Skip to main content

Posts

Showing posts from May, 2017

দারসুল কুরআন সূরা আলাম নাশরাহ

সরল অনুবাদ ‘ হে নবী! আমি কি তোমার বক্ষদেশ তোমার জন্য উন্মুক্ত করে দেইনি। আমি তোমার ওপর থেকে ভারী বোঝা নামিয়ে দিয়েছি, যা তোমার কোমর ভেঙ্গে দিচ্ছিল। আর তোমার জন্য তোমার খ্যাতির কথা বুলন্দ করে দিয়েছি। প্রকৃত কথা এই যে, সংকীর্ণতার সাথে প্রশস্ততাও রয়েছে। আসলে সংকীর্ণতার সাথে আছে প্রশস্ততাও। কাজেই যখনই অবসর পাও ইবাদাতের কঠোর শ্রমে লেগে যাও এবং নিজের রবেরই প্রতি মনোযোগ দাও ’ । নামকরণ : সূরার প্রথম দু ’ টি শব্দকেই নাম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। নাযিলের সময়-কাল : এই সূরাটি মক্কী সূরা এবং নবুয়তের এমন অবস্থায় অবতীর্ণ হয় যখন রাসূল (সা.)-এর বিরোধীতা মাত্র শুরু হয়। বিষয়বস্তুর সাথে সূরা আদ দুহার বেশ মিল রয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন যে, সূরা আলাম নাশরাহ সূরা আদ দুহার পরেই নাযিল হয়। বিষয়বস্তু : রাসূল (সা.)-কে শান্তনা দানই এই সূরার মূল বিষয়বস্তু। মুহাম্মদ (সা.) সুদীর্ঘকাল তাঁর সমাজে বসবাস করেছেন। মানুষের সঙ্গে তাঁর চমৎকার ব্যবহার, লেন-দেনে স্বচ্ছতা, আমানতদারিতা, ওয়াদা-প্রতিশ্রুতি পালনে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা, মানুষের ব্যথায় ব্যথিত হওয়া, পরোপকারি মনোভাব ইত্যাদি সৎ গুণাবলীর কারণে তিনি ...

রমযানের শিক্ষা-২

রোযার মাধ্যমে পরস্পরে সহমর্মিতা ও সহানুভূতি প্রকাশ পায় ধনী-দরিদ্র ও নারী-পুরুষ সবার জন্য (সুস্থ-সবল ও মুকিম হলে) একই সাথে রোযা পালন বাধ্যতামূলক। এই ইবাদতে কাউকে কোন ছাড় দেয়া হয়নি। রোযা পালনের মাধ্যমে ক্ষুধার্ত হওয়ার কষ্ট সবাই সমভাবে অনুভব করে। এটা বক্তৃতা দিয়ে বোঝানো নয় বরং বাস্তব অনুশীলনের মাধ্যমে সবাই উপলব্ধি করেন। ক্ষুধার্তকে খাদ্যদান, অসুস্থকে সেবাদান আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে মানুষকে প্রদানের মাধ্যমে মূলত আল্লাহকেই দেয়া হয়। স্কুলজীবনে কবিতা পড়েছিলাম-হাশরের দিনে বিচারে বসিয়া সুধাবে জগৎস্বামী, তুমি মোরে কর নাই সেবা যবে রুগ্ন যে ছিলাম আমি----। এটা স্রেফ কবিতা নয়, হাদিসের বাণী। আল্লাহ এ বিশ্বজাহানের রব (লালনপালকারী/প্রতিপালক)। মানুষ তাঁরই প্রতিনিধি হিসেবে এ দায়িত্ব পালন করে মূলত আল্লাহর কাজই করে দেয়। তাই তারা আল্লাহর এত প্রিয়ভাজন। রোযা ফরয হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে ছাড় দিয়ে বলা হয়েছিল-সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কেউ যদি রোযা না রাখে তাহলে সে যেন ফিদিয়া দেয় এবং এক রোযার ফিদিয়া হলো একজন মিসকিনকে খাওয়ার খাওয়ানো। পরবর্তীতে এই সুবিধা রোধ করে দেয়া হলেও চিররুগ্ন, অতি বার্ধক্য যাদের পক্ষ...

রমযানের শিক্ষা-১

সমালোচনা নয়, প্রশংসা করুন নয়তো চুপ থাকুন রহমত, মাগফেরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হচ্ছে মাহে রমযানুল মুবারক। আল্লাহপাকের রহমত অজস্রধারায় বর্ষিত হয় রোযাদারদের প্রতি। আল্লাহ তাঁর বান্দার গুনাহ মাফের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন।বান্দার পক্ষ থেকে শুধু মাফ চাওয়া দরকার। তাইতো রাসূল (সা.) বলেছেন- ‘ যে লোক রমযান মাস পেলো অথচ নিজের গুনাহ মাফ করে নিতে পারলো না, সে বড়ই হতভাগা ’ । রমযানের রোযাকে অর্থবহ করার জন্য আমি ধারাবাহিকভাবে রোযাদারের কিছু গুণাবলী আলোচনা করবো ইনশা-আল্লাহ। মানুষের ত্রুটি-বিচ্যুতির মধ্যে অন্যতম হলো গীবৎ অর্থাৎ অপরের সমালোচনা করা। অপরের সমালোচনার চেয়ে সহজ, মুখরোচক ও তৃপ্তিকর মনে হয় আর কিছু নেই। এ সমালোচনা ফেসবুকে, বাসায়, অফিসে, চায়ের দোকানে এমন কি মসজিদেও। এ থেকে যেন মানুষ মুক্ত নয়। অথচ কাজটি অত্যন্ত ঘৃণ্য ও নিন্দনীয়।মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান আল্লাহতায়ালার কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। কোন না কোনভাবে তা ক্ষুণ্ণ হোক আল্লাহপাক সেটা চান না এবং তাতে আল্লাহর চরম ক্রোধ প্রকাশ পায়। তাঁর বাণী- ‘ নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা মানুষকে সামনা-সামনি গালাগাল করে ...

একটি দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যু

  আমাদের বাসার পেছনের গলিতে জনাব নাসির খান, বয়স সত্তরের কাছাকাছি বাংলাদেশ সচিবালয়ে চাকুরি শেষে অবসর জীবন-যাপন করছিলেন। সম্ভবত পদোন্নতি পেয়ে সহকারী সচিব পদে অবসর গ্রহণ করেন। নিজস্ব বাড়িতে সপরিবারে বসবাস করছিলেন। তাঁর দুই মেয়ে ও এক ছেলে। তাঁর স্ত্রী হাসপাতালে ICU -তে। যেহেতু সুস্থতার কোন সম্ভাবনা নেই সেহেতু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর স্ত্রীকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য গতকাল বলেছেন। আজ   সকাল ১০টায় বাসায় একাবস্থায় নাসির খান সাহেব আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে এবং তাতে লেখা আছে- ‘ যেহেতু আমার স্ত্রীর বাঁচার কোন সম্ভাবনা নেই, তাই আমি আর বেঁচে থাকতে চাই না এবং আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নন ’ । আমার সঙ্গে ব্যক্তিগত জানাশোনা ছিল না,তবে শুনলাম তিনি একজন সজ্জন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি আমার বেয়াই-এর পরিচিত ছিলেন। তাঁর নিজ জেলা চট্টগ্রাম এবং সেখানে তাঁর স্বজনরা মরদেহ নিয়ে গেলেন। জীবনসম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি কত অস্বচ্ছ।সুখ-শান্তি ও দুঃখ-কষ্ট নিয়েই মানুষের জীবন।ধৈর্য-সহনশীলতার মত মহৎ গুণাবলী সকল প্রতিকূলতাকে সহ্য করার মত সাহস-হিম্মত দান করে। যারা জীবন-যুদ্ধে হেরে য...

জু’মা বক্তৃতা

১২/০৫/২০১৭ কাটাবন জামে মসজিদের সম্মানিত খতিব মাওলানা আনম রফিকুর রহমান আল মাদানী রমযানের প্রাক্কালে সূরা বাকার ১৮৫ নং আয়াত তেলাওয়াত ও সরল অর্থ পেশ করে জুমুয়ার খুতবা প্রদান করেন। ‘ রমযান মাস, এ মাসেই কুরআন নাজিল হয়েছে, যা মানব জাতির জন্য পুরোপুরি হেদায়াত এবং এমন দ্ব্যর্থহীন উপদেশাবলীতে পূর্ণ যা সত্য-সঠিক পথ দেখায় এবং হক ও বাতিলের মধ্যে পার্থক্য সুস্পষ্ট করে দেয়। কাজেই এখন থেকে যারাই এ মাসের সম্মুখিন হবে তাদের একান্ত কর্তব্য পূর্ণ মাস রোযা রাখা, তবে যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে কিংবা সফরে থাকে, তবে সে পরবর্তী সময়ে সেই সংখ্যা পূরণ করে দেবে; (এ সুযোগ দিয়ে) আল্লাহতায়ালা তোমাদের জীবন আসান করে দিতে চান, আল্লাহতায়ালা কখনই তোমাদের জীবন কঠোর করে দিতে চান না। আল্লাহর উদ্দেশ্য হচ্ছে, তোমরা যেন গুণে গুণে রোযার সংখ্যাগুলো পূরণ করতে পারো, আল্লাহতায়ালা তোমাদের (কুরআনের মাধ্যমে জীবন যাপনের) যে পদ্ধতি শিখিয়েছেন তার জন্যে তোমরা তাঁর মাহাত্ম্য বর্ণনা করতে পারো এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারো ’ -সূরা বাকারা ১৮৫। তিনি বলেন যে, রমযান মাসের এত ফজিলত ও গুরুত্বের পেছনে কারণ একটিই, আর তাহলো মানুষের হেদায়াতের...