Skip to main content

রাইনখোলা জামে মসজিদে জুমার খুতবায় খতিব মহোদয় যা বলেন-

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
১২ জুন ২০১৫।
রাইনখোলা জামে মসজিদের খতিব মুহতারাম মুফতি মো. শাহ্ আলম নূর জুমার খুতবায় শাবান মাসের শেষ জুমায় পবিত্র রমযান মাসকে স্বাগত জানিয়ে সিয়াম, রমযান ও কুরআন নিয়ে আলোচনা করতে যেয়ে রোযা ফরজ সম্পর্কীয় কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করেন। ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি রোযা ফরজ করা হয়েছে যেমনটি করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের প্রতি, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার’।
এ আয়াতে বলা হয়েছে, যারাই নিজেদেরকে ঈমানদার বলে দাবী করবে এমন সবার প্রতি আল্লাহ রব্বুল আলামীন রোযা ফরজ করে দিয়েছেন এবং সাথে সাথে ইতিহাস বর্ণনা করে বলেন যে, শুধু উম্মাতে মুহাম্মদী (সা.)-এর ওপরই নয় বরং আল্লাহর পক্ষ থেকে যত শরীয়ত আসছে সকল শরীয়তে রোযা ফরজ ছিল। এর মাধ্যমে রোযা যে কোন কঠিন বিধান নয় সে ইংগিতই প্রদান করা হয়েছ। অবশ্য সংখ্যা বা নিয়ম-কানুনে পার্থক্য ছিল। আমাদেরকে শুধু রমযান মাসকে রোযার জন্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে এবং অন্যান্যদের তুলনায় আমাদের সাওয়াবেও পার্থক্য আছে। রমযান মাসেই রয়েছে লাইলাতুল কদর যার মর্যাদা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। এছাড়াও রোযায় সেহরী ও ইফতারীর প্রচলন করে আমাদের রোযা অনেকখানি সহজ করে দেয়া হয়েছে। রোযা ফরজ করা প্রসঙ্গে আল্লাহ নিজেই বলেন যে, বান্দাহর মধ্যে তাকওয়ার গুণ সৃষ্টিই এর উদ্দেশ্য। দীর্ঘ একটি মাস আল্লাহর নির্দেশক্রমে বান্দাহ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হালাল খাদ্য-সামগ্রী ও জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে নিজেকে বিরত রাখে। দুনিয়ার কেউ না দেখলেও আল্লাহ দেখছেন এ উপলব্ধিই তাকে বিরত থাকতে সাহায্য করে। আল্লাহর নিষেধের কারণে যে রোযাদার হালাল জিনিস পরিহার করে চলে সে কি করে আল্লাহর হারাম জিনিস স্পর্শ করবে। তাই তার পেট ও যৌনাঙ্গ হেফাজত করার সাথে সাথে তার চোখ, কান, হাত, পা সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে আল্লাহর নাফরমানিমূলক কাজকর্ম থেকে হেফাজত করতে হয়। যে এমনটি পারে কেবল তার রোযাই সত্যিকার রোযা হবে এবং সে তার বিনময়স্বরূপ জান্নাত লাভ করবে। আল্লাহর রসূল (সা.) বলেন-রোযাদারের দুটি আনন্দ। এক. ইফতারকালীন আনন্দ, দুই. আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আনন্দ। তিনি হাদিসে কুদসি উল্লেখ করে বলেন-‘আল্লাহ বলেন, রোযা আমার জন্য এবং আমিই তার পুরস্কার’।
রোযার দিনে প্রকাশ্য পানাহারে তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানান। শিশু, মুসাফির ও রোগাক্রান্তের জন্য রোযা না রাখার সুযোগ থাকলেও প্রকাশ্যে বিড়িটানা বা হোটেল-রেস্তোরায় পানাহার আল্লাহর সঙ্গে চরম বেয়াদবী। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে কোন অমুসলিম এমন আচরণ করেনা, বরং করে মুসলিম নামধারী কিছু ইসলামের দুশমনরা।

পবিত্র রমযান মাসকে যথাযথভাবে সম্মান প্রদর্শনের লক্ষ্যে সবাইকে প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য তিনি আহবান জানান এবং সবধরনের হারাম উপার্জন পরিহার করে হালাল উপার্জনে সন্তুষ্ট থাকার জন্য বলেন। উপার্জন হালাল না হলে কোন ইবাদতই আল্লাহর কাছে গৃহিত হবেনা। রমযান ও কুরআনকে তিনি দেহ ও রুহের সাথে তুলনা করে বলেন যে, রুহ না থাকলে দেহ মূল্যহীন। আবার রুহের বাহন হলো দেহ। দেহ ও রুহ পরস্পর সংযুক্ত। তেমনি রমযান ও কুরআন পরস্পর সংযুক্ত। কুরআনকে মানার যোগ্যতা তৈরী করে রমযান। এ প্রসঙ্গে পরবর্তি জুমায় আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি আলোচনা সমাপ্ত করেন।

Comments