সরল অনুবাদ
‘‘ধ্বংস তাদের জন্য
যারা মাপে কম দেয়, আর যখন মানুষের কাছ থেকে নেয়, তখন পুরোপুরি নেয়। আর যখন নিজেরা ওজন
বা পরিমাপ করে তখন কম দেয়।
এরা কি ভাবে না
(বিচারের জন্যে) তাদের (একদিন কবর থেকে) তুলে আনা হবে? (আনা হবে) এক বড় দিবসের জন্যে,
যেদিন সব মানুষ রাব্বুল আলামীনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে।
কখনো না, গুনাহগারদের
আমলনামা থাকবে ‘সিজ্জীনে’; তুমি কি জানো
সিজ্জীনটা কী?
এটা একটা লিখিত
কিতাব। যারা মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয়, সেদিন তাদের জন্য ধ্বংস অবধারিত। যারা শেষ বিচারের
দিনটিকে মিথ্যা সাব্যস্ত করে। আর সীমালঙ্ঘনকারী পাপী ছাড়া অন্য কেউ সে দিনটিকে মিথ্যা
বলে উড়িয়ে দেয় না।
যখন তার সামনে
আমার আয়াত পড়ে শোনানো হয় তখন সে বলে, এগুলো হচ্ছে নিছক আগের কালের গল্পগাথা; কখনো নয়,
বরং এদের কৃতকর্ম এদের মনের ওপর ঝং ধরিয়ে রেখেছে।
কখনো নয়, অবশ্যই
এসব পাপীদের সেদিন তাদের মালিকের দীদার থেকে মাহরুম রাখা হবে। অতঃপর তারা অবশ্যই জাহান্নামের
আগুনে গিয়ে প্রবেশ করবে; তখন তাদেরকে বলা হবে, এটা ঐ জিনিস, যাকে তোমরা মিথ্যা বলে
উড়িয়ে দিতে।
কক্ষণই নয়, অবশ্যই
নেক লোকদের আমলনামা উন্নত মর্যাদাসম্পন্ন লোকদের দফতরে রয়েছে। আর তোমরা কি জানো, এ
উন্নত মর্যাদাসম্পন্ন লোকদের দফতরটি কী?
এটি একটি লিখিত
কিতাব। নৈকট্য লাভকারী ফেরেশতারা এর দেখাশুনা করে। নিঃসন্দেহে নেক লোকেরা থাকবে বড়ই
আনন্দে। উঁচু আসনে বসে দেখতে থাকবে। তাদের চেহারায় তোমরা স্বচ্ছলতার দীপ্তি অনুভব করবে।
তাদেরকে মোহর করা বিশুদ্ধতম শরাব পান করানো হবে। তার ওপর মিশক-এর মোহর থাকবে।
যারা অন্যদের
ওপর প্রতিযোগিতায় জয়ী হতে চায় তারা যেন এ জিনিসটি হাসিল করার জন্য প্রতিযোগিতায় জয়ী
হবার চেষ্টা করে। সে শরাবে তাসনীমের মিশ্রণ থাকবে। এটি একটি ঝরণা, নৈকট্যলাভকারীরা
এর পানির সাথে শরাব পান করবে।
অপরাধীরা দুনিয়াতে
ঈমানদারদের বিদ্রুপ করতো। তাদের কাছ দিয়ে যাবার সময় চোখ টিপে তাদের দিকে ইশারা করতো।
নিজেদের ঘরের দিকে ফেরার সময় আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ফিরতো। আর তাদেরকে দেখলে বলতো, এরা
হচ্ছে পথভ্রষ্ট। অথচ তাদেরকে এদের ওপর তত্ত্বাবধায়ক করে পাঠানো হয়নি।
আজ ঈমানদাররা
কাফেরদের ওপর হাসছে। সুসজ্জিত আসনে বসে তাদের অবস্থা দেখছে। কাফেররা তাদের কৃতকর্মের
সওয়াব পেয়ে গেলো তো?’’ (সূরা আল মুতাফ্ফিফীন ১-৩৬)
নামকরণ : বাক্যে
উল্লেখিত মুতাফ্ফিফীন শব্দকেই নাম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
নাযিলের সময়কাল
: বর্ণনাভঙ্গি থেকে বোঝা যায় যে, মক্কীযুগের প্রাথমিক অবস্থায় সূরাটি অবতীর্ণ। মুসলমানদের
প্রতি নিপীড়ন-নির্যাতন তখনও শুরু হয়নি। হাসি-ঠাট্টা-টিটকারী পর্যায়ে সীমাবদ্ধ ছিল।
সূরার শেষের দিকের আয়াতসমূহে সেটিই বলা হয়েছে। কাফিররা মু’মিনদের দেখলে
বিদ্রুপ করতো, চোখ টিপে হাসতো।
বিষয়বস্তু : মক্কী
যুগে অবতীর্ণ সূরাসমূহে বেশি বেশি করে আখিরাতের প্রসঙ্গ এবং মানুষের নৈতিক ত্রুটি-বিচ্যুতির
কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আখিরাত অবিশ্বাসের ফলে মানুষের মধ্যে যে সব দোষ-ত্রুটি পরিলক্ষিত
হয় নমুনাস্বরূপ এখানে একটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ওজনে কম-বেশি করার মধ্য দিয়ে মানুষকে
ঠকানো তৎকালিন সমাজের একটি বড় ধরনের ত্রুটি ছিল। সঠিক পাল্লায় ওজন করে দেয়া ও মাপে
পূর্ণ করে দেয়ার কথা কুরআন মজিদে আরো অনেক জায়গায় বলা হয়েছে।
হযরত শোয়াঈব (আ)-এর জাতির
মাঝে ওজনে কারচুপি করার দোষ মারাত্মকভাবে দেখা দিলে নবী বারবার সতর্ক করার পরও ফিরে
না আসায় সে জাতিকে ধ্বংস করে দেয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ১-৬ আয়াতে এ প্রসঙ্গেই বলা
হয়েছে।
পরবর্তী ৭-১৭
আয়াত পর্যন্ত অবিশ্বাসীদের কালো তালিকাভূক্ত হওয়া এবং তাদের ভয়াবহ পরিণতির কথা বলা হয়েছে।
তৎপরবর্তী ১৮-২৮ আয়াতে মু’মিনদের শুভ পরিণতি প্রসঙ্গে আলোচনা করা
হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে তাদের আমলনামা উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন লোকদের রেজিস্টারে সন্নিবেশিত
করা হচ্ছে।
পরিশেষে অবিশ্বাসীদেরকে সতর্ক ও মু’মিনদেরকে শান্তনা
দিয়ে বলা হয়েছে যে আজ কাফিররা মুমিনদেরকে লাঞ্চিত-অপমানিত করছে ও তাদের প্রতি বিদ্রুপ
করছে; এই আচরণের পরিণতি হিসেবে আখিরাতে তারা অপরাধী হিসেবে উত্থিত হবে ও ভয়াবহ শাস্তির
সম্মুখীন হবে এবং মু’মিনরা কাফিরদের খারাপ পরিণতি দেখে তাদের
চোখকে শীতল করবে।
ব্যাখ্যা : আরবী
ভাষায় তাফীফ ছোট্ট, তুচ্ছ ও নগণ্য জিনিসকে বলা হয়। যারা ওজনে কারচুপি করে তারা বড় ধরনের
কোন চুরি করে না বরং হাত সাফাইয়ের মাধ্যমে প্রত্যেক ক্রেতার কাছ থেকে অল্প অল্প করে
চুরি করে। ইসলাম সামাজিক জীবনকে অনেক বড় করে দেখে। বিক্রেতার কাছে ক্রেতার হক হলো সঠিক
পাল্লায় সঠিকভাবে পরিমাপ করে দেয়া। সেখানে ওজনে কারচুপি করা, ভেজাল দেয়া বা কোন ধরনের
ধোকা-প্রতারণার মাধ্যমে ক্রেতাকে ঠকানো তার অধিকারহরণ এবং ইসলামের দৃুষ্টিতে কবিরা
গুনাহ।
মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান সবই পবিত্র; কোন না কোনভাবে তা ক্ষুণ্ন করা বড়
ধরনের অপরাধ এবং আখিরাতে অবিশ্বাসীদের ফলশ্রুতি বলে আল্লাহ উল্লেখ করেছেন। এখানে শুরুই
করা হয়েছে ‘তাদের ধ্বংস’ বলে, যারা ওজনে
কম দেয়। এটা শুধু দাঁড়িপাল্লায় ওজন করে নেয়া-দেয়ার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়।
কোন মজুর
তার মালিকের কাছ থেকে পুরো পারিশ্রমিক গ্রহণ করে তার মালিককে যদি কাজের ক্ষেত্রে ফাকি
দেয় তাহলেও তার ধ্বংস অনিবার্য। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারের কাছ থেকে পুরো বেতন-ভাতা
গ্রহণ করে সেবাদানের ক্ষেত্রে গাফেলতি করলে সেও হীন ঠকবাজদের পর্যায়ভুক্ত হবে। আখিরাতে
আল্লাহর সম্মুখে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে এমন বিশ্বাসী কারো পক্ষে ওজনে কম দেয়া বা
মানুষকে ঠকানো কখনই সম্ভব নয়।
যে সব কারণে আখিরাতে ভয়াবহ শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে,
সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অধিকার হরণ-তা আল্লাহর হোক বা বান্দার হোক। তাই ওজনে
কম-বেশি করার ক্ষেত্রে আখিরাতে বিশ্বাস-অবিশ্বাস বিশেষভাবে সম্পর্কিত এবং কোন বিশ্বাসী
বান্দার পক্ষে ওজনে কারচুপি করা বা মানুষকে ঠকানো কখনই সম্ভব নয়।
পাপী-গুনাহগারদের
আমলনামা সংরক্ষিত থাকবে সিজ্জিনে। এ শব্দটি এসেছে সিজন থেকে। সিজন অর্থ জেলখানা বা
কয়েদখানা। বোঝা যায় এমন একটি রেজিস্টার যেখানে শাস্তিযোগ্য লোকদের আমলনামা লেখা হচ্ছে।
আখিরাতের প্রতি অবিশ্বাস কোন সাধারণ ব্যাপার নয়; আল্লাহ তায়ালার ভাষায় কেবল সীমালঙ্ঘনকারী
পাপীরাই অবিশ্বাস করে।
কুরআনের মত এত উচ্চাঙ্গের ও নির্ভুল জীবন-যাপনের বিধানও তাদের
কাছে মূল্য বহন করে না। বরং তারা নানাভাবে বিদ্রুপ করে এবং বলে যে আগের কালের লোকদের
কিচ্ছা-কাহিনী বৈ আর কিছু নয়। আসলে পুনঃ পুনঃ গুনাহের কারণে তাদের অন্তরে মরিচা পড়েছে।
রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, বান্দাহ যখন গুনাহ করে তখন তার দিলে কালো দাগ পড়ে এবং সে যখন
তাওবা করে তখন তা মিটে যায়। কিন্তু বারবার যখন গুনাহ করতে থাকে তখন তার দিলে মরিচা
ধরে এবং এমতাবস্থায় ভালো কথা শোনার যোগ্যতা সে হারিয়ে ফেলে।
আখিরাতে আল্লাহর
দিদার লাভ হবে বান্দার জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি এবং এ সৌভাগ্য হবে কেবল ঈমানদারদের
জন্য। অবিশ্বাসীরা আল্লাহর দিদার লাভ থেকে হবে বঞ্চিত এবং তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম
যেটাকে তারা অবিশ্বাস করে থাকে।
‘কক্ষণই নয়’ বলে এখানে অপরাধীদের
ধারণা-বিশ্বাসের প্রতিবাদ করা হয়েছে। এ দুনিয়ায় কৃত ভালো-মন্দ কাজের ফলভোগ করতে হবে-এমন
বিশ্বাস না থাকার কারণেই মূলত অপরাধীদের বলগাহীন জীবন-যাপন এবং সমাজে যুলুম-নির্যাতন
ও নানাবিধ পাপাচার। আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে যারা সৎ জীবনযাপন করে তাদের অবস্থা
হবে অপরাধীদের একেবারেই বিপরীত।
মানুষের আমলনামা সংরক্ষণ ও তাদের তালিকাভুক্তির বিষয়ে
দু’টি দফতর রয়েছে।
একটি অপরাধীদের ও অন্যটি নেককারদের। উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন লোকদের জন্য সংরক্ষিত দফতরে
সকল নেক বান্দাদের আমলনামা সংরক্ষিত থাকবে এবং সেটা দেখাশুনার দায়িত্ব পালন করছেন আল্লাহর
নৈকট্যলাভকারী সম্মানিত ফেরেশতারা। এটা মূলত ঈমানদারদের একটি মর্যাদা।
এ দুনিয়ায় বিশ্বাস
ও নেক আমলের বিনিময়ে ঈমানদাররা জান্নাতে অফুরন্ত নেয়ামত ভোগ করবেন। জান্নাতে সুখভোগের
নানা বর্ণনা কুরআন মজিদে পেশ করা হয়েছে। সেখানে ঈমানদারদের যা দেয়া হবে তা এ দুনিয়ায়
থেকে কল্পনা করাও কঠিন।
তারপরও নানা স্থানে নানাভাবে তার বর্ণনা প্রদান করা হয়েছে।
তারা বড় আনন্দ-ফুর্তিতে থাকবে এবং উঁচু আসনে বসে আল্লাহর নেয়ামতরাজি অবলোকন করবে। আরাম
কেদারায় আয়েশী ভঙ্গিতে দর্শন একজন সুখি লোকের পরিচায়ক এবং ঈমানদাররা সেদিন সেটিই করবেন।
সেদিন ঈমানদারদের চেহারায় থাকবে আনন্দ-খুশির
ঝলক।
শরাব যা নেশার
উদ্রেগ করে এ দুনিয়ার জীবনে এক শ্রেণির মানুষের খুবই প্রিয়। ছিপি খোলার সাথে সাথে বিকট
গন্ধ এবং পান করার সময়ও পচা গন্ধ অনুভূত হয়। কিন্তু সেদিন ঈমানদারদেরকে যে শরাব পান
করানো হবে তা সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। তা হবে উৎকৃষ্টমানের পানীয়। সাধারণ ছিপি নয়, তার
ওপর মিশকের মোহর থাকবে। উপর থেকে নেমে আসা ঝর্ণার পানির সাথে শরাবও তাদেরকে পান করতে
দেয়া হবে।
মানুষ এ দুনিয়ায় বৈষয়িক উন্নতি (অর্থবৃত্ত, মান-ইজ্জত-সম্মান-কর্তৃত্ব) লাভের
জন্য প্রতিযোগিতা করে থাকে; এখানে আল্লাহপাক আখেরাতের নেয়ামত লাভের জন্য দুনিয়ায় থাকতে
প্রতিযোগিতা করার জন্য আহবান জানিয়েছেন।
এ পৃথিবীতে যারা
নাস্তিক তারা নিজেদেরকে খুব বুদ্ধিমান ও চালাক মনে করে। আখিরাতে বিশ্বাসের কারণে স্বাভাবিকভাবে
ঈমানদাররা দুনিয়ার জীবনে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা ও ভোগ-বিলাস থেকে দূরে থাকে। ঈমানদারদের
বিশ্বাস ও নৈতিকতাভিত্তিক আচরণকে তারা নির্বুদ্ধিতা বলে মনে করে।
তাই তারা ঈমানদারদেরকে
নানাভাবে বিদ্রুপ-কটাক্ষ করে। সুযোগ পেলেই দু’চার কথা শুনিয়ে
দেয়। চলার পথে তাদেরকে বাঁকা দৃষ্টিতে দেখে চোখ টিপে হাসে ও বন্ধুদের কাছ থেকে বাহবা
নেয়ার জন্য বলে অমুক নাদানকে আচ্ছা করে জব্দ করে এসেছি; আক্কেল থাকলে আর এ পথে অগ্রসর
হবে না।
ঈমানদারদের সৎ পথে চলার মাধ্যমে অভাব-অনটনে থাকা, ঈমানের পথে বিপদাপদকে বরণ
করে নেয়াকে বোকামী এবং আখিরাতের বেহেশত-দোযখে বিশ্বাসকে তারা মনে করে যে এরা বিভ্রান্ত
ও পথভ্রষ্ট। আল্লাহর জিজ্ঞাসা কে বিভ্রান্ত ও কে সঠিক-এ বলার অধিকার তাদেরকে কে দিয়েছে?
তাদেরকে তো আর ঈমানদারদের তত্ত্বাবধায়ক করে পাঠানো হয়নি।
আখিরাতে আল্লাহপাক
ঈমানদারদেরকে তাদের বিশ্বাস ও নেক আমলের পূর্ণ প্রতিদান প্রদান করবেন এবং প্রতিদান
পেয়ে তারা মহা খুশি হয়ে যাবে। সাথে সাথে কাফিরদের দুরবস্থা ও সকল যুলুমের বদলা পূর্ণমাত্রায়
পেয়ে জাহান্নামের শাস্তিভোগ দেখে তারা হাসতে থাকবে। জান্নাতের ব্যালকনিতে আরামকেদারায়
বসে ঈমানদাররা পাপীদের শাস্তিভোগ দেখার সাথে সাথে বলবে- ‘তোমরা তোমাদের
কাজের বদলা পেয়েছ তো?’ যা তাদের জন্য হবে বড় অপমানজনক ও কষ্টদায়ক।
শিক্ষা : এই সূরাটি
আখিরাতে বিশ্বাসকেন্দ্রিক। আখিরাতে অবিশ্বাসের ফলে মানুষের মধ্যে যে সব ত্রুটি-বিচ্যুতি
দেখা দেয় প্রথমের দিকে দৃষ্টান্তস্বরূপ ওজনে কমবেশি করার কথা বলা হয়েছে। নেয়ার সময়
পূর্ণমাত্রায় নেবে, অথচ দেয়ার সময় কম দেবে-নৈতিক দিক দিয়ে বড় ধরনের ত্রুটি যা সমাজে
সর্বত্রই দৃষ্টিগোচর হয়। আজকে অফিস-আদালত সর্বত্রই বেতন প্রাপ্তির সাথে ঘুষ-দুর্নীতির
সয়লাব বয়ে চলেছে।
এরা পূর্ণমাত্রায় বেতন ও সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছে, অথচ বিনিময়ে জনগণকে
সেবাদানে কার্পণ্য করছে। এর মূলে রয়েছে আখিরাতে বিশ্বাসের দুর্বলতা। আখিরাতে বিশ্বাসী
সবারই আল্লাহর নাফরমানি থেকে দূরে থাকা উচিৎ।
এখানে আখিরাতের যে চিত্র অংকন করা হয়েছে তাতে পাপীদের ভয়াবহ শাস্তি ও ঈমানদারদের
মহা সুখ-স্বাচ্ছন্দের কথা বলা হয়েছে। প্রকৃতই আখিরাতে বিশ্বাসীদের জীবনচরিত্র পাল্টে
যেতে বাধ্য।
আল্লাহপাক তাঁর দেয়া নেয়ামত ভোগের জন্য তাঁর বান্দাদেরকে প্রতিযোগিতা করার
আহবান জানিয়েছেন। প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে আল্লাহর পথে এগিয়ে যাওয়ার তাওফিক আমাদেরকে
দান করুন।
Comments
Post a Comment