আমাদের বাসার পেছনের গলিতে জনাব নাসির খান, বয়স সত্তরের
কাছাকাছি বাংলাদেশ সচিবালয়ে চাকুরি শেষে অবসর জীবন-যাপন করছিলেন। সম্ভবত পদোন্নতি পেয়ে
সহকারী সচিব পদে অবসর গ্রহণ করেন। নিজস্ব বাড়িতে সপরিবারে বসবাস করছিলেন। তাঁর দুই
মেয়ে ও এক ছেলে। তাঁর স্ত্রী হাসপাতালে ICU-তে। যেহেতু সুস্থতার কোন সম্ভাবনা নেই সেহেতু হাসপাতাল
কর্তৃপক্ষ তাঁর স্ত্রীকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য গতকাল বলেছেন। আজ সকাল ১০টায় বাসায় একাবস্থায় নাসির খান সাহেব আত্মহত্যা
করেছেন। তাঁর পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে এবং তাতে লেখা আছে-‘যেহেতু আমার স্ত্রীর বাঁচার কোন
সম্ভাবনা নেই, তাই আমি আর বেঁচে থাকতে চাই না এবং আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নন’। আমার
সঙ্গে ব্যক্তিগত জানাশোনা ছিল না,তবে শুনলাম তিনি একজন সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি আমার
বেয়াই-এর পরিচিত ছিলেন। তাঁর নিজ জেলা চট্টগ্রাম এবং সেখানে তাঁর স্বজনরা মরদেহ নিয়ে
গেলেন।
জীবনসম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি কত অস্বচ্ছ।সুখ-শান্তি
ও দুঃখ-কষ্ট নিয়েই মানুষের জীবন।ধৈর্য-সহনশীলতার মত মহৎ গুণাবলী সকল প্রতিকূলতাকে সহ্য
করার মত সাহস-হিম্মত দান করে। যারা জীবন-যুদ্ধে হেরে যায় তারাই আত্মহত্যার পথ বেছে
নেয়। আত্মহত্যায় শুধু নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হন
না। তিনি তাঁর পরিবারকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেন। এমতাবস্থায় পরবর্তীতে তাঁর সন্তান-সন্ততি
তাঁকে কখনই ভালোভাবে স্মরণ করবে না।সমাজে আত্মহত্যা প্রবণতা বেশ বেড়ে গেছে।পাশ্চাত্য
বস্তুবাদী দৃষ্টিভঙ্গিই এর পেছনে অনেকাংশে দায়ী। জীবন সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি
হলো দুনিয়া ও আখিরাত মিলেই মানুষের জীবন।আখিরাতে প্রতিদানের আশায় এ দুনিয়ার সকল যন্ত্রণা,
না পাওয়ার ব্যথা-বেদনা, অবহেলা-অনাদর সবকিছু অকাতরে সহ্য করতে পারে। আল্লাহপাক সর্বাবস্থায়
আমাদেরকে পরম ধৈর্য অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। আমিন।২২/০৫/২০১৭
Comments
Post a Comment