিয় তারা প্রতিনিয়তই মৃত্যুর খবর পাই এবং পড়ি ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেউন। এই ইন্না লিল্লাহ --- উচ্চারণের মধ্য দিয়ে আমাদের মৃত্যুর কথাই স্মরণ করি। আমরা নিকট থেকে প্রিয়জনকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে দেখছি, জানাযায় শরীক হচ্ছি, লাশ বহন করে নিয়ে যাচ্ছি, কবরস্থ করছি। এমন মুহূর্ত আমার জীবনেও আসবে এবং সবকিছু রেখে শূন্য হাতে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে এমন উপলব্ধি একটি মুহূর্তের জন্যও আসছে না- আমাদের জন্য এটি বড়ই দুর্ভাগ্য। আল্লাহর বান্দাদের বিভ্রান্ত করার জন্য শয়তান যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিল, বলা যায় সে অনেকখানি সফল। আল্লাহর দিকে ফিরে আসার জন্য তিনি মানুষকে নানাবিধ বিপদ-আপদ দান করেন। কিন্তু মানুষের চেতনা নেই। করোনায় ৫২ লক্ষাধিক মানুষ স্বল্প সময়ের মধ্যে দুনিয়া থেকে বিদায় গ্রহণ করলো। নানা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ চলছে। আমি মনে করি, করোনা আল্লাহর নিদর্শন ছাড়া আর কিছু নয়। এটি মানবজাতির জন্য এক সতর্কবার্তা। করোনায় পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিধর ও জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে শীর্ষে এমন দেশ ও জাতিসমূহ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তার ধ্বংসলীলা শেষ না হয়ে নতুনভাবে আসার সমূহ সম্ভাবনা র...

যে দয়া করে না সে দয়া পায় না- আল হাদিস।

আসুন, আমরা আমাদের পরিবার থেকে দয়া শুরু করি। নিজ পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী পরস্পর, সন্তান, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, চলার সাথী, সকল মানুষ ও আল্লাহর সকল সৃষ্টির প্রতি সদয় হই। সৃষ্টি আল্লাহর পরিবার এবং যে তাঁর পরিবারের সাথে সদাচরণ করে সে তো আল্লাহরই সাথে সদাচরণ করে। সদাচরণের বিনিময়ে পাওয়া যাবে আল্লাহর ক্ষমা ও জান্নাত।

ঈমান ও তাকওয়া অবলম্বনকারীদের আল্লাহ বরকতের দুয়ার খুলে দেন

  জুমার খুতবা ২৬.১১.২০২১ আজ মিরপুর কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে জুমার খুতবায় সম্মানিত খতিব আলহাজ মুফতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ ও রসুল (সা.)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর বরকতের জন্য সুরা আল আ’রাফা ৯৬ নং আয়াতে উল্লিখিত আল্লাহ নির্ধারিত দুটি শর্তের ওপর আলোচনা করেন। আয়াতের সরল অর্থ- বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম ‘যদি জনপদের মানুষগুলো ঈমান আনতো এবং তাকওয়া অবলম্বন করতো, তাহলে আমি তাদের ওপর আসমান ও জমিনের যাবতীয় বরকতের দুয়ার খুলে দিতাম, কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছে, অতঃপর তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য আমি তাদের পাকড়াও করেছি’- সুরা আল আ’রাফ ৯৬। সুরা আল আরাফ মক্কী সুরা এবং শেষ পর্যায়ে অবতীর্ণ। সেসময়ে মক্কাবাসীরা রসুলুল্লাহ সা.-এর প্রচণ্ড বিরোধীতা এবং মুসলমানদের ওপর নানাবিধ জুলুম-নির্যাতন চালায়। অর্থকষ্ট ও বিপদাপদ দিয়ে আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের মন নরম করতে চান যাতে নবি-রসুলদের দাওয়াত সহজেই তারা গ্রহণ করতে পারে। মক্কায় ইতোপূর্বে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল। সেসময়ে তারা মুহাম্মদ সা.-এর কাছে এসে দোয়া করতে বললে তাঁর দোয়ার বরকতে আল্লাহ দুর্ভিক্ষ দূর করে সুদিন ফিরিয়ে দেন। ইতোপূ...

শরিফ স্যারের চিকিৎসার হালনাগাদ

শরিফ স্যার বয়সে আমার চেয়ে ছয় বছরের বড়। তিনি ২০০৫ সালে খুলনা সরকারি এম এম সিটি কলেজ থেকে অধ্যক্ষ পদে অবসর গ্রহণ করেছেন। তিনি এখনো কর্মক্ষম এবং একটি ইসলামিক স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে ও নাতি-নাতনি নিয়ে তাঁর এক সুখী পরিবার। আমি স্যারের শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছি। আপা ও তাঁর ছেলে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তাঁকে সর্বোত্তম চিকিৎসা দানের চেষ্টা করা হচ্ছে। ইবনে সিনায় চিকিৎসা সেবা ও তাদের ব্যবহার এবং চিকিৎসা ব্যয়ে তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট। গতদিন তাঁর সাথে সাক্ষাতে ও ফোনে কথাবার্তায় বারবার তিনি তা প্রকাশ করছিলেন। ইবনে সিনা ধানমন্ডি শাখায় আজ ডা. জাকির হোসেন তাঁকে নিবিড়ভাবে দেখেছেন এবং সবকিছু খোলামেলা তাঁকে বলেছেন। ঔষধ প্রয়োগ করে কিছুটা উন্নতি ঘটানোর পর আগামী রবিবার আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অপারেশনের তারিখ দিবেন। ডা. জাকির হোসেন একজন দক্ষ হার্ট বিশেষজ্ঞ ও সার্জন। ইতোপূর্বে আমাদের মজিবর সাহেব (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) ডা. জাকির সাহেবের কাছে তাঁর হার্টের বাইপাস সার্জারি করিয়েছেন। তিনিই ডা. জাকিরের কথা জানিয়েছেন এবং ডা. জাকির ও ইবনে সিনার উ...

কুরআনের পাঠ (ভুল ধারণা নিরসন লক্ষ্যে)

  বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম নিঃসন্দেহে যারা ইমান এনেছে (মুসলিম), যারা ছিল ইহুদি, খৃষ্টান এবং সাবি- এদের (সবার মাঝে) যে কেউ আল্লাহর ওপর ইমান আনবে, ইমান আনবে পরকালের ওপর এবং নেক কাজ করবে, তাদের জন্য তাদের মালিকের কাছে পুরস্কার থাকবে এবং এসব লোকের কোনো ভয় নেই, তারা চিন্তিতও হবে না’- সুরা বাকারা ৬২। এই আয়াতটি প্রসঙ্গে অনেকের ধারণা আখিরাতে কল্যাণ লাভের ক্ষেত্রে মুসলমান হওয়া শর্ত নয়। বরং আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ইমানের সাথে কেউ নেক আমল করলে আল্লাহপাক তাকে পুরস্কৃত করবেন। এই আয়াতটির পূর্বে ও পরে ইহুদিদের প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। ইহুদিদের বিশ্বাস, তারা আল্লাহর অত্যন্ত প্রিয়ভাজন এবং আখেরাতে কেবল তারাই নাজাতপ্রাপ্ত হবে। বাকি সবাই জাহান্নামে যাবে। আসলে তাদের এই ধারণারই প্রতিবাদ করা হয়েছে। বর্তমানে মুসলমানদেরও এমনি বিশ্বাস যে মুহাম্মদ সা.-এর উম্মত হিসেবে তারা নাজাত পাবে, তাদের আমল-আখলাক যতো কদর্যই হোক না কেন? আসলে বিষয়টি তা নয়। দুনিয়ার আদমশুমারিতে যে পরিচয় সেটি আসল পরিচয় নয়। আল্লাহর একটি দপ্তর রয়েছে। কে মুসলমান ও কে কাফের সেটি লিপিবদ্ধ হয় ইমান ও আমলের ভিত্তিতে। মুসলমান সেই যে আল্লাহর অ...

মোমিন ও কাফেরের দৃষ্টিতে দুনিয়া

  হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন : ‘দুনিয়া মোমিনের জন্য কয়েদখানা আর কাফেরের জন্য স্বর্গ’- মুসলিম শরিফ। গ্রন্থ পরিচিতি : সহীহ মুসলিম শরিফ হাদিস বিষয়ক প্রধান ছয়টি (সিহাহ সিত্তাহ্) গ্রন্থের দ্বিতীয়। বুখারি শরিফের পরেই এর স্থান। প্রখ্যাত মুহাদ্দিস মুসলিম ইবনুল হাজ্জাজ ২০৪ হিজরি খোরাসান প্রদেশের নিশাপুরে (ইরান) জন্মগ্রহণ করেন এবং ২৬১ হিজরির ২৬ রজবে ইন্তেকাল করেন। তিনি ইমাম বুখারির (রহ)-এর শাগরিদ ছিলেন। মুসলিম শরিফ সংকলনটি করতে তাঁর দীর্ঘ ১৫টি বছর লেগেছিল। এতে পুনরুক্তসহ প্রায় ১২ হাজার হাদিস রয়েছে। পুনরুক্ত বাদ দিলে হাদিসের সংখ্যা প্রায় ৪০০০। ইমাম মুসলিম তাঁর মুখস্থ তিন লক্ষাধিক হাদিস থেকে বাছাই করে এই বিশুদ্ধ হাদিস সংকলনটি তৈরি করেন। বর্ণনাকারীর (রাবি) পরিচিতি : প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রা. এই হাদিসটির বর্ণনাকারী। তাঁর নাম ছিল আব্দুস শামস এবং ইসলাম গ্রহণের পরে তাঁর নাম রাখা হয় আব্দুর রহমান। তিনি বিড়াল ছানাকে খুব পছন্দ করতেন বিধায় রসুলুল্লাহ সা. তাঁকে আবু হুরায়রা তথা বিড়াল ছানার মালিক বা পিতা উপনামে ডাকতেন এবং এই উপনামেই তিনি পরিচিতি লাভ করেন। তিন...

কর্মে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা প্রদর্শন অপরিহার্য

 বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম মুসলমান এক কর্মপাগল জাতি। আলোস্য তার স্বভাববিরুদ্ধ। সে আল্লাহর গোলাম এবং তাকে সৃষ্টিই করা হয়েছে আল্লাহর গোলামী করার জন্য। কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয় সার্বক্ষণিক গোলাম। একটি সেকেন্ডের জন্যও গোলামির বাইরে নয়। তার সকল কাজই ইবাদত। আহার নিদ্রা সবই ইবাদত। এমনকি বিনোদনের জন্য যা করা হয় তাও ইবাদত। শুধু খেয়াল করবে তাতে আল্লাহর কোনো নাফরমানি যেন না হয়। বিনোদনের সর্বোত্তম মাধ্যম হলো আপন পরিবারকে সময় দান। আর ইসলাম যে শিষ্টাচার শিক্ষা দেয় তা হলো সকল কাজ বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা। আল্লাহ চান তার সাম্রাজ্য যেন সুষ্ঠুভাবে চলে। সেজন্য সকল ক্ষেত্রে প্রয়োজন শৃঙ্খলা ও আনুগত্য। পরিবার, অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, মিল কলকারখানা সর্বত্রই দরকার শৃঙ্খলা। আর শৃঙ্খলার পূর্বশর্ত আনুগত্য। আমরা কখনো কর্তৃত্বশীল আবার কখনো অধীন। আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো, রসুলের আনুগত্য করো ও তোমাদের মধ্যে যারা কর্তৃত্বশীল তাদের আনুগত্য করো। অবশ্য এই আনুগত্য শর্তাধীন। আল্লাহ ও তাঁর রসুল সা.-এর নাফরমানি করে কারো আনুগত্য নেই। এই আনুগত্য হতে হবে স্বতঃস্ফূর্ত ও সন্তুষ...

প্রসঙ্গ : আমল

  বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম আমল আরবি শব্দ। বাংলায় বলি কাজ। আমলে সালেহ অর্থ নেক কাজ। আমল বা কাজকে আমরা দুভাগে ভাগ করি। নেক কাজ ও বদ কাজ। দুনিয়া ও আখেরাতে সাফল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে আল্লাহপাক প্রায়ই বলেছেন ‘যারা ইমান এনেছে ও সৎ কাজ করেছে’। আমলে সালেহ সম্পর্কে আমাদের ধারণা খুবই অস্পষ্ট। আমলদার লোক মানেই আমাদের স্মৃতিপটে ভেসে উঠে এমন কিছু বুড়ো মানুষ যাদের চুল-দাঁড়ি সাদা হয়ে গেছে, পোশাক-পরিচ্ছদও সাদা ধবধবে এবং অধিকাংশ সময় মসজিদে অতিবাহিত করেন; বলা যায় সংসার থেকে অবসরপ্রাপ্ত নির্ঝঞ্ঝাট ও নির্বিবাদ একজন মানুষ। আমাদের সমাজে কাজ না করার নাম আমল। সংকীর্ণ অর্থে আমল বলতে সাধারণের ধারণা নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, তাসবিহ-তাহলিল ও নফল ইবাদত-বন্দেগি এবং যারা এসব কাজে যত বেশি অগ্রণী তারা ততবেশি আমলদার। নিঃসন্দেহে এসবও নেক আমল। কিন্তু আল্লাহপাক যে নেক আমলের বিনিময়ে ব্যক্তিকে দুনিয়া ও আখেরাতে সাফল্য দান করবেন এবং একটি জাতিকে বিশ্বনেতৃত্বের আসনে সমাসীন করবেন তা কি শুধু এসব ইবাদত-বন্দেগি ও নফল আমলের বিনিময়ে। কক্ষণই না। আমরা নামাজে প্রায়ই একটি ছোট্ট সুরা (আসর) পড়ে থাকি, যা মক্কায় প্রাথমিককালে অবতীর্ণ। আ...

মুসলমান কি কখনো মিথ্যা বলতে পারে?

একটি গল্প দিয়ে শুরু করি। জনৈক বুজুর্গকে এক লোক বললো, 'হুজুর, আপনার স্ত্রী তো বিধবা হয়ে গেছেন।' এ কথা শুনে সেই বুজুর্গ খুব কান্নাকাটি করলেন। শেষে লোকটি বললো, হুজুর আপনি বেঁচে থাকতে আপনার স্ত্রী বিধবা হবেন কিভাবে? বুজর্গের জিজ্ঞাসা, 'মুসলমান কি কখনো মিথ্যা বলতে পারে?' অর্থাৎ স্বামী বেঁচে থাকতে স্ত্রীর বিধবা হওয়া যেমন অসম্ভব, তেমনি অসম্ভব একজন মুসলমানের পক্ষে মিথ্যাবাদী হওয়া। রসুলল্লাহ সা. বলেছেন, মিথ্যা সকল পাপের মা। তিনি আরো বলেছেন, আমার উম্মতেরা সব পারে, পারে না মিথ্যা বলতে ও বিশ্বাসঘাতকতা করতে। মুনাফিকের প্রথম বৈশিষ্ট্য, সে কথা বললে মিথ্যা বলে। আর মুনাফিকের অবস্থান হবে জাহান্নামের সর্বনিম্নস্তরে। তার জন্য জান্নাতে এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গাও বরাদ্দ নেই। মিথ্যা বলতে আমাদের কোনো দ্বিধা-আপত্তি নেই। ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস ও আইন-আদালত সর্বত্রই মিথ্যার ছড়াছড়ি। শপথ করে সাক্ষী অনর্গল মিথ্যা বলছে। এরা নিরেট মুশরিক বৈ আর কেউ নন। মিথ্যা মামলা, মিথ্যা সাক্ষী, মিথ্যা সাক্ষীর পক্ষে ওকালতি গুনাহের ব্যাপারে সবাই সমান। ওরা কিছু বৈষয়িক স্বার্থের বিনিময়ে জাহান্নাম খরিদ করে নিয়েছে। এই শ্রেণির ...