স্বাগত ১৪২৯

আজ ১ বৈশাখ। বাঙলা নববর্ষে সবাইকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বছরের শুরুতে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার নিকট কামনা করি- আমাদের মাঝ থেকে দূর হয়ে যাক হিংসা-বিদ্বেষ ও অতীতের সকল গ্লানি এবং জীবন শুরু হোক সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও সুধারণার মধ্য দিয়ে।

বর্ষবরণ সব জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে। বাঙালি কৃষক ও ব্যবসায়ীর মধ্যে বাঙলা সনের আবেদন সুদূর অতীত থেকে চলে আসছে। কৃষকের কাছে এটি ফসলী সন। জমি চাষ, বীজ বপনসহ নানা কাজে তারা বাঙলা সন তারিখ গণনা করে। ১ বৈশাখ গ্রামবাংলার কৃষক ও ব্যবসায়ীদের কাছে ছিল উৎসবের। দোকানে দোকানে চলতো হালখাতা ও খরিদদারকে মিষ্টিমুখ করার ব্যবস্থা। দোকানপাট ও ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পুরাতনকে বিদায় দিয়ে ঝকঝকে নতুন খাতায় নবযাত্রা শুরু হতো। কিন্তু গ্রামে নববর্ষের সেই আমেজ আর নেই। শহরে নানা আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হয়েছে।

আনন্দ-স্ফূর্তি ও বিনোদন জীবনেরই অংশ। এখানেও প্রত্যেকের বিশ্বাস ও কৃষ্টি-কালচারের প্রতিফলন ঘটে। ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক না হলে দেশীয় আচার- অনুষ্ঠান ও সামাজিক রীতিনীতি মেনে চলার ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি নেই। আপত্তি সেখানে যদি কোনো আচার অনুষ্ঠানে শিরক, নগ্নতা ও অশ্লীলতার প্রকাশ থাকে। বিজাতীয় সংস্কৃতিতে নিজেকে ভাসিয়ে দেয়া কোনো মুসলমানের পক্ষে সম্ভব নয়। গতকাল আমাদের ইমাম সাহেব হাদিস উদ্ধৃত করে বলেন ইহুদি খৃষ্টান ও মুশরিকদের সাথে সাদৃশ্য কিছু করা যাবে না এবং যারা করবে কিয়ামতের দিন তারা তাদের দলভুক্ত হবে।

নববর্ষে পরিবারে ভালো খাদ্যগ্রহণ, পার্ক বা কোনো দর্শনীয় স্থানে ঘুরাঘুরি এবং আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুদের বাড়ি বেড়ানো নির্মল আনন্দের পাশাপাশি সওয়াবও রয়েছে। পরিবারে সময় দান মূলত পরিবারের হক আদায় করা। বর্তমান অনুষ্ঠানাদিতে বিজাতীয় সংস্কৃতির পাশাপাশি পর্দাহীনতা চরম প্রকাশ ঘটেছে। রমজানের রোজা রাখা যেমন ফরজ তেমনি সকল নারী পুরুষের জন্য পর্দা মানাও ফরজ। পর্দা না মানলে তার অভিভাবকও দায়ূস হিসেবে শাস্তির মুখোমুখি হবে।

আজকের দিনে আমাদের প্রার্থনা- হে পরোয়ারদেগার! অতীতের ভুল-ভ্রান্তি, ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দাও। সকল হিংসা-বিদ্বেষ থেকে আমাদের মুক্ত করে দাও। আমাদের মাঝে দয়া ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করে দাও। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে হেফাজত করো এবং এর নাগরিকদের মধ্যে সহনশীলতা ও সুধারণা জাগ্রত করে দাও। হে আল্লাহ! সর্বাবস্থায় তুমি আমাদেরকে তোমার সন্তুষ্টির উপর চলার তৌফিক দান করো। আমিন।