Skip to main content

জুমা বক্তৃতা ১০.০৫.২০১৯



ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে মাহে রমযানের প্রথম জুমায় সম্মানিত খতিব মুফতি সাইফুল ইসলাম আল্লাহপাকের হামদ ও রসুল (সা)-এর ওপর দরুদ পাঠের পর আল্লাহর পক্ষ থেকে সম্মানিত মেহমান রমযানের ফজিলত ও গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন।তিনি একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। গ্রাম এলাকায় আগের দিন মানুষ সারাদিন মাঠে-ঘাটে কর্মব্যস্ত থেকে বিকেলে বাড়ি ফিরে পুকুরে সুগন্ধি সাবান দিয়ে ভালোভাবে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে ফুরফুরে মেজাজে বাজারে যায়। তখন তার শরীরে আর কোন কালিমা থাকে না এবং তার মনটাও হয়ে পড়ে প্রফুল্ল। মাহে রমজান এমনই। এগারোটা মাস সংসারের নানা ঝামেলায় ব্যস্ত থেকে নানাবিধও পাপকর্মে মানুষ জড়িয়ে পড়ে।আল্লাহর মেহমান এ রমযান মাস পেয়ে সে মেহমানের যথাযথ সম্মানের মধ্য দিয়ে গুনাহমুক্ত হয়ে প্রফুল্ল হয়ে পড়ে। রসুল (সা) বলেছেন-যে ঈমান ও এহতেছাবের সাথে রোযা পালন করবে আল্লাহ তার অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। এ যেন সেই সুগন্ধি সাবান যা সব দুর্গন্ধ ও ময়লা-আবর্জনা দূর করে মানুষকে পবিত্র-পরিচ্ছন্ন করে দেয়।

তিনি রসুল (সা)-এর দীর্ঘ হাদিস উল্লেখ করেন। রসুল (সা) একদিন মিম্বরে আরোহন করেন ও আমিন আমিন বলেন। সাহাবায়ে কেরাম তাঁর এই ব্যতিক্রমী আচরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন জিবরাইল (আ) এইমাত্র আমাকে বলে গেলেন-যার সম্মুখে আমার নাম উচ্চারিত হয় অথচ দরুদ পড়েনা সে যেন ধ্বংস হয়, আমি বললাম আমিন; যে তার বৃদ্ধ পিতা-মাতা উভয়কে বা কোন একজনকে পায় অথচ তাদের খেদমত করে জান্নাতে যেতে পারেনা সে যেন ধ্বংস হয়, আমি বললাম আমিন এবং যে রমযান মাস পায় অথচ তার গুনাহ ক্ষমা করে নিতে পারেনা সে যেন ধ্বংস হয়, আমি বললাম আমিন।কত গুরুত্বপূর্ণ কথা। বাবা-মা কত বড় সম্পদ। তারাই আমাদের জান্নাত।
যারা রমযান মাস পেল অথচ গুনাহ মাফ করে নিতে পারলো না, সত্যিই ওরা বড় হতভাগা। এত বড় মহা সম্মানিত মেহমান কোন আদর-যত্ন ছাড়াই আমাদের মাঝ থেকে বিদায় হয়ে যাওয়াটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক।

রোযাদারদের জন্য বড়ই খোশখবর রয়েছে। কিয়ামতের দিন রোযাদাররা হবে আল্লাহর ভিভিআইপি মেহমান। তাদের জন্য জান্নাত সুসজ্জিত করা হচ্ছে এবং এক স্পেশাল দরজা রাইয়ান দিয়ে তাদের প্রবেশ করানো হবে। সর্বোপরি তারা আল্লাহর দীদার লাভে ধন্য হবে।

সূরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ঈমানদারদের ডেকে বলেছেন। তাদের প্রতি রোযা ফরজ করা হয়েছে, যেমনটি করা হয়েছিল তাদের পূর্ববর্তীতের ওপর। আদম (আ) থেকে শুরু নবী-রসুলের ওপর রোযা ফরজ ছিল। সিয়াম অর্থ বিরত থাকা। আল্লাহর নিষিদ্ধ গাছের ধারেকাছে না যাওয়াটাও এক ধরনের সিয়াম।বিভিন্ন নবীর রোযা পালনের বিষয় তিনি উল্লেখ করেন। উদ্দেশ্য একটি তাকওয়া অর্জন। তাকওয়া প্রসঙ্গে হযরত ওমর (রা)-এর ঘটনা তিনি উল্লেখ করে বলেন যে কাঁটাযুক্ত পথে একজন পথিককে যেভাবে সতর্ক চলতে হয়, তাকওয়া তাই। পাপ-পঙ্কিল পরিবেশে হালাল-হারাম বেছে বেছে হারামকে বাদ দিয়ে কেবল হালাল গ্রহণ করাকেই তাকওয়া বলে। রোযা মানুষের মধ্যে সেই তাকওয়ার গুণই সৃষ্টি করে। রোযা রাখার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ এক মাস আল্লাহর হালালকৃত সাময়িক নিষিদ্ধ জিনিষ পরিহার করে সে নিজের মধ্যে শক্তি অর্জন করে যাতে সে আল্লাহর হারামকৃত জিনিষের ধারেকাছেও না ঘেষতে পারে।এই রোযার মধ্য দিয়ে তাকওয়ার গুণ অর্জনে সমর্থ না হলে সেই রোযায় আল্লাহর কোনই প্রয়োজন নেই। তিনি রোযার উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর প্রিয়ভাজন বান্দাহ হওয়ার জন্য তাঁর মুছল্লিদের আহবান জানান। সংক্ষেপিত। 
শ্রুতিলিখনে-প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী

এই বক্তৃতা ও নামায শেষে প্রশ্নোত্তর ভিডিও করা হয় এবং ইউটিউবে পাওয়া যাবে।

Comments