সমালোচনা নয়, প্রশংসা করুন নয়তো চুপ থাকুন
রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে আমাদের মাঝে
হাজির হচ্ছে মাহে রমযানুল মুবারক। আল্লাহপাকের রহমত অজস্রধারায় বর্ষিত হয় রোযাদারদের
প্রতি। আল্লাহ তাঁর বান্দার গুনাহ মাফের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন।বান্দার পক্ষ
থেকে শুধু মাফ চাওয়া দরকার। তাইতো রাসূল (সা.) বলেছেন-‘যে লোক রমযান মাস পেলো অথচ নিজের
গুনাহ মাফ করে নিতে পারলো না, সে বড়ই হতভাগা’। রমযানের রোযাকে অর্থবহ করার জন্য আমি ধারাবাহিকভাবে রোযাদারের
কিছু গুণাবলী আলোচনা করবো ইনশা-আল্লাহ।
মানুষের ত্রুটি-বিচ্যুতির মধ্যে অন্যতম হলো গীবৎ
অর্থাৎ অপরের সমালোচনা করা। অপরের সমালোচনার চেয়ে সহজ, মুখরোচক ও তৃপ্তিকর মনে হয় আর
কিছু নেই। এ সমালোচনা ফেসবুকে, বাসায়, অফিসে, চায়ের দোকানে এমন কি মসজিদেও। এ থেকে
যেন মানুষ মুক্ত নয়। অথচ কাজটি অত্যন্ত ঘৃণ্য ও নিন্দনীয়।মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান
আল্লাহতায়ালার কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। কোন না কোনভাবে তা ক্ষুণ্ণ হোক আল্লাহপাক সেটা
চান না এবং তাতে আল্লাহর চরম ক্রোধ প্রকাশ পায়। তাঁর বাণী-‘নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা
মানুষকে সামনা-সামনি গালাগাল করে ও পেছনে দোষ প্রচার করে’। মানুষকে হেয় করা, ছোট করা,
গালি দেয়া, বকা-ঝকা করা বা এমন কোন আচরণ করা যাতে মানুষ কষ্ট পায়, সবকিছু গুনাহের কাজ।
অসাক্ষাতে নিন্দা করা বা সমালোচনা করা যদিও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মাঝে তা বর্তমান তাই
গীবৎ-যা কুরআনে মরা ভাই-এর গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে এবং হাদিসে যিনা অপেক্ষা
জঘন্য বলা হয়েছে। প্রশ্ন হলো- রোযাবস্থায় কি মানুষের সাথে ঝগড়া-ঝাটি করা বা কারো সমালোচনা
করা যায়-এককথায় জবাব হলো, না। হাদিসে বলা হয়েছে যে, কেউ ঝগড়া করতে চাইলে সে বলবে-‘ভাই, আমি রোযাদার’। জবানের হেফাজতের অভাবে আমরা
অনেক সময় রোযার ফায়দা থেকে বঞ্চিত হই। কেবল পানাহার থেকে বিরত থাকার নাম রোযা নয়, আল্লাহর
সকল প্রকার নিষিদ্ধ কাজ থেকে বিরত থাকার নামই হলো রোযা-যা দীর্ঘ এক মাস রোযা পালনের
মাধ্যমে সেই শিক্ষাই আমাদেরকে দেয়া হয়। তাই মাহে রমযানের পূর্ব দিয়ে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ
হই, আমাদের এই জবান থেকে কেউ যেন সামান্যতমও কষ্ট না পায়। দুই ঠোঁটের মাঝখান ও দুই
রানের মাঝখান (লজ্জাস্থান)-এর হেফাজতের নিশ্চয়তা প্রদান করলে রাসূল (সা.) তাকে জান্নাতের
নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন। আসুন, সমালোচনা নয় মানুষের মধ্যে ভালো যা কিছু আছে তা তুলে
ধরে প্রশংসা করি, একান্ত না পারলে চুপ থাকি। সামান্য অসতর্কতা বা সাময়িক একটু ভালো
লাগা বা নিজের ক্রোধ প্রকাশ করে আমাদের এই কষ্টকর রোযার ফললাভ থেকে যেন আমরা বঞ্চিত
না হই। আল্লাহপাক আমাদেরকে রোযা রাখার তাওফিক দান করুন ও রোযাসমূহ কবুল করুন। আমিন।
২৪/০৫/২০১৭
Comments
Post a Comment