Skip to main content

ফেসবুকের পাতা থেকে



ধৈর্যশীলরাই সফল হন

পৃথিবীটা বড় সংঘাতময়। নিরবিচ্ছিন্ন সুখ বা দুঃখ বলে কিছু নেই। পৃথিবীর বয়স ঠিক কত বা আরো কত দিন টিকবে তা আমরা জানি না। তবে আমরা বিশ্বাসীরা জানি যে, একদিন এ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে এবং এরপরে যে জীবন তা স্থায়ী, যার শেষ নেই। এই পৃথিবীতে ব্যক্তি হিসেবে আমাদের অবস্থান খুবই সংক্ষিপ্ত এবং আখিরাতের বিবেচনায় তা কোনভাবেই তুলনীয় নয়। বুদ্ধিমান তারাই যারা আখিরাতকে ধ্বংস না করে এ দুনিয়ার জীবনটা পরিচালনা করে। যদিও আখিরাতকে প্রাধান্য দিতে হবে তবে দুনিয়াটাকে উপেক্ষা করার মত নয়। এ পৃথিবী একটি শষ্যক্ষেত। এখান থেকেই অর্জন করে নিতে হয়। নিজেকে দুনিয়ায় একজন সফল ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য চেষ্টা-প্রচেষ্টায় ত্রুটি করার কোন সুযোগ নেই। এটাও ইবাদত। ইসলামে দ্বীনদারী ও দুনিয়াদারী বলে কিছু নেই। নামায-রোযার মত ইবাদতও যদি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা উদ্দেশ্য না হয়, তাহলে তা দুনিয়াদারী। লেখাপড়া, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকুরী সবই দ্বীনদারী যদি সেখানে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তাঁর হুকুম মেনে চলা হয়। নিজের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখাটাও ইবাদত, কারণ সম্পর্ক বজায় রাখা আল্লাহরই নির্দেশ। পৃথিবীটা বড় বিচিত্র। দেখা যায় যাদেরকে আপন ভাবা হয়, তাদের কাছ থেকে সব সময় সদাচরণ পাওয়া যায় না। এ সব ক্ষেত্রে ধৈর্যাবলম্বের কোন বিকল্প নেই। আল্লাহপাক সুধারণা পোষণের নির্দেশ প্রদান করেছেন। অহেতুক সন্দেহ-সংশয় পোষণ এবং অপরের ত্রুটি-বিচ্যুতি উপেক্ষা করার মত হৃদয়াবৃত্তির অভাবে অনেক সময় সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ সব ব্যাপারে আল্লাহতায়ালার বক্তব্য-যে স্বীয় মনের সংকীর্ণতা থেকে নিজেকে রক্ষা করলো সেই প্রকৃত কল্যাণ লাভ করলো। আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের মধ্যে উদারতা-প্রশস্ততা দেখতে চান। এই উদারতা-প্রশস্ততার অধিকারী তারাই হতে পারে যারা মানুষের ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করতে পারে এবং কেউ সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইলেও যারা সম্পর্ক জুড়ে দিতে পারে। এমন গুণ তারাই লাভ করতে পারে যারা অতীবও ধৈর্যশীল এবং তারাই সাফল্য লাভ করে। আল্লাহর নিজের কথা-আল্লাহ নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন। আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী বান্দারা সর্বাবস্থায় পরম ধৈর্যাবলম্বন করে। পরোয়ারদেগার ! তুমি আমাদেরকে তোমার ধৈর্যশীল বান্দাহ হিসেবে কবুল করে নাও। আমিন। ১৭/০২/২০১৭


বিশ্বাসীদের পরাজয় নেই
এই পৃথিবীতে মানুষ প্রতিনিয়ত পরীক্ষার মুখোমুখি হচ্ছে। কিন্তু সবাই পরীক্ষা মনে না করে নিজের উপর বিপদ ভেবে আল্লাহকে দোষারোপ করে ও হতাশ হয়ে পড়ে।রোগ-শোক, বিপদ-মুছিবত মানুষের জীবনের নিত্যসঙ্গী।বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সবার জীবনেই আসে। রসূল (সা.)-এর বর্ণনা মোতাবেক সুখ-দুখ দুটোই মুমিনের জন্য কল্যাণকর। যখন বিপদ-মুছিবত আসে তখন সে ধৈর্যাবলম্বন করে এবং এর বিনিময়ে আল্লাহ তার পাপরাশি মাফ করে দেন ও মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। পক্ষান্তরে স্বচ্ছলতা বা কল্যাণকর কোন কিছু আসলে সে শুকরিয়া আদায় করে এবং তাতেও আল্লাহপাক তার মর্যাদা আরো বাড়িয়ে দেন।
বিপরিত দিকে অবিশ্বাসীদের জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ, নেতৃত্ব-কর্তৃত্ব আসলে তারা নিজেদের অর্জন বলে মনে করে এবং অহঙ্কারী হয়ে আল্লাহর বান্দাদের প্রতি জুলুম-নির্যাতন করে।পক্ষান্তরে বিপদাপদ আসলে ভড়কে যায়, হিম্মতহারা হয়ে যায় এবং হতাশায় আত্মহত্যা পর্যন্ত করে বসে।
আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর মুমিন বান্দার ধৈর্য দান করুন।১৮/০২/২০১৭


বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীর মাঝে আচরণগত পার্থক্য
আল্লাহপাক তাঁর অসখ্য নেয়ামতেভরা জান্নাতের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন এমন লোকদের জন্য যারা ঈমান এনেছে ও সাথে সাথে নেক আমল করেছে। আরো অনেক গুণের কথা বলা হলেও ঈমান ও নেক আমলে সমৃদ্ধ আল্লাহর বান্দারা আশা করতে পারে তাঁর রবের ক্ষমা ও জান্নাত। নেক আমলের মাঝে মানুষের সঙ্গে সদাচরণ একটি বড় গুণ। বিশ্বাসীরা হয় নম্র-ভদ্র-বিনয়ী সবক্ষেত্রে (সাক্ষাতে-অসাক্ষাতে-ফেসবুকে ও হাসি-ঠাট্টাচ্ছলেও) এবং সবার জন্যে (পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, প্রতিবেশি এবং সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষের সাথে)। আল্লাহর বাণী-নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা মানুষকে সামনা-সামনি গালাগাল ও পেছনে দোষ প্রচার করে। এতে বোঝা যায়. গোপনে ও প্রকাশ্যে বা ইশারা-ইংগিতে এমন কোন কথা বলা বা আচরণ করা যাবে না যাতে আল্লাহর কোন বান্দা কষ্ট পায়। এই মন্দ আচরণই তার ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট। আমরা ফেসবুকে অনেক বাজে মন্তব্য দেখি। এর পেছনে কোন যুক্তি নেই। আসলে মনের সংকীর্ণতা ও আখিরাতে বিশ্বাসের দুর্বলতা বৈ আর কোন কারণ নেই।
আল্লাহর একজন অবিশ্বাসী বান্দা সাধারণত হয় কর্কশভাষী ও রূঢ় স্বভাবের। তার কাছে মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মান কখনই নিরাপদ নয়। মানুষ সব সময় তাদের থেকে দূরে থাকতে চায়। তারা অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করে এবং মানুষকে অপমান করে আনন্দ পায়। আসলে শয়তানকে প্রভূ হিসেবে গ্রহণ করায় তাদের মধ্যে একটি কুৎসিত চরিত্র সৃষ্টি হয়। তাদের কথাবার্তা, আচার-আচরণ ও লেখনির মধ্যে সবসময় হিংসা-বিদ্বেষভাব থাকে এবং তারা সমাজের মানুষের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিতে চায়। তাদের সমালোচনার ভাষাও হয় আক্রমণাত্মক। সামনা-সামনি ও পেছনে বা ফেসবুকে সর্বত্রই তাদের একই আচরণ লক্ষণীয়।
বিশ্বাসী বান্দা ক্ষমা করার মধ্যে আনন্দ খুঁজে, কারণ সে জানে আল্লাহর বান্দাকে ক্ষমা করা হলে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকে ক্ষমা করবেন। পক্ষান্তরে একজন অবিশ্বাসী প্রতিশোধ গ্রহণের মাঝে আনন্দ খুঁজে, কারণ সে তো আর পরকালে বিশ্বাসী না। সে মনে করে প্রতিশোধ নিতে ব্যর্থ হলে সে হেরে যাবে। ১৮/০২/২০১৭

Comments