ঢাকায় আসার পর চিকিৎসা নিয়েছি পিজি
হাসপাতাল, ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল, ডা. সাইফুদ্দৌলা ও ড. সালেহ আহমদ এবং বেশির
ভাগ সময় ফোনে কামালের কাছ থেকে। কোন সময় নামমাত্র মূল্যে বা কোন সময়ে একবারে ফ্রি।
আর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি পিজি হাসপাতাল, ইবনে সিনা, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও
চিড়িয়াখানার সামনে মোবাইল ডায়াগোনস্টিক সেন্টারে। এ সব জায়গাতেও বেশ সাশ্রয়ী
মূল্যে সেবা পেয়েছি। অনেক নাম-ডাক শুনে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ১৩/০২/২০১৭ তারিখ
তাসিফার নানীকে সাথে নিয়ে গেলাম পপুলার হাসপাতালে ডা. মনিরুজ্জামানের কাছে।
তাসিফার নানীর হাঁটু ও গোড়ালিতে ব্যথা। ডাক্তার সাহেব ঢাকা মেডিকেল কলেজের
ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। বয়স মাত্র ৩৯ বছর (১৯৯৩ সনে এসএসসি),
এফসিপিএসসহ দেশী-বিদেশী অনেক ডিগ্রি। CRP- সহ অতীতের সব রিপোর্ট দেখালাম (কিছু
টেস্ট ৪/৫ মাস পূর্বের)। তারপরও অনেকগুলো টেস্ট দিয়ে বললেন এ সব টেস্টে পয়সা বেশি
লাগবে না এবং ২০% ডিসকাউন্ট করে দিলাম। কাউন্টারে গেলে হিসেব করে বললো
৫,০০০/-টাকা। ভাবলাম এমনই বোধ হয় হবে। বাসায় এসে দেখলাম পিজিতে আমি ৩/৪ মাস পূর্বে
Creatinine-টেস্ট করেছিলাম মাত্র ৭০/-সেখানে পপুলারে ৪০০/- Uric acid করেছিলাম
মাত্র ১০০/-টাকা সেখানে পপুলারে ৪০০/-টাকা। TSH আমাদের আতিককে নিয়মিত করা হয় মাত্র
৩০০/-টাকায়, সেখানে পপুলারে ৭০০/-টাকা। গতকাল ডাক্তার নিজে হাঁটু ও গোড়ালি
আলট্রাসনো করলেন ৪,০০০/-টাকায় ২০% ডিসকাউন্টে ৩,২০০/-টাকায়। ডাক্তারের ফি ৭০০/-টাকা
এবং প্রথম দিন প্রেসক্রিপসন না করে গতকাল রিপোর্ট দেখে আরো ৩০০/- ফি নেয়ার পর
ব্যবস্থাপত্র লিখে দিলেন (৬ প্রকারের ঔষধ), থেরাপি নেয়ার পরামর্শ এবং Knee brace
বাম হাঁটুতে লাগাতে বললেন যার দাম ২৩০০/-টাকা। আরো কিছু টেস্ট দিলে আমি পিজিতে
করার কথা বললাম এবং সাথে দুই হাসপাতালের ব্যয়পার্থক্যও তুলে ধরলাম। আপত্তি না করে
সরকারি বেসরকারি এবং সময় বাঁচানোর বিষয়টা তুলে ধরলেন। আবার যা টেস্ট দিয়েছেন তাতে
পপুলারে ব্যয় হবে ২৪০০/-টাকা এবং আমার ধারণা পিজিতে এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৮০০/-টাকার
বেশি নয়। তবে আমার ধারণা পিজিতে করলে আগামীতে আর টেস্ট নাও দিতে পারেন। শুধু কি
এতটুক? আসল পরামর্শ হলো হাঁটুতে এক সপ্তাহ অন্তর অন্তর তিনবার বিশেষ চিকিৎসা নিতে
হবে যাতে প্রতিবারে ব্যয় হবে ১৩,০০০/-টাকা। তবে এটা কম এবং আরো বেশি ব্যয়েও হয়।
ঔষধপত্র কেনার পূর্বেই ফি ও প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ব্যয় হলো ৮,২০০/-(যাতায়াত
খরচ, দীর্ঘ অপেক্ষা ও যানজটে আটকে থাকার কষ্ট বাদে)। পরবর্তী যাওয়ার দিন ৪/৩/২০১৭।
কয়দিনের ঔষধ খেয়ে আর একবার সেখানে যেতে পারি। কিন্তু তাঁর পরের চিকিৎসা নেয়ার
ইচ্ছা নেই।
এতে আমার লাভ হলো নামী-দামী হাসপাতালে
সেবা ও এ সব প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারদের মন-মানসিকতা প্রত্যক্ষভাবে জানার এক দুর্লভ
অভিজ্ঞতা। আর তাসিফার নানী ইউটিউবে ব্যথা বিষয়ে অনেক ভিডিও শুনছে। সে নিজেই
মোহাম্মদপুরে DPRC নামে এক হাসপাতালের সন্ধান পেয়েছে এবং প্রফেসর ড. শহীদুল্লাহ
প্রধানের বক্তৃতায় সে অনেকখানি অনুপ্রাণিত। ব্যথার নাকি মনস্তাত্বিক কারণই বেশি।
উনার চিকিৎসা হলো ফিজিওথেরাপি ও মনস্তাত্তিক। অন্যরাও যাতে সতর্ক হতে পারেন সে
জন্যই আমার এই পোস্ট। ১৭/০২/২০১৭
Comments
Post a Comment