আজ কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে জু'মার খুতবায় সম্মানিত
খতিব আলহাজ্ব মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ এবং রসুল (সা)-এর ওপর
দরুদ ও সালাম পেশের পর সূরা বাকারা ২২২ নং আয়াত তেলাওয়াত করেন এবং সরল অর্থ পেশ
করেন-‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন ও
পবিত্রতা-পরিচ্ছন্নতা অবলম্বনকারীদেরও ভালোবাসেন’। সাথে একটি হাদিস উদ্ধৃত করেন- ‘পবিত্রতা ঈমানের অর্ধেক’। পবিত্রতার ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন,
অপবিত্রতা নিয়ে ওযু ও নামায কোনটিই হবে না।
তিনি বলেন গোসল চার প্রকার। ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাত ও মুস্তাহাব।
স্বামী-স্ত্রীর মিলন ও স্বপ্নদোষ হলে গোসল ফরজ হয়ে যায়। গোসলের ফরজ ৩টি। গড়গড়ার
সাথে কুলি করা, নাকের নরম জায়গায় পানি প্রবেশ করানো এবং সারা শরীরে পানি পৌঁছে
দেয়া। তিনি রসুল (সা)-এর দুই স্ত্রীর মা আয়িশা (রা)ও মা মায়মুনা (রা) কর্তৃক রসুল
(সা)-এর ফরজ গোসলের বর্ণনা দেন। সার কথা হলো রসুল (সা) প্রথমে নাপাকি পুরিষ্কার
করার পর পূর্ণরূপে ওযু করতেন এবং মাথার চুলগুলো খেলান করতেন ও মাথা ধুয়ে ফেলতেন।
এরপর সারা শরীরে পানি পৌঁছানোর পর সেখান থেকে সরে এসে পা ধুয়ে নিতেন। তিনি বলেন,
গোসলের পর পৃথক ওযুর প্রয়োজন নেই।
ওয়াজিব গোসল হলো মৃত ব্যক্তিতে গোসল প্রদান এবং
নও মুসলিমের শরীরে ময়লা থাকলে গোসল করা।
সুন্নাত গোসল হলো জু’মার দিন, আরাফার দিন, দুই ঈদের দিন, ইহরামের
পোশাক পরিধান ও তাওয়াফের পূর্বে গোসল করা।
মুস্তাহাব গোসল গরমের দিন মানুষ ঘর্মাক্ত হলে বা
মাইয়াতের গোসল দানের পর গোসল করা।
খতিব মহোদয় বলেন ওযুর ফরয চারটি- মুখমন্ডল ধৌত
করা, দুই হাতের কনুই পর্যন্ত ধৌত করা, মাথা মোসেহ করা এবং পায়ের টাকনু পর্যন্ত ধৌত
করা। মুসলিম শরীফের একটি হাদিস উদ্ধৃত করে তিনি বলেন ওযুর সময় গোড়ালি শুকনা থাকাটা
জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হবে।
পানির অপচয় না করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন রসুল (সা)
ওযু করতেন এক লিটার পানি দিয়ে এবং গোসল করতেন ৪/৫ লিটার পানি দিয়ে। পানি পাওয়া না
গেলে তিনি পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুমের কথা বলেন। তায়াম্মুমের ফরজ তিনটি- নিয়ত
করা (মনে মনে সংকল্প করা), মুখমন্ডল মোসেহ করা ও দুই হাতের কনুই পর্যন্ত মোসেহ
করা।
ওযু করার পর তিনি দুই রাকাত নামায (তাহিয়্যাতুল
ওযুর ) পড়ার গুরুত্ব আলোচনা করতে যেয়ে বলেন রসুল (সা) মি’রাজের রাতে জান্নাতে প্রবেশ করলে হযরত বিলাল
(রা)-এর পায়ের আওয়াজ শুনতে পান। তিনি বিলাল (রা)-কে ডেকে জিজ্ঞেস করেন-‘তোমার কী আমল যার কারণে তোমার এ মর্যাদা’? জবাবে বিলাল (রা) বলেন, ‘আমার তো এমন কোন আমল নেই, তবে রাতে হোক-দিনে
হোক, মসজিদে হোক-ঘরে হোক ওযু করলে আমি দু’রাকাত নামায পড়ে নেই’।
সারা বিশ্বব্যাপি মুসলিম নির্যাতনের প্রসঙ্গে
বলেন ভারত,কাশ্মির, মিয়ানমার, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, ফিলিস্তিন সর্বত্রই
মুসলিম নির্যাতন চলছে। সবাই আমাদের ভাই এবং কোথাও মুসলিম নির্যাতন হলে অন্তরে
ব্যথা অনুভব করতে হবে। মোবাইলে ফালতু জিনিস শেয়ার না করে কোথাও কোন মুসলিম
নির্যাতন হলে তা ছড়িয়ে দেয়ার জন্য তিনি মুসল্লিদের প্রতি আহবান জানান।
মসজিদের ইমাম সাহেব আজকে হজ্ব উপলক্ষে পবিত্র
ভুমি মক্কায় যাচ্ছেন। নামায শেষে ইমাম সাহেবসহ যাঁরা হজ্বে যাচ্ছেন ও যারা দোয়া
চেয়েছেন তিনি তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন এবং সামষ্টিক মোনাজাত না করে
ব্যক্তিগতভাবে মোনাজাত করার জন্য বলেন। সংক্ষেপিত।
Comments
Post a Comment