Skip to main content

Posts

Showing posts from 2021

ইসলামের দৃষ্টিতে বিজয়োত্তর করণীয়

বিজয় মানে আনন্দ উল্লাস। যে কোনো বড় কাজ সাধিত হলে মানুষ খুশি হয় এবং আনন্দ করে। রাতদিন পরিশ্রম করে পরীক্ষা শেষে ভালো রেজাল্ট হলে, তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে কেউ চাকরি পেলে বা মামলা- মোকদ্দমায় জয়ী হলে সে বিজয়সূচক ভি চিহ্ন দেখিয়ে আনন্দ করে। দুঃখ-কষ্টে ব্যথিত হওয়া এবং ভালো কিছু হলে আনন্দিত হওয়া মানুষের স্বভাব-প্রকৃতিরই অংশ। ভালো কিছু পেলে বা হলে ইসলাম যে শিষ্টাচার শিক্ষা দেয় তাহলো সে মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবে এবং স্বতস্ফুর্তভাবে বলে উঠবে ‘আলহামদু লিল্লাহ’। অর্থাৎ সে নিজের অর্জন মনে করে বড়াই করবে না বা অহঙ্কার করবে না। বিজয়ের ক্ষেত্রে অনেক সময় প্রতিদ্বন্দ্বি থাকে। যেমন, নির্বাচনে অনেকে অংশগ্রহণ করে। সবাই কঠোর পরিশ্রম করে, টাকা-পয়সা খরচ করে কিন্তু নির্বাচনে জয়লাভ করে মাত্র একজন। সাধারণত আমাদের দেশে যে সংস্কৃতি চালু আছে তাতে দেখা যায় বিজয়ী ব্যক্তি সপ্তাহ ধরে বিজয়োল্লাস করে এবং অনেক সময় বিজয়ী ব্যক্তির কর্মী-সমর্থকরা বিজিত ব্যক্তির ওপর চড়াও হয়। এজাতীয় আচরণ খুবই ঘৃণ্য ও নিন্দনীয়। বরং বিজিত ব্যক্তির প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপনই হলো বিজয়ী ব্যক্তির প্রধান কর্তব্য। রাজনীতির অঙ্গনে জয়-পরাজয় অনেক কিছু বয়ে ...

বিনোদন জীবনেরই অংশ

যে কাজে রয়েছে আনন্দ ও সুখানুভূতি সেটাকেই আমরা বলি বিনোদন। নানা কর্মের মধ্যে মানুষ বিনোদন খোঁজে। কুরআন তেলাওয়াত, বইপড়া, খেলাধুলা, গানবাজনা, সিনেমা দেখা, নেশায় আসক্ত হওয়া, ভ্রমণকরা, বাগান করা ইত্যাদি। সবকিছু মানুষের জন্য কল্যাণকর এমনটি নয়। যেমন, বাচ্চাদের মোবাইলে গেম খেলা ওদের জন্য বিনোদন, আনন্দের খোরাক কিন্তু আসক্ত করে বিধায় অভিভাবকরা তা পছন্দ করেন না। সবকিছুর মাঝেই ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক আছে। বিনোদন সব বয়সী নারী-পুরুষের জন্য প্রয়োজন। তবে বেশি উপভোগ করে শিশু-কিশোররা। ঘুরাঘুরি শিশু-কিশোরদের খুব পছন্দ। বিনোদনের জন্য ক্লাবকেন্দ্রিক সংস্কৃতির দিন দিন প্রসার ঘটছে। অধিকাংশ ক্লাবগুলোয় চলে জুয়া, গানবাজনা ও নাচের আসর এবং নানাবিধ অশ্লীলতা। এর যতো প্রসার ঘটছে তত আমাদের পারিবারিক প্রশান্তি বিনষ্ট হচ্ছে। আদম আ.-এর প্রশান্তির লক্ষ্যেই তাঁর জুড়ি হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে হাওয়া আ.-কে। নর ও নারীর মধ্যে আকর্ষণ আল্লাহর সৃষ্টি। সকলের অধিকার সমুন্নত রাখা এবং বিশ্ব সাম্রাজ্য সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আল্লাহপাক সৃষ্টির শুরু থেকে নিয়ম-কানুন দান করেছেন। প্রশান্তির লক্ষ্যেই আল্লাহ তায়ালা আদম ও হাওয়ার মধ্যে বিয়ের ...

রনির পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন

  আলহামদু লিল্লাহ আজকের এই দিনটি আমাদের পরিবারের জন্য বড় আনন্দের ও সুখের। আমার ছেলে প্রকৌশলী মো. মাহমুদুর রহমান রনি বুয়েট থেকে পাশ করার পর দেশে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিতে কিছুদিন শিক্ষকতার পর স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকায় যায়। সেখানে প্রথমে মাস্টার্স ও পরে পিএইচডি করে। আজকে ১৭ ডিসেম্বর ২০২১ শুক্রবার দুপুর ১-৩০ (বাংলাদেশ সময় ১৮ তারিখ রাত ২-৩০) লুইভিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কনভোকেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি অশেষ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আলহামদু লিল্লাহ। পরিবার নিয়ে সেখানে দীর্ঘ চেষ্টা-প্রচেষ্টা ও সাধনার পরে আল্লাহপাক রনি ও আমাদের পরিবারের প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করেছেন। আমরা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার পাশাপাশি রনিকে জানাই অভিনন্দন ও শুভ কামনা। পাশে থেকে সহযোগিতা করায় অভিনন্দন জানাই আমার বৌমা ও নাতিদ্বয়কে। আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে তাঁর রহমতের ছায়ায় আবৃত করে রাখুন। আমিন। আমি সবার কাছে দোয়া চাই।

হাদিস (তাকদিরের প্রতি বিশ্বাস)

হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন একদিন আমি নবি করিম (সা.)-এর পেছনে উটের পিঠে চড়ে যাচ্ছিলাম। তখন তিনি বললেন : হে বালক! আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিক্ষা দিচ্ছি - (১) আল্লাহকে স্মরণ রাখো আল্লাহ তোমার রক্ষক হবেন, (২) আল্লাহর দ্বীনের হেফাজত করো, তাহলে আল্লাহকে বা আল্লাহর রহমতকে তোমার সামনে দেখতে পাবে, (৩) যখন কোনো কিছুর জন্য প্রার্থনা করার প্রয়োজন মনে করবে তখন আল্লাহর নিকট তা চাইবে, (৪) যখন কোন সাহায্য পেতে চাও তখন এক আল্লাহর নিকটই তা চাইবে, (৫) এই কথা মনে রাখবে যে, সমস্ত লোক যদি তোমার উপকার করার জন্য একত্রিত হয় তবুও তারা তোমার কোনো উপকার করতে পারবে না অবশ্য শুধু ততটুকুই পারবে যতটুকু আল্লাহ তোমার জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। পক্ষান্তরে সকল লোক যদি তোমার ক্ষতি করার জন্য একযোগে উঠে পড়ে লেগে যায় তবুও তারা তোমার ততটুকুই ক্ষতি করতে পারবে যতটুকু আল্লাহর নিকট নির্দিষ্ট আছে, তার বেশি নয়। মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি। ব্যাখ্যা : হজরত ইবনে আব্বাস রা. রসুলল্লাহ সা.-এর আপন চাচাতো ভাই। হাদিসটিতে কয়েকটি বিষয়ে তিনি নসিহত করেছেন। প্রথমত, সর্বদা আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করা এবং এর বিনিময়ে আল্লাহ বান্দার জন্য র...

কুরআন থেকে নেয়া

  ٱلَّذِى خَلَقَ ٱلْمَوْتَ وَٱلْحَيَوٰةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلًا وَهُوَ ٱلْعَزِيزُ ٱلْغَفُور কাজের দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে কে উত্তম তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য তিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন - আর তিনি পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীলও- সুরা: আল মুলক, আয়াত: ২ এই দুনিয়া একটি পরীক্ষা ক্ষেত্র। আমাদের জীবনকাল পরীক্ষার সময়। স্বল্প সময়ের এই জীবনে আমরা ভালো করি না মন্দ করি সেটিই দেখার বিষয়। ভালো ও মন্দ দুটি করারই ক্ষমতা ও সুযোগ আল্লাহ দিয়ে রেখেছেন। জীবন আল্লাহর দান এবং মৃত্যুও তিনি ঘটান। একথা বলার পর আল্লাহপাক তাঁর নিজের পরিচয় দিয়েছেন যে তিনি পরাক্রমশালী এবং সাথে সাথে ক্ষমাশীলও। দুনিয়ার জীবনে মন্দ কাজ করলে তিনি কঠোর শাস্তি দিবেন এবং শাস্তি দানে তিনি একক ক্ষমতার অধিকারী। কারো সুপারিশ বা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা নেই। তাই বলে তিনি জালেম নন অর্থাৎ অন্যায়ভাবে কাউকে শাস্তি দেবেন না বা অপরাধ করে ক্ষমা চাওয়ার পরও কাউকে তিনি শাস্তি দেবেন না। প্রতি মুহূর্ত আমরা মৃত্যু দেখছি। সম্প্রতি লঞ্চে আগুন লেগে একই সাথে ৩৮ জনের মৃত্যু বড়ই করুণ ও হৃদয়বিদারক এবং এভাবে মৃত্যু ঘটবে কারো ধারণাও ছিল না। এ-সব মৃ...

কুরআন থেকে নেয়া

  لَقَدْ جَآءَكُمْ رَسُولٌ مِّنْ أَنفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُم بِٱلْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ দেখো, তোমাদের কাছে এসেছে তোমাদের মধ্য থেকে একজন রসুল। তোমাদের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া তার জন্য কষ্টদায়ক। সে তোমাদের কল্যাণকামী। মুমিনদের প্রতি সে স্নেহশীল ও করুণাসিক্ত- সুরা: আত তওবা, আয়াত: ১২৮ নবি মুহাম্মদ সা. আমাদের আদর্শ। তাঁর গুণে গুণান্বিত হই। আমরা যেন কারো ক্ষতির কারণ না হই এবং সবার জন্য কল্যাণকামী হই। স্নেহ ও করুণা দ্বারা সবাইকে সিক্ত করি। পরস্পর ঘৃণা এবং হিংসা ও বিদ্বেষ মুক্ত একটি মানবিক সমাজ গড়ে তুলি। আমরা উপলব্ধি করি যে, হিংসুকের জন্য আল্লাহর ক্ষমা নেই। দাউ দাউ করে জ্বলা আগুনই তার ঠিকানা।

কুরআন থেকে নেয়া

  يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُوا۟ رَبَّكُمُ ٱلَّذِى خَلَقَكُم مِّن نَّفْسٍ وَٰحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَآءً وَٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ ٱلَّذِى تَسَآءَلُونَ بِهِۦ وَٱلْأَرْحَامَ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا হে মানব জাতি! তোমাদের রবকে ভয় করো। তিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন একটি প্রাণ থেকে। আর সেই একই প্রাণ থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জোড়া। তারপর তাদের দু’জনার থেকে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। সেই আল্লাহকে ভয় করো যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পরের কাছ থেকে নিজেদের হক আদায় করে থাকো এবং আত্মীয়তা ও নিকট সম্পর্ক বিনষ্ট করা থেকে বিরত থাকো। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ‌ তোমাদের ওপর কড়া নজর রেখেছেন। সুরা: আন নিসা, আয়াত ১। আমরা সবাই আদমের সন্তান। মানুষে মানুষে উচ্চ-নীচ কোনো ভেদাভেদ নেই। নারী-পুরুষ, সাদা-কালো, ভাষা, বংশ ও দেশ ভিত্তিতে কোনো পার্থক্য নেই। শ্রেষ্ঠত্ব যা তা গুণগত। যে তাকওয়ার অধিকারী বা নীতিবান সেই সেরা। নারীর সৃষ্টিও একই প্রাণ থেকে। কারো হক যাতে ক্ষুণ্ণ না হয় সেব্যপারে আল্লাহকে ভয় করে চলার তাগিদ দেয়া হয়েছে। আদমের সন্তান ...

হুমায়শার জন্ম

আমাদের মেজ ছেলে মো. লতিফুর রহমান ও পুত্রবধূ ফারিহা রহমানের প্রথম সন্তানের জন্ম হয় ২৪ ডিসেম্বর ২০২১ (৮ পৌষ ১৪২৮, ১৯ জুমাদাল উলা ১৪৪৩) শুক্রবার রাত ৭-২৫ ডা. সালমা লাভরীনের তত্ত্বাবধানে ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কল্যাণপুর)। জন্মের সময় নাতনির ওজন ছিল ৩.৫ কেজি। আগের দিন বৃহস্পতিবার ব্যথা উঠলে লতিফুরের আম্মা কর্তৃক কামালের সাথে পরামর্শক্রমে মাগরিবের পর ফারিহাকে ইবনে সিনা হাসপাতালে নেয়া হয়। সাথে যায় লতিফুরের আম্মা, লতিফুর ও আতিক। ডাক্তার ডেট দিয়েছিলেন ৪ জানুয়ারি থেকে ১২ জানুয়ারি। হাসপাতালে ভর্তি করার পর ২৪ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ায় সিজরের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং ডা. সালমা লাভরীনের হাতে সুস্থ ও স্বাভাবিক শিশু জন্মগ্রহণ করে। আলহামদু লিল্লাহ। লতিফুর ও আতিক গিয়ে মিষ্টি এনে হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট এবং উপস্থিত আত্মীয়-স্বজন ও আতিকের বন্ধুদের মাঝে প্রদান করে। জন্মের সময় উপস্থিত ছিল দাদি, বাবা ও চাচা এবং জন্মের পরপরই হাসপাতালে উপস্থিত হন দাদা, নানি, ফুফু তাহেরা, খালা (মুক্তি), দুই খালু (প্রিন্স ও নজরুল), খালাতো বোন (নজরুলের মেয়ে) ও প্রিন্সের দুলা ভাই (টোলারবাগ)। সেই রাতেই ১১টায় নবজাতককে কেবিনে দেয়া হয়।...

মুমিনদের জন্য আল্লাহর প্রতিশ্রুতি

আমরা সবাই বিশ্বাস করি যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন এবং তাদের জন্য রয়েছে আখিরাতে চিরস্থায়ী সুখের আবাস জান্নাত। দুনিয়াতেও সুখী ও সুন্দর জীবন যাপনের প্রতিশ্রুতি তিনি ব্যক্ত করেছেন। তিনি তাঁর বান্দাদেরকে তাঁর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করতে বলেছেন। তাঁর ভাণ্ডার অফুরন্ত এবং তিনি কৃপণ নন, তিনি উদার ও তাঁর বান্দাদের মুক্তহস্তে দিতে চান। নিচে আমি দুটি আয়াত উদ্ধৃত করতে চাই যেখানে আল্লাহপাক মুমিনদের বিজয়ী করার ও খেলাফত দানের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন। শর্ত হচ্ছে প্রকৃত মুমিন হওয়া ও নেক আমল করা। বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ‘মনমরা হয়ো না, দুঃখ করো না, তোমরাই বিজয়ী হবে, যদি তোমরা মুমিন হও’- আলে ইমরান ১৩৯। ‘আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তোমাদের মধ্য থেকে যারা ঈমান আনবে ও সৎ কাজ করবে তাদেরকে তিনি পৃথিবীতে ঠিক তেমনিভাবে খিলাফত দান করবেন যেমন পূর্বে অতিক্রান্ত লোকদেরকে দান করেছিলেন, তাদের জন্য তাদের দ্বীনকে মজবুত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত করে দেবেন, যে দ্বীনটি আল্লাহ তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের (বর্তমান) ভয়-ভীতির অবস্থাকে নিরাপত্তায় পরিবর্তিত করে দেবেন। তারা যেন শুধু আমা...