Skip to main content

মুমিন বান্দার গুনাবলী (সূরা আল ফুরকান ৬৩-৭৭)


ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে ফজরে ধারাবাহিক তেলাওয়াতের অংশ হিসেবে আজ তেলাওয়াত করা হয়েছে সূরা আল ফুরকান-এর ৫ম রুকুর শেষ অংশ ও ৬ষ্ঠ রুকু।

নামায শেষে ৬৩-৭৭ নং আয়াতে উল্লেখিত আল্লাহর নেক বান্দাদের গুণাবলী নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদের সম্মানিত সহকারী ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুর রশীদ। সরল অর্থ-

৬৩. রহমানের দাস তো তারাই, যারা জমিনের ওপর চলাফেরা করে বিনয়ী হয়ে। অজ্ঞ লোকেরা যখন তাদের সাথে বিতর্ক করতে চায়, তখন তারা বলে: সালাম (তোমাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক)।

৬৪. তারা তাদের প্রভুর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে রাত কাটায় সাজদা করে ও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে।

৬৫. তারা দোয়া করে, হে আমাদের প্রভু! জাহান্নামের আযাব আমাদের থেকে দূর করে দিও, কারণ তার আযাব তো সর্বগ্রাসী।

৬৬. আর বাসস্থান ও আশ্রয়স্থল হিসেবে জাহান্নাম তো অতীব নিকৃষ্ট।

৬৭. তারা যখন খরচ করে, তখন অপব্যয় করেনা, আবার কার্পণ্যও করেনা। বরং এই দুইয়ের মাঝখানে মধ্যপন্থা অবলম্বন করে।

৬৮. তারা আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ইলাহ ডাকে না। আল্লাহ যাকে হত্যা করা হারাম করেছেন এমন কোন ব্যক্তিকে হত্যা করেনা, তবে যথার্থ কারণ থাকলে সঠিক পন্থায়।  তারা জিনা করেনা। যে এগুলো করবে, সে অবশ্যি শাস্তি ভোগ করবে।

৬৯. কিয়ামতের দিন তার দন্ড হবে দ্বিগুণ এবং সেখানে সে থাকবে স্থায়ীভাবে লাঞ্জিত অবস্থায়।

৭০. তবে যারা তওবা করবে, ঈমান আনবে এবং আমলে সালেহ্ করবে, তিনি তাদের পাপ বদল করে দেবেন পুণ্যের মাধ্যমে। আর আল্লাহ তো পরম ক্ষমাশীল ও দয়াময় আছেনই।

৭১. আর যে তাওবা করবে এবং আমলে সালেহ্ করবে, সে তো পুরোপুরি আল্লাহর অভিমুখীই হবে।

৭২. তারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না। তারা যখন অর্থহীন কার্যকলাপের সম্মুখীন হয়, তখন আত্মমর্যাদা রক্ষা করে চলে যায়।

৭৩. তাদেরকে যখন আল্লাহর আয়াত স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়, তখন তারা অন্ধ ও বধিরের মত পড়ে থাকে না।

৭৪. তারা দোয়া করে এভাবে: হে আমাদের প্রভু! আমাদের স্ত্রী/স্বামী ও সন্তানদের আমাদের চক্ষু শীতলকারী বানাও। আর আমাদের বানাও মুত্তাকীদের অগ্রগামী।

৭৫. সবর অবলম্বনের কারণে এদের প্রতিদান হবে জান্নাতের বিলাসবহুল কক্ষসমূহ, আর তাদেরকে সেখানে অভ্যর্থনা দেয়া হবে অভিবাদন এবং সালাম সহকারে।

৭৬. সেখানে তারা চিরকাল থাকবে। কত যে মনোরম আশ্রয়স্থান ও আবাস।

৭৭. হে নবী! বলো: তোমরা আমার প্রভুকে না ডাকলে তাঁর কিছুই আসে যায় না। তোমরা তো প্রত্যাখ্যানই করেছো, এখন অচিরেই তোমাদের প্রতি নেমে আসবে অপরিহার্য আযাব।

সারসংক্ষেপ

রহমানের নেক বান্দারা হবে বিনয়ী, অহেতুক বিতর্কে জড়াবে না, তাদের রাত ক্লাব-রেস্টুরেন্টে স্রেফ আমোদ-স্ফুর্তি ও আড্ডায় ব্যয়িত না হয়ে ইবাদত-বন্দেগীতে অতিবাহিত করবে।

তারা তাদের নেক আমলের কারণে গর্বিত না হয়ে জাহান্নামের আযাব থেকে পানাহ চাইবে। তারা অপব্যয় করবে না-আবার কার্পণ্যও করবে না, নরহত্যা ও জিনা-ব্যভিচার থেকে দূরে থাকবে। মিথ্যা সাক্ষ্যদান করবে না, অর্থহীন কার্যকলাপের সাথে সংশ্লিষ্ট হবে না।

আল্লাহর আয়াত স্মরণ করিয়ে দিলে অন্ধ ও বধির হয়ে পড়ে থাকবে না, তারা তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য দোয়া করবে। 

এসব গুণবিশিষ্ট ঈমানদারদের জন্য রয়েছে জান্নাতে বিলাসবহুল কক্ষসমূহ এবং ফেরেশতারা সেখানে অভিবাদন জানাবে ও চিরকাল সেখানে থাকবে।

আল্লাহ বান্দার তাওবা খুব পছন্দ করেন। গুনাহ থেকে তাওবা করলে পূর্বেকৃত পাপকে নেকিতে বদলে দেবেন অর্থ যতবার তার স্মরণ হবে সে ততবার অনুতপ্ত হবে এবং অনুতপ্ত হওয়া ও তাওবার কারণে সে নেকি পেতে থাকবে।

আল্লাহপাক আমাদেরকে তাঁর উল্লেখকৃত গুণে গুণান্বিত হওয়ার তাওফিক দান করুন।

কুরআনের পাঠ-  ০৫/০৯/২০১৮

Comments