Skip to main content

Posts

Showing posts from 2018

দারসুল কুরআন সূরা ইনফিতার

সরল অনুবাদ ‘‘ যখন আকাশ ফেটে যাবে, যখন তারকাসমূহ চারদিকে বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে, যখন সমুদ্রসমূহ ফাটিয়ে ফেলা হবে, এবং যখন কবরগুলো খুলে ফেলা হবে, তখন প্রত্যেক ব্যক্তি তার সামনের ও পেছনের সবকিছু জেনে যাবে। হে মানুষ! কোন্ জিনিস তোমাকে তোমার মহান রবের ব্যাপারে ধোঁকায় নিমজ্জিত করেছে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, তোমাকে সুঠাম ও সুসামঞ্জস্য করে গড়েছেন এবং যে আকৃতিতে চেয়েছেন তোমাকে গঠন করেছেন? না, কখনো নয়, বরং (আসল কথা হচ্ছে এই যে) তোমরা শাস্তি ও পুরস্কারকে মিথ্যা মনে করছো। অথচ তোমাদের ওপর পরিদর্শক নিযুক্ত রয়েছে, এমন সম্মানিত লেখকবৃন্দ, যারা তোমাদের প্রত্যেকটি কাজ জানে। নিশ্চয়ই নেক লোকেরা পরমানন্দে থাকবে আর পাপীরা অবশ্যি জাহান্নামে যাবে। কর্মফলের দিন তারা তার মধ্যে প্রবেশ করবে এবং সেখান থেকে কোনক্রমেই সরে পড়তে পারবে না। আর তোমরা কি জানো, ঐ কর্মফল দিনটি কী? হ্যাঁ, তোমরা কি জানো, ঐ কর্মফল দিনটি কী? এটি সেই দিন যখন কারোর জন্য কোন কিছু করার সাধ্য কারোর থাকবে না। ফয়সালা সেদিন একমাত্র আল্লাহর ইখতিয়ারে থাকবে। ’’ (সূরা আল ইনফিতার ১৯) নামকরণ : প্রথম বাক্যের ইনফিতার শব্দটিকে নাম হিস...

একই সাথে মুমিন ও মুনাফিক হওয়া যায় না

ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে ফজরে ধারাবাহিক তেলাওয়াতের অংশ হিসেবে আজ তেলাওয়াত করা হয়েছে সূরা আল আহযাব-এর ১ম ও ২য় রুকুর অংশবিশেষ। নামায শেষে ৪র্থ আয়াতের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন  ধানমন্ডি তাকওয়া  মসজিদের সম্মানিত সহকারী ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুর রশীদ। সরল অর্থ- ‘‘ আল্লাহ কোন ব্যক্তির দেহাভ্যন্তরে দু ’ টি হৃদয় রাখেননি। তোমাদের যেসব স্ত্রীকে তোমরা ‘ যিহার ’ করো তাদেরকে আল্লাহ তোমাদের জননীও করেননি এবং তোমাদের পালক পুত্রদেরকেও তোমাদের প্রকৃত পুত্র করেননি। এসব তো হচ্ছে এমন ধরনের কথা যা তোমরা স্বমুখে উচ্চারণ করো। কিন্তু আল্লাহ এমন কথা বলেন যা প্রকৃত সত্য এবং তিনিই সঠিক পথের দিকে পরিচালিত করেন। ’’  (সূরা আহযাব ৪) একজন ব্যক্তি একই সাথে মু ’ মিন আবার মুনাফিক; সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদী এবং সৎ ও অসৎ হতে পারে না। তার বক্ষদেশে দু ’ টি হৃদয় থাকতে পারে না। একদিকে আল্লাহর প্রতি নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা আবার আল্লাহর প্রতি বেপরোয়া ভাব কখনই হতে পারে না। কারো পক্ষে একই সাথে দু ’ টি মর্যাদার অধিকারী হওয়াও সম্ভব নয়। সে মু ’ মিন হবে অথবা মুনাফিক। সে কাফির হবে অথবা মুসলমান। তাই কোন মু ’ মিনকে মুনাফি...

মুমিন বান্দার গুনাবলী (সূরা আল ফুরকান ৬৩-৭৭)

ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে ফজরে ধারাবাহিক তেলাওয়াতের অংশ হিসেবে আজ তেলাওয়াত করা হয়েছে সূরা আল ফুরকান-এর ৫ম রুকুর শেষ অংশ ও ৬ষ্ঠ রুকু। নামায শেষে ৬৩-৭৭ নং আয়াতে উল্লেখিত আল্লাহর নেক বান্দাদের গুণাবলী নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদের সম্মানিত সহকারী ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুর রশীদ। সরল অর্থ- ৬৩. রহমানের দাস তো তারাই, যারা জমিনের ওপর চলাফেরা করে বিনয়ী হয়ে। অজ্ঞ লোকেরা যখন তাদের সাথে বিতর্ক করতে চায়, তখন তারা বলে: ‘ সালাম ’ (তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক)। ৬৪. তারা তাদের প্রভুর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে রাত কাটায় সাজদা করে ও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। ৬৫. তারা দোয়া করে, ‘ হে আমাদের প্রভু! জাহান্নামের আযাব আমাদের থেকে দূর করে দিও, কারণ তার আযাব তো সর্বগ্রাসী। ৬৬. আর বাসস্থান ও আশ্রয়স্থল হিসেবে জাহান্নাম তো অতীব নিকৃষ্ট। ৬৭. তারা যখন খরচ করে, তখন অপব্যয় করেনা, আবার কার্পণ্যও করেনা। বরং এই দুইয়ের মাঝখানে মধ্যপন্থা অবলম্বন করে। ৬৮. তারা আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ইলাহ ডাকে না। আল্লাহ যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন এমন কোন ব্যক্তিকে হত্যা করেনা, তবে যথার্থ কারণ থাকলে সঠিক...

জুমুয়া বক্তৃতা ৩১/০৮/২০১৮

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে আজ জুমুয়ায় খতিব মহোদয় মদীনা শরীফের মর্যাদা নিয়ে আলোচনা করেন। মদীনার পূর্ব নাম ছিল ইয়াসরিব। রসূল (সা) হিজরত করে সেখানে যাওয়ার পর নামকরণ করেন মদীনাতুর রসূল।   রসূল (সা)-এর শহর এবং সেই থেকেই মদীনা নামে পরিচিত।   হারামাইন শরীফ বলতে মক্কা ও মদীনাকেই বোঝায়, যেখানে সব ধরনের হত্যাকান্ড ও পাপাচার নিষিদ্ধ এবং যে শহর দু’টি পবিত্র।   রসূল (সা)-কে আশ্রয়দান, আনছার ও মুহাজিরদের মিলেমিশে প্রথম ইসলামী রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন, মসজিদে নববীর অবস্থান, রসূল (সা)-এর রওজা মুবারক, অন্তত দশ হাজার সাহাবীর কবর, ওহুদ প্রান্তরে সত্তর জন শহীদের কবর নানা কারণে মদীনা বৈশিষ্ট্যের দাবীদার।   মদীনা সম্পর্কে অনেক হাদিস খতিব মহোদয় উল্লেখ করলেন।   রসূল (সা) বলেন, ‘ইবরাহিম (আ) যেমন কাবাকে হারাম ঘোষণা করেছিলেন, আমিও মদীনাকে হারাম ঘোষণা করছি।’ মদীনা একটি নিরাপদ শহর।   মদীনায় রিজিকের প্রশস্ততার জন্য তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন।   রসূল (সা)-এর কথা মত কোন মন্দ লোক মদীনায় টিকতে পারে না।   তিনি আরো বলেন, সাপ যেমন গর্ত থেকে বের হয়ে আবা...

সূরা আত তাকভীর (মক্কায় অবতীর্ণ আয়াত ২৯)

পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে (শুরু করছি) ১.        যখন সূর্যকে গুটিয়ে ফেলা হবে, ২.        যখন তারকাসমূহ চতুর্দিকে বিক্ষিপ্ত হয়ে যাবে, ৩.        যখন পাহাড়গুলোকে চলমান করা হবে, ৪.        যখন দশ মাসের গর্ভবতী উটনীগুলোকে তাদের অবস্থার ওপর ছেড়ে দেয়া হবে, ৫.        যখন বন্য পশুদের চারদিক থেকে এনে একত্র করা হবে, ৬.        যখন সমুদ্রগুলোতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হবে, ৭.        যখন প্রাণসমূহকে (দেহের সাথে) জুড়ে দেয়া হবে, ৮.        যখন জীবিত পুঁতে ফেলা মেয়েকে জিজ্ঞেস করা হবে- ৯.        কোন্ অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে? ১০.      যখন আমলনামাসমূহ খুলে ধরা হবে, ১১.      যখন আকাশের পরদা সরিয়ে ফেলা হবে, ১২.      যখন জাহান্নাম প্রজ্বলিত করা হবে, ...

ইসলামে বিয়ে, ওলিমা ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

ইসলামে বিয়েকে উৎসাহিত করা হয়েছে। বিয়েকে রসুল (সা) পয়গম্বরদের চিরাচরিত সুন্নাত বলে আখ্যায়িত করেছেন। যুবকদেরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন : ‘হে যুব সমাজ! তোমাদের বিয়ে করা কর্তব্য কেননা এটা দৃষ্টিশক্তিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে হেফাজত করে। আর তোমাদের মধ্যে যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোযা রাখে। কেননা এটা তার যৌনশক্তিকে দমিয়ে রাখে।’  সাহাবায়ে কেরামের মাঝে কারো কারো চিরকুমার থাকার অনুমতি প্রার্থনা তিনি সরাসরি না করে দিয়েছেন। তাই বলা যায় বয়স ও আর্থিক সামর্থ্য সৃষ্টি হলে অহেতুক বিলম্ব না করে দ্রুত বিয়ে সম্পন্ন করা উত্তম ও প্রশংসনীয় কাজ। আর বাস্তবেও দেখা যায়, যারা সময়মত বিয়ে সম্পন্ন করে তারা ব্যক্তি ও পারিবারিক জীবনে লাভবান হন। অবশ্য এখানে সামর্থের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছে। ইসলাম ফিতরাতের ধর্ম। মানুষের স্বভাব-প্রকৃতি যা দাবী করে ইসলাম মূলত তাই। বয়ঃপ্রাপ্তির পর নর ও নারীর জৈবিক চাহিদা ইসলাম অস্বীকার করেনা, বরং একটি নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে তা পূরণের জন্য বলা হয়েছে। বিয়ের মাধ্যমে গড়ে ওঠা দাম্পত্যজীবন ইসলামে পছন্দ করার সাথে সাথে প্রভূত ছওয়াবের বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর বাইরে যা, সেট...

দারসুল কুরআন সূরা মুতাফ্ফিফীন

সরল অনুবাদ ‘‘ ধ্বংস তাদের জন্য যারা মাপে কম দেয়, আর যখন মানুষের কাছ থেকে নেয়, তখন পুরোপুরি নেয়। আর যখন নিজেরা ওজন বা পরিমাপ করে তখন কম দেয়। এরা কি ভাবে না (বিচারের জন্যে) তাদের (একদিন কবর থেকে) তুলে আনা হবে? (আনা হবে) এক বড় দিবসের জন্যে, যেদিন সব মানুষ রাব্বুল আলামীনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে। কখনো না, গুনাহগারদের আমলনামা থাকবে ‘ সিজ্জীনে ’ ; তুমি কি জানো সিজ্জীনটা কী? এটা একটা লিখিত কিতাব। যারা মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয়, সেদিন তাদের জন্য ধ্বংস অবধারিত। যারা শেষ বিচারের দিনটিকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে। আর সীমালঙ্ঘনকারী পাপী ছাড়া অন্য কেউ সে দিনটিকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয় না। যখন তার সামনে আমার আয়াত পড়ে শোনানো হয় তখন সে বলে, এগুলো হচ্ছে নিছক আগের কালের গল্পগাথা; কখনো নয়, বরং এদের কৃতকর্ম এদের মনের ওপর ঝং ধরিয়ে রেখেছে। কখনো নয়, অবশ্যই এসব পাপীদের সেদিন তাদের মালিকের দীদার থেকে মাহরুম রাখা হবে। অতঃপর তারা অবশ্যই জাহান্নামের আগুনে গিয়ে প্রবেশ করবে; তখন তাদেরকে বলা হবে, এটা ঐ জিনিস, যাকে তোমরা মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিতে। কক্ষণই নয়, অবশ্যই নেক লোকদের আমলনামা উন্নত মর্যাদাসম্পন্ন ল...

সূরা ৮৫ আল বুরূজ মক্কায় অবতীর্ণ আয়াত ২২

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ১.          শপথ বিশালাকায় গম্বুজবিশিষ্ট আকাশের, ২.          শপথ সে দিনের যার আগমনের ওয়াদা করা হয়েছে, ৩.          শপথ প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর, শপথ সেই ভয়াবহ দৃশ্যের এবং যা কিছু তখন পরিদৃষ্ট হয়েছে তার; ৪.          (মু ’ মিনদের জন্য খোঁড়া) গর্তের মালিকদের ওপর অভিসম্পাত- ৫.          আগুনের কুন্ডলি-যা জালানি দ্বারা পরিপূর্ণ ছিল, ৬.          (অভিসম্পাত) যখন তারা তার পাশে বসা ছিল, ৭.          এ লোকেরা মু ’ মিনদের সাথে যা করছিলো তারা তা প্রত্যক্ষ করছিলো; ৮.          তারা এ ঈমানদারদের কাছ থেকে এ ছাড়া অন্য কোন কারণে প্রতিশোধ গ্রহণ করেনি যে, তারা এক পরাক্রমশালী ও প্রশংসিত আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছিল, ৯.       ...