গতকাল আছরে
তাকওয়া মসজিদে নামায শেষে বের হওয়ার সময় একজন পুলিশ সদস্যকে সাদাছড়িধারী এক অন্ধলোককে
সিঁড়ি ভেঙ্গে নেমে আসতে সহায়তা করতে দেখলাম। আমি তাঁর পেছনে পেছনে নামলাম এবং লক্ষ্য
করলাম এ কাজের মাঝে তাঁর আন্তরিকতা ও দরদ প্রকাশ পাচ্ছিল। রাস্তায় সুন্দরভাবে নামিয়ে
দেয়ার পর আবার তিনি মসজিদে ফিরে গেলেন তাঁর জুতা নেয়ার জন্য। অনেক মুছল্লির মধ্যে পুলিশ
ভাইটির এ আচরণ যদি গোটা বাহিনীর মধ্যে প্রকাশ পেত তাহলে এ দেশটি অগ্রগতির শীর্ষে পৌঁছে
যেত। তার এ দরদ ও আন্তরিকতার কারণে স্বাভাবিকভাবে তার প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা-ভালোবাসা
ও দোয়া চলে আসলো।
আবার যখন ক্রসফায়ার
ও পুলিশ হেফাজতে নিহত হওয়ার খবর শুনি তখন ঘৃণা, ক্ষোভ স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চলে আসে, যা
আমরা কামনা করি না। একজন খুনি ও ডাকাতও যেন মনে করে পুলিশ আমার আশ্রয়, কারণ সে গণপিটুনীর
শিকার হতে পারে। পুলিশের কাজ হলো অপরাধীকে ধরে বিচারের মুখোমুখি করা। বিচারবহির্ভূত
হত্যাকান্ড কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এটা সভ্য দেশের পরিচায়ক নয়। একজন অপরাধীর অপরাধসংঘটন
ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অপরাধসংঘটন এক নয়। আমরা এটাও বিশ্বাস করি এমন আচরণ গোটা বাহিনীর
নয়, কিন্তু বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ও জনগণের কাছে অপ্রিয় হয়। একজন বৃটিশ নারী গর্ব
করে বলে-আমার ভাই পুলিশে চাকুরী করে এবং একজন জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন-আমাদের দেশের
পুলিশ মিথ্যা বলে না। এটা তাদের গর্ব ও অহঙ্কার। আমরাও এমনটি চাই। দেশের আইন-শৃঙ্খলা
বাহিনী বিশ্বাসী জনগোষ্ঠীরই একটি অংশ। প্রিয়তম নবী (সা) কত সুন্দরভাবেই না বলেছেন:
দুটি চোখকে আল্লাহ জাহান্নামের আগুনে পোড়াবেন না-যে চোখ আল্লাহর ভয়ে অশ্রু ঝরায় আর
যে চোখ জনগণের নিরাপত্তা বিধানে বিনিদ্ররজনী যাপন করে। আমরা চাই আমাদের আইন-শৃঙ্খলা
বাহিনীর সকল সদস্য জনগণের ভালোবাসা নিয়ে সম্মানজনক জীবন-যাপন করার সাথে সাথে আখেরাতেও
আল্লাহর নেক বান্দাদের দলভূক্ত হয়ে জান্নাতের বাসিন্দা হোক। আমিন। ১২/০৯/২০১৭
Comments
Post a Comment