Skip to main content

আব্বার অসিয়তের অংশবিশেষ

আব্বার শরীরটা মোটেই ভালো যাচ্ছে না। ঈদ ও বিয়ে উপলক্ষে বাড়ীতে সবাই যাওয়াতে উনি একটু ভালো বোধ করছিলেন। গতকাল বাড়ী থেকে সবাই বিদায় গ্রহণ করেছে। এখন রয়েছে মাত্র আতিক ও আকিব। আকিব অবশ্য আব্বার খুব পছন্দ। রায়হানও একটু শক্তিমান ও লম্বা-চওড়া বলে আব্বা রায়হানের ওপর বেশ ভরসা পান। রায়হানও ২/১ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাবে। আতিক ২/১দিন হয়তো থাকতে পারে। আকিবকেই তার দাদাকে একটু সময় দিতে হবে। তিনি একটু ভালো বোধ করলে হুইল চেয়ারে বাইরে যেতে চান। মৃত্যু ভাবনা এবং মৃত্যু পরবর্তি জীবনে কী হবে?- এ সব নিয়ে তিনি খুব চিন্তা করেন।
আমাকে ডেকে নিয়ে কাছে বসিয়ে জানালেন ‌'আমি যেন তাঁর জানাযা পড়াই। আমি ছাড়া আর যারা দূর-দূরান্তে থাকে মৃত্যু সংবাদ শুনে তাদের কারো আসার দরকার নেই। স্ব-স্ব স্থান থেকে সবাই যেন দোয়া করেন।' লাশ দেখতে আসা তাঁর মতে একটি অযৌক্তিক কাজ এবং অহেতুক কষ্ট করা। এতে কোন কল্যাণ নেই। এছাড়া মাইকিং করা এবং দাফন-কাফনে কোন ধরনের আড়ম্বর তাঁর পছন্দ নয়। কাফনে সাধারণ (অল্প দামে) কাপড় ব্যবহার করার তাগিদ। কোন খানা-পিনার ব্যবস্থাও তিনি অপছন্দ করেন না। তিনি যা অপছন্দ করেন আমরা চেষ্টা করবো তা থেকে বিরত থাকতে।
আমি মনে করছি আব্বার জীবদ্দশায় তাঁর হাত খরচের জন্য আমরা যা বর্তমান দিচ্ছি তাঁর অবর্তমানে ছোট ভাইদের সাথে পরামর্শক্রমে তাঁর পক্ষ থেকে ফি সাবিলিল্লাহ দিতে থাকবো আল্লাহতায়ালা যতদিন আমাদের তাওফিক দেন। এ ছাড়াও তাঁর পছন্দনীয় কাজ ও অছিয়ত পূরণ করার চেষ্টা করবো ইনশা-আল্লাহ। তাঁর পছন্দের তালিকায় রয়েছে ইসলামী সংগঠন ও বাহাদুরপুর ইসলামী সমাজকল্যাণ পরিষদ। আমি অবশ্য আব্বাকে জানিয়েছি 'আপনার আগে আমিও তো মারা যেতে পারি'উনি জবাবে বলেছিলেন 'এটা আমার অছিয়ত।'
হে আল্লাহ! তুমি আমার আব্বা ও আম্মাকে সুস্থতা দাও এবং মৃত্যুর সময় আমাদের সবাইকে মুসলমান অবস্থায় মৃত্যু দিও। আমীন।

প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালীর ১৩/১০/২০১৪ তারিখ ফেস বুক থেকে নেয়া।

Comments