Skip to main content

যে আমল রসুল (সা) সমর্থিত নয় তা পরিত্যজ্য





আজ কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে জুমার খুতবায় সম্মানিত খতিব আলহাজ্ব মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ ও রসুল (সা)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর রবিউল আউয়াল মাসে সীরাতুন্ নবী (সা) নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, আমাদের প্রিয়তম নবী মুহাম্মদ (সা) ছিলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে সমগ্র জগৎবাসীর জন্য রহমত। তিনি কোনো বিশেষ এলাকা, গোষ্ঠী বা গোত্র বা বিশেষ সময়ের নবী ছিলেন না। তাঁর আগমনের পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত ধর্ম, বর্ণ, ভাষা সকলের জন্য নবী ও রসুল। আর কোনো নবীর আগমন ঘটবে না। শুধু মানুষ নন, সকল সৃষ্টির তিনি নবী। আল্লাহপাকের ভাষায় তিনি ছিলেন ভয় প্রদর্শনকারী ও সুসংবাদদাতা।

মুহাম্মদ (সা) ছিলেন সমগ্র সৃষ্টির সেরা, রসুলদের নেতা সাইয়্যেদুল মুরসালিন। তাঁর উম্মত হতে পারায় আমরা গর্বিত, আমরা আনন্দিত, আমরা মহাখুশি। এই আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করতে হবে অবশ্যই রসুল (সা) ও তাঁর সাহাবায়ে কেরামের পন্থানুসারে। আমাদের সমাজে যেভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা) পালিত হয় তা রসুল (সা), সাহাবায়ে কেরাম (রা), তাবেয়ী ও তাবে তাবেয়ী কোনো যুগেই ছিল না বরং রসুল (সা)-এর মৃত্যুর ৬০০ বছর পর শুরু হয়েছে। বর্তমানে বলা হচ্ছে এটিই বড় ঈদ। অথচ আমরা জানি বছরে আমাদের দুটি ঈদ রয়েছে এবং তৃতীয় কোনো ঈদ নেই। ঈদ হলে তো সেখানে নামায আছে। কিন্তু তাদের এই ঈদে কোনো নামায নেই। এটা তাদের নতুন আমল (বিদয়াত)। রসুল (সা) বলেছেন, আমার যুগ, তৎপরবর্তী যুগ, তৎপরবর্তী যুগ হলো সেরা যুগ এবং আমাদের খেয়াল করতে হবে সেরা যুগসমূহে যে আমল  প্রতিপালিত হয়নি তা নেকি মনে করে করাটাই বিদয়াত এবং তা অবশ্যই পরিত্যজ্য।

মিলাদুন্নবী বনাম সীরাতুন্নবী প্রসঙ্গে খতিব মহোদয় বলেন, মিলাদুন্নবীতে রসুল (সা)-এর জন্মবৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা করা যায় কিন্তু তাতে অনুসরণের কিছু নেই। সীরাতুন্নবী হলো রসুল (সা) জন্ম থেকে মৃত্যু ৬৩ বছরের সমগ্র জীবনই চলে আসে। সেখানে তাঁর জন্ম, বেড়ে উঠা, তাঁর আচার-আচরণ ও কর্মকান্ড সবকিছুই রয়েছে এবং সেটা আমাদের জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়। ১২ রবিউল আউয়াল আসলে যারা জুসনে জৌলুস করে আনন্দ প্রকাশ করে তাদের বোঝা উচিৎ বারই রবিউল আউয়ালে জন্ম তারিখ নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও সেই তারিখ যে তাঁর মৃত্যু তারিখ তাতে কোনো সন্দেহ নেই। রসুল (সা)-এর ইন্তেকালে সাহাবায়ে কেরাম (রা) বেহুঁশ হয়ে পড়েন। ওমর (রা)-এর মতো শক্ত মনের মানুষ বলে উঠেন, যে বলবে মুহাম্মদ (সা) মারা গেছেন আমি তাকে তরবারি দিয়ে দ্বিখন্ডিত করবো। তাহলে এটা তো শোক প্রকাশেরও দিন। রসুল (সা)-এর প্রতি দরদ ও ভালোবাসা প্রকাশের প্রকৃষ্ট পন্থা হলো তাঁকে যথাযথভাবে অনুসরণ করা এবং যে মিশন নিয়ে তিনি দুনিয়ায় এসেছিলেন সেটা বাস্তবায়ন করা। রসুল (সা)-কে কটূক্তি করার প্রেক্ষিতে জুসনে জৌলুস উদযাপনকারীদের কোনো বাদ-প্রতিবাদ করতে দেখা যায় না।

রসুল (সা)-এর জন্ম তারিখ নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও তিনি যে সোমবারে জন্মগ্রহণ করেছেন, এটা ঠিক এবং আল্লাহর রসুল (সা) শুকরিয়াস্বরূপ সোমবারে রোযা রাখতেন। জিলাপী/মিষ্টি খেয়ে আনন্দ-উল্লাসের মধ্যে কোনো রসুলপ্রেম নেই বরং সুন্নাত মনে করে সোমবারে রোযা রাখার মধ্যে রয়েছে ছওয়াব। তিনি তাঁর মুছল্লিদেরকে আবেগ পরিহার করে জানা-বোঝার মধ্য দিয়ে আমল  করা এবং বিশেষ একটি দিন নয় সারা বছর রসুল (সা)-এর সীরাত আলোচনা ও অনুসরণের আহবান জানান। সংক্ষেপিত।

[নামায শেষে তিনি সামষ্টিক মোনাজাত না করে ব্যক্তিগতভাবে করার জন্য বলেন। ইনশা-আল্লাহ এ বিদয়াতও দূর হবে।]

Comments