সূরা আদ দুহা
বিসমিল্লাহির
রহমানির রহীম
‘‘শপথ আলোকোজ্জ্বল
মধ্য দিনের, শপথ রাতের (অন্ধকারের), যখন তা (চারদিকে) ছেয়ে যায়। তোমার মালিক (ওহীর
সাময়িক বিরতিতে) তোমাকে পরিত্যাগ করে চলে যাননি এবং তিনি তোমার ওপর অসন্তুষ্টও হননি।
অবশ্যই
তোমার পরবর্তীকাল আগের চেয়ে উত্তম। অল্পদিনের মধ্যেই তোমার মালিক তোমাকে (এমন কিছু)
দেবেন যে, তুমি (এতে) খুশি হয়ে যাবে। তিনি কি তোমাকে ইয়াতিম অবস্থায় পাননি? অতঃপর তোমাকে
আশ্রয় দিয়েছেন।
তিনি
কি তোমাকে (এমন অবস্থায়) পাননি যে, তুমি (সঠিক পথের সন্ধানে) বিব্রত ছিলে? অতঃপর তিনি
তোমাকে সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন। অতএব তুমি কখনো ইয়াতিমদের ওপর জুলুম করো না। কোনো
প্রার্থীকে কখনো ধমক দিয়ো না। তুমি তোমার মালিকের অনুগ্রহসমূহ বর্ণনা করে যাও।’’
নামকরণ
: প্রথম শব্দকেই নাম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
নাযিলের
সময়কাল : মক্কী সূরা এবং নবুয়তের একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় অবতীর্ণ। রাসূল (সা)-এর
ওপর ওহী অবতরণ ছিল বেশ কষ্টকর এবং সে সময়ে তিনি ঘর্মাক্ত হয়ে পড়তেন। তাই ওহী অবতরণে
বিরতি প্রয়োজন হয়ে দেখা দিয়েছিল।
এই
বিরতির পেছনে উদ্দেশ্য ছিল রাসূল (সা)-কে স্বস্তিদান ও ওহীর ভার বহনে অভ্যস্ত করে তোলা
এবং আস্তে আস্তে তা সহনীয় পড়ছিল। হঠাৎ করে
বিরতির ফলে তিনি বেশ পেরেশান হয়ে পড়েছিলেন। এই সূরাটির পরপরই সূরা আলাম নাশরাহ অবতীর্ণ
হয় এবং দু’টি সূরার বিষয়বস্তুও একই।
বিষয়বস্তু
: রাসূল (সা)-কে শান্তনা দানই এই সূরার মূল বিষয়বস্তু। ওহী নাযিল হওয়ার ক্ষেত্রে বিরতিতে
রাসূল (সা.) নিজে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন, না জানি তাঁর কোন ভুল হয়ে গেছে যাতে আল্লাহপাক
তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট হয়েছেন। যদিও ওহীর অবতরণ তাঁর স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ছিল। তারপরও
আল্লাহর বাণী প্রাপ্ত হওয়ার মধ্যে এক আনন্দও ছিল। তাই যখনই কোন সূরা বা অংশবিশেষ নাযিল
হত সাথে সাথে তিনি মানুষের কাছে তা পেশ করতেন।
কিছুদিন
ওহী নাযিল না হওয়ার ফলে কাফির-মুশরিকরা রাসূল (সা.)-এর বিরুদ্ধে নানা ধরনের কথাবার্তা
বলা শুরু করে এবং বলে যে, মুহাম্মদ যে উৎস হতে বাণী পাচ্ছিল তা বন্ধ হয়ে গেছে বা তাকে
সে ত্যাগ করেছে।
রাসূল
(সা)-এর চাচী উম্মে জামিল (যার বাড়ি তাঁর বাড়ির সাথে লাগোয়া ছিল) একদিন বলে যে, শয়তানের
কাছ থেকে সে যা পাচ্ছিল, এখন না পাওয়ায় বোঝা যায়, সে তাকে ছেড়ে চলে গেছে। ইসলামের দুশমনদের
এ সব কথাবার্তায় রাসূল (সা) বেশ কষ্ট পান।
এমতাবস্থায়
রাসূল (সা.)-কে শান্তনা দানের লক্ষ্যেই এই সূরাটি অবতীর্ণ হয়। আল্লাহতায়ালার সকল অনুগ্রহ
স্মরণ করে দিয়ে বলা হয়েছে যে, তাঁকে কখনই পরিত্যাগ করা হয়নি বা অসন্তুষ্টও হননি এবং
তাঁর পরবর্তী অবস্থা পূর্ববর্তী অবস্থা থেকে ভালো হবে।
ব্যাখ্যা
: আল্লাহপাক তাঁর বক্তব্য পেশের শুরুতে দিন ও রাতের শপথ করেছেন। এখানে দিন বলতে মধ্যদিন
বা আলোকোজ্জ্বল দিন এবং রাত যখন গভীর হয় সেই সময়ের সেই সময়ের কথা। আল্লাহতায়ালা তাঁর
সৃষ্টির কসম খান তিনি যা বলতে চান তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ও শ্রোতৃমন্ডলি যাতে তার
গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে সেজন্য।
দিন
ও রাতের আবর্তন আল্লাহর একটি হেকমত এবং দিনের প্রখর আলোয় ক্লান্ত-শ্রান্ত মানুষ রাতের
মাঝে প্রশান্তি লাভ করে। ওহী অবতরণের বিরতি নবী মুহাম্মদ (সা)-কে ওহীর ভার বহনে সমর্থ
ও প্রশান্তি দানই কেবল উদ্দেশ্য এবং এই বিরতি তাঁকে ছেড়ে চলে যাওয়া বা তাঁর প্রতি অসন্তুষ্ট
হওয়া কোনটিই নয়।
তাঁর
জাতির লোকদের বিরোধীতার মূলে সাহস ও শক্তি যুগিয়েছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা বাণী। সেটা
বন্ধ হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে তাঁর প্রচন্ড পেরেশানীর মাঝে আল্লাহর পক্ষ থেকে স্পষ্ট
ঘোষণা (তোমাকে ছেড়ে যাননি বা অসন্তুষ্ট হননি) তাঁর মনে পরম প্রশান্তি এনে দেয়। এরপরে
আল্লাহতায়ালা তাঁর প্রতি প্রদত্ত অনুগ্রহসমূহ স্মরণ করিয়ে দেন।
খুবই
স্বল্পসংখ্যক সঙ্গি-সাথী নিয়ে রাসূল (সা) আরবের কাফির-মুশরিকদের বিরোধীতার মোকাবেলা
করছিলেন। তাঁর ও তাঁর সাথীদের বিরুদ্ধে হাজারো অপপ্রচার, নিন্দাবাদ ও জুলুম-নির্যাতনে
যে সময়ে স্বস্তি বা বিজয়লাভের কোন সম্ভাবনাই দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল না। সে সময়ে আল্লাহর
পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, এ অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হবে না এবং শীঘ্রই আল্লাহর পক্ষ থেকে
এমন কিছু দেয়া হবে যাতে তিনি খুশি হয়ে যাবেন।
হ্যাঁ,
নিপীড়ন-নির্যাতনের সাথে সাথে খুব দ্রুত অবস্থার পরিবর্তনও হচ্ছিল। কাফিরদের অপপ্রচারই
রাসূল (সা)-এর পক্ষে প্রচারের কাজ করছিল এবং প্রায় প্রতিটি পরিবার থেকে অপেক্ষাকৃত
উত্তম চরিত্রের লোকেরা তাঁর সাথে যোগ দিচ্ছিলেন। অল্প কিছুদিন পর মদীনার দুই প্রভাবশালী
আওজ ও খাজরাজ গোত্রের ইসলাম গ্রহণের ফলে মদীনায় এক অনকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এরপর
হিজরত করে সেখানে যাওয়ার পর একটি সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে ইসলামের এক নতুন যুগের সূচনা
হয়। কয়েকটি যুদ্ধ এবং ৮ম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের মধ্য দিয়ে সমগ্র আরবে ইসলাম এক বিজয়ী
শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। আল্লাহর পক্ষ ওয়াদা (অল্পদিনের মধ্যে এমন কিছু দেয়া হবে
যাতে তুমি খুশি হয়ে যাবে) রাসূল (সা)-এর জীবনে সত্য হয়ে দেখা দেয়।
রাসূল
(সা)-এর সময়কালে তাঁর শাসন পারস্য ও রোম সাম্রাজ্যের সীমানা পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে
এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলে দুই পরাশক্তি ইসলামের সাথে সংঘর্ষে এসে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।
রাসূল (সা) বলেন যে, পরবর্তীতে ইসলামের শাসনাধীন যে সব এলাকা আসবে সেগুলো তাঁকে দেখানো
হয়েছে। কুরআনের ভবিষ্যৎ বাণী অল্প দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন হয়।
এ
ছাড়া পরকালে হাউজে কাউছার লাভসহ সকল সুখ-শান্তি কেবল নবী-রাসূল ও ঈমানদার লোকদেরই প্রাপ্য
হবে। সেখানে কাফিরদের কোন অংশ থাকবে না। এ ঘোষণাও এর মাঝে রয়েছে।
আল্লাহ
তায়ালা রাসূল (সা)-এর ওপর তাঁর অনুগ্রহের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি জন্মের পূর্বেই
পিতাকে হারান ও ৬ষ্ঠ বছর বয়সে মাতাকে হারিয়ে সম্পূর্ণ ইয়াতিম হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় তাঁর
দাদা অত্যন্ত যত্নের সাথে তাঁকে লালন-পালন করেন এবং তিনি গর্ব করে বলতেন যে, তাঁর নাতি
জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে ও প্রশংসনীয় হবে।
দাদার
ইন্তেকালের পরে চাচা আবু তালিব পিতার মত স্নেহ ও দরদ দিয়ে ভাতিজাকে প্রতিপালন করেন
এবং মুহাম্মদ (সা)-এর নবুয়াত লাভের পর সকল বাধা-বিপত্তির মোকাবেলায় ঢাল হিসেবে দায়িত্ব
পালন করেন। এ সকল ব্যবস্থাপনা আল্লাহরই অনুগ্রহ যেমনটি তিনি হযরত মুসা (আ)-এর প্রতি
করেছিলেন ফিরাউনের ঘরে তাঁরই মায়ের কোলে (সূরা ত্বহা ৩৭-৪১) লালন-পালনের মাধ্যমে।
ইয়াতিম
হওয়ার কারণে তিনি পৈত্রিক সূত্রে উল্লেখ করার মত একটি দাসী ও একটি উট ছাড়া কিছুই লাভ
করেননি। অথচ আল্লাহতায়ালা বিশেষ ব্যবস্থাপনায় খাদিজা (রা)-এর ব্যবসায়ে অংশীদারিত্ব
এবং পরবর্তিতে তাঁর সাথে বিয়ের মাধ্যমে তাঁর জীবনে স্বচ্ছলতা দিয়ে দেন। যদিও তিনি তাঁর
ধন-সম্পদ ভোগ-বিলাসে ব্যবহার না করে দ্বীনের প্রচার-প্রসার ও দরিদ্রদের কল্যাণে ব্যয়
করেন।
সমাজের
পাপ-পঙ্কিল অবস্থা ও জুলুম-নির্যাতন তাঁকে ব্যথিত করছিলো। কিন্তু এ থেকে পরিত্রাণের
কোন উপায় তাঁর জানা ছিল না। যদিও সেই সমাজে তিনি ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী।
কিন্তু
তিনি তাঁর ব্যক্তিসত্তা দিয়ে সমাজ সংশোধনের কোন ব্যবস্থা করতে পারেননি। তিনি পথ অনভিজ্ঞ
ছিলেন এবং নবুয়াতের মাধ্যমে তাঁকে পথের দিশা দান করা হয়। সে সময়ে আল্লাহপাকের নির্দেশনা
মোতাবেক সমাজ সংশোধনে তিনি সচেষ্ট হন।
আল্লাহর
দেয়া অনুগ্রহের কথা স্মরণ করে দিয়ে ইয়াতিমের সাথে জুলুম না করে সদ্ব্যবহারের জন্য তাগিদ
দেয়া হয়েছে। রাসূল (সা) ইয়াতিম-মিসকিন ও অসহায়দের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত দরদী। তিনি নিজে
যেমন তাদের সাথে সদাচরণ করেছেন সাথে সাথে তাঁর উম্মতরা যাতে সদাচরণ করেন সেজন্য তাগিদও
দিয়েছেন।
তিনি
বলেছেন-‘যে ঘরে ইয়াতিম
বাস করে এবং তার সাথে সদাচরণ করা হয় সেই ঘরের মালিক ও আমি জান্নাতে একত্রে বসবাস করবো’। কত বড় সুসংবাদ
শোনানো হয়েছে। ইয়াতিমের সাথে দুর্ব্যবহারকারীকে আল্লাপাক আখিরাতে অবিশ্বাসী বলে আখ্যায়িত
করেছেন। ‘তুমি কি তাকে
দেখেছ, যে কিয়ামতের বদলাকে মিথ্যা মনে করে? সে তো সেই লোক যে ইয়াতিমকে গলাধাক্কা দেয়’-সূরা মাউন।
প্রার্থীকে
ধমক দেয়া দু’টি অর্থ বহন করে। এক. কোন সাহায্যপ্রার্থী আসলে সাহায্য
করতে হবে এবং সম্ভব না হলে তার সঙ্গে রূঢ় আচরণ করা যাবে না। সূরা বণি ইসরাইলে বলা হয়েছে
কেউ সাহায্য চাইলে দিতে অসমর্থ হলে তাকে বিনয়সূচক জবাব দাও। আল্লাহর ভাষায়-‘তোমাদের ধন-সম্পদে
প্রার্থী ও বঞ্চিতদের হক রয়েছে’-সূরা আয-যারিয়াত।
সমাজের
অসহায়-দুস্থ মানুষের প্রতি সদাচরণ করার তাগিদ আল্লাহর পক্ষ থেকে করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত.
কোন মানুষ দ্বীনের কোন বিষয়ে জানতে চাইলে সে যেভাবেই প্রশ্ন করুক তাতে বিরক্ত হওয়া
যাবে না বা তার সাথে ধমকের সূরে কথা বলা যাবে না। এ সব আচরণ নবী (সা)-এর মাধ্যমে তাঁকেসহ
তাঁর সকল উম্মতকে প্রদান করা হয়েছে।
অনুগ্রহপ্রাপ্ত
ব্যক্তিকে অনুগ্রহকারীর প্রতি শুকরিয়া বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের তাগিদ দেয়া হয়েছে। মুহাম্মদ
(সা)-এর প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহের কোন সীমা-পরিসীমা নেই। সকল প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে
তাঁকে ক্রমান্বয়ে এগিয়ে নেয়া এবং মাত্র ২৩ বছরের নবুয়াতী জিন্দেগীর মাধ্যমে পৃথিবীতে
এক বিষ্ময়কর পরিবর্তন সাধন-সবই তাঁর প্রতি মহান আল্লাহতায়ালার বিরাট অনুগ্রহ।
সূরা
নছরে বলা হয়েছে, নবীর মাধ্যমে দ্বীনের যে বিজয় তা একান্ত আল্লাহর সাহায্যের ফলশ্রুতি।
সেখানেও তাঁকে বেশি বেশি করে আল্লাহর তাছবিহ পাঠের জন্য বলা হয়েছে। কেউ কারো উপকার
করলে তা মুখে স্বীকার করা এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা একান্ত প্রয়োজন। আমাদের প্রতি
আল্লাহর দয়া অনুগ্রহ গুণে শেষ করা যাবে না। রাসূল (সা)-এর প্রতি আল্লাহর সকল অনুগ্রহ
তাঁর কাজের মাধ্যমে তিনি প্রকাশ করেছেন।
ইয়াতিম
মিসকিনের সাথে সর্বোত্তম ব্যবহার ও সাহায্যপ্রার্থীকে উদারভাবে সাহায্য করা এবং দ্বীনের
একজন দ্বায়ী হিসেবে মানুষের মাঝে দাওয়াত ও তাবলীগ, তাদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে
পরিশুদ্ধ আনায়নে তিনি তাঁর গোটা জীবন অতিবাহিত করেছেন।
এ
ছাড়া ইবাদত বন্দেগীর কঠোর শ্রমে তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছেন, সর্বক্ষণ আল্লাহর তাছবিহ-তাহলিল
ও গুনাহ মাফের জন্য তাঁর কাছে প্রার্থনা করে গেছেন এবং তিনি তাঁর উম্মতদেরকেও শিখিয়ে
দিয়েছেন। এজন্য কখনো ছুবহানাল্লাহ, কখনো আলহামদু লিল্লাহ, কখনো আল্লাহু আকবর তাঁর উম্মতদের
মাঝে সর্বদা উচ্চারিত হয়।
এ
যমীনে মু’মিন ভালো যা কিছু
করে তা তার আল্লাহরই অনুগ্রহ, তাই তার মাঝে কখনো গর্ব-অহঙ্কার কাজ করে না, সে সব সময়
বিনীত-অনুগৃহিত থাকে ও মুখে আল্লাহরই প্রশংসার বাণী উচ্চারণ করে।
শিক্ষা
: নবী মুহাম্মদ (সা)-কে শান্তনা দানের উদ্দেশ্য দু’টি সূরা (আদ দুহা
ও আলাম নাশরাহ) পাশাপাশি সময়ে অবতীর্ণ হয় এবং কুরআনে স্থান দেয়ার মাধ্যমে কিয়ামত পর্যন্ত
কুরআন অধ্যয়নকারী প্রতিটি মু’মিন এ থেকে প্রেরণা লাভ করবে। দ্বীনের
প্রতি আহবানকারী সকলের জন্য এ পৃথিবীর জীবন বড় বিপদসঙ্কুল।
যদি
মু’মিন নিষ্ঠা-আন্তরিকতা
ও আল্লাহর ওপর নির্ভরতা রেখে এগিয়ে যায় তাহলে আজকের দিনের চেয়ে আগামীকাল তার জন্য কল্যাণকর
হবে। বিপদাপদের মাঝে দ্বীনের ওপর অবিচল থাকার মত নেয়ামত আর হতে পারে না এবং সেটি লাভ
করেই ঈমানদার ধন্য হন।
‘অতীতের চেয়ে নিশ্চয়
ভালো হবে রে ভবিষ্যৎ, একদিন খুশি হবি তুই লভি তাঁর কৃপা সুমহৎ’-আল্লাহর এই প্রতিশ্রুতির
প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে মু’মিন সকল বিপদাপদকে অগ্রাহ্য করে সম্মুখপানে
এগিয়ে যায় এবং সে সত্যিই সফলকাম হয়।
হ্যাঁ,
দুনিয়ায় তাকে যতটুকু দেয়া হয় তাতেই সে সন্তুষ্ট থাকে, আখেরাতে চোখজুড়ানো নেয়ামত পেয়ে
সে মহাখুশি হয়ে যাবে এবং এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। হেদায়াতের মত নেয়ামত লাভ এবং
তাতে টিকে থাকার মত সৌভাগ্য লাভের জন্য মু’মিনের উচিৎ বেশি
বেশি করে আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও তাঁর বান্দাদের সঙ্গে সদাচরণ করা। আল্লাহপাক আমাদেরকে
তাঁর কৃতজ্ঞ বান্দাহ হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন। ০৮/০৬/২০১৭
Comments
Post a Comment