রমজানের বরকত হাসিলের জন্য আমাদের সবারই প্রস্তুত হতে হবে

কাঁটাবন মসজিদের সম্মানিত খতিব অধ্যাপক মাওলানা রফিকুর রহমান মাদানি আজকের খুতবায় আল্লাহপাকের হামদ ও রসুলুল্লাহ সা.-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর শবেবরাত এবং পবিত্র রমজান মাসকে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ প্রসঙ্গে আলোচনা করেন।

খতিব মহোদয় বলেন, একটি বিশেষ রাত নয় বরং সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, প্রতিটি রাতেই আল্লাহপাক নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, কে আছ আল্লাহর কাছে কিছু চাইবে এবং আল্লাহ দিবেন। এমনিভাবে তিনি আহবান জানাতে থাকেন। শবেবরাত সম্পর্কীয় হাদিসগুলো অধিকাংশই দুর্বল। ইমাম বুখারি রহ. ও ইমাম মুসলিম রহ. হাদিসগুলি তাঁদের কিতাবে গ্রহণ করেননি। ফজিলতের হাদিস হিসেবে মেনে নিয়ে বাসায় নিরিবিলি ইবাদত-বন্দেগি করা যেতে পারে। ভাগ্যরজনির সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। মর্যাদায় সর্বোচ্চ রাত হলো লাইলাতুল কদর। বিশেষ বিশেষ রাতে বা মুহূর্তে আল্লাহপাক তাঁর অগণিত বান্দাকে ক্ষমা করেন কিন্তু কয়েক শ্রেণির মানুষকে তিনি তাঁর ক্ষমার বাইরে রাখেন। তন্মধ্যে মুশরিক ও হিংসুককে তিনি ক্ষমা করেন না। হাদিসে বলা হয়েছে আগুন যেমন শুকনা কাঠকে জ্বালিয়ে ভস্ম করে দেয় তেমনি হিংসা মানুষের সকল নেক আমল ধ্বংস করে দেয়। তাই আল্লাহর কাছে কিছু চাইতে হলে আমাদেরকে হিংসা মুক্ত হয়ে চাইতে হবে। ক্ষমা না করা প্রসঙ্গে আরো যাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, তারা হলো মদ্যপ ও পিতামাতার সঙ্গে অসদাচরণকারী।

খতিব মহোদয় বলেন, রহমত ও বরকতে পূর্ণ পবিত্র রমজান আমাদের সামনে। এই মাস আমাদের জন্য আল্লাহ তায়ালার বড় নেয়ামত। রমজানকে বরণ করার জন্য রসুলুল্লাহ সা. ও সাহাবায়ে কেরাম ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। রজব মাস আসলে একটি দোয়া করার কথা শোনা যায়, এটি হাদিস না হলেও রসুলুল্লাহ সা. রমজানকে স্বাগত জানানোর জন্য রজব মাস থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। রজব ও শাবান মাসে অধিক পরিমাণ রোজা রাখতেন। তিনি তাঁর উম্মতদেরকেও উদ্বুদ্ধ করতেন। শারীরিক ও মানসিক উভয়বিধ প্রস্তুতির জন্য তাগিদ দিতেন। শাবান মাসের শেষের দিকে তিনি নিজে রোজা ছেড়ে দিতেন এবং রমজানে রোজা রাখতে যাতে দুর্বলতা না আসে সেজন্য তাঁর উম্মতদেরকে মধ্য শাবান থেকে রোজা রাখতে নিরুৎসাহিত করতেন। কারণ তাঁর বিষয়টি ছিল স্বতন্ত্র।

রমজানের প্রস্তুতি বলতে আমরা বুঝি বেশি বেশি বাজার করা। যার ফলে স্বাভাবিকের তুলনায় রমজানে দ্রব্যমূল্য বাড়ে। এতে মানুষের কষ্ট হয়। অন্তরে আল্লাহর ভয় সৃষ্টির মাধ্যমে সকল গুনাহ থেকে নিজেকে মুক্ত করে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদতে নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে। নিজের মধ্যে যতো রকম আল্লাহর নাফরমানি রয়েছে তা দূর করার উপযুক্ত সময় রমজান মাস। নিজেকে সেভাবেই গড়ে তুলতে হবে। আল্লাহপাক তাঁর বান্দাকে ক্ষমা করতে চান। ক্ষমা পাওয়ার উপযুক্ত সময় পবিত্র রমজান। সেসময়ে শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয় এবং আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদেরকে উদারহস্তে নেকি প্রদান করতে থাকেন। তাই অন্তরে রমজানের কামনা এবং এখন থেকেই বেশি বেশি নেক কাজে আগ্রহী হতে হবে। রমজান মাস পরিশুদ্ধি অর্জনের মাস। পরিশুদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে খতিব মহোদয় সবাইকে সচেষ্ট হওয়ার আহবান জানান।

শ্রুতিলিখন তাৎক্ষণিক সম্ভব হয়নি। অনেক সংক্ষেপিত।